'গাড়িতে একা থাকলেও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক', অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের এই নির্দেশকে তুলোধনা দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের। গাড়িতে একা থাকলেও মাস্ক পরতেই হবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছিল দিল্লির সরকার। সরকারের এই নির্দেশকে "অযৌক্তিক" বলেও মন্তব্য করেছেন দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। কেন এখনও এই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়নি এদিন তা জানতে চেয়েছে আদালত। যদিও আগে দিল্লি হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ সরকারের এই নির্দেশিকা বহাল রেখেছিল।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ব্যক্তিগত গাড়িতে মাস্ক না পরায় ৫০০ টাকা জরিমানা আরোপকে চ্যালেঞ্জ করে চারটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল দিল্লি হাইকোর্টে। এখন দিল্লিতে সেই জরিমানা বেড়ে ২ হাজার টাকা হয়েছে। সিনিয়র আইনজীবী রাহুল মেহরা এদিন আদালতের সামনে দিল্লির সরকারের আদেশটি উল্লেখ করার পরে জানান, যে এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করা দরকার। মেহরাকে আদালত মনে করিয়ে দেয় যে এটি একটি সরকারি আদেশ। সিঙ্গল বেঞ্চ গত বছরে সেই আদেশ বহালও রেখেছিল।
একা গাড়িতে থাকলেও মাস্ক পরা নিয়ে কেজরি সরকারের ওই নির্দেশ ভুলও হতে পারে বলে মন্তব্য করে বসেন সরকারি আইনজীবী। এরপরেই ডিভিশন বেঞ্চর বিচারপতি বিপিন সঙ্ঘ ও বিচারপতি গুরমিত সিং বলেন, ''এটা তো দিল্লির সরকারের নির্দেশ। কেন আপনারা এটা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন না।'' ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা এদিন আরও বলেন, ''এটা আসলে অযৌক্তিক একটা ব্যাপার। আপনি আপনার নিজের গাড়িতে একাই বসে আছেন। অথচ আপনাকে মাস্ক পরে বসে থাকতে হবে?''
আরও পড়ুন- কেরলে দৈনিক আক্রান্তের ৬০ শতাংশেরই সম্পূর্ণ টিকাকরণ, তথ্য ঘিরে উদ্বেগ
একা গাড়িতে থাকলেও মাস্ক পরা বাধ্যতমূলক করা নিয়ে গত বছর দিল্লি হাইকোর্টে মামলার শুনানি হয়। গত বছরের এপ্রিলে এই মামলার রায় দেন বিচারপতি প্রতিভা এম সিং। এব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্তকেই বহাল রেখেছিলেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, ''একজন ব্যক্তি গাড়িতে ভ্রমণ করছেন। তিনি গাড়িতে একা থাকলেও, বিভিন্ন উপায়ে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসতেই পারেন।''
এপ্রসঙ্গে বিচারপতি সিং আরও বলেছিলেন, "কোনও ব্যক্তি গাড়িতে ঢোকার আগে বাজার বা কর্মক্ষেত্র বা হাসপাতাল বা কোনও জনবহুল রাস্তায় যেতে পারেন। এমনকী গাড়িতে হাওয়া চলাচলের জন্য জানলা খুলে রাখারও প্রয়োজন হতে পারে। গাড়িটিকে একটি ট্রাফিক সিগন্যালে থামাতেও হতে পারে। সেই সময় কোনও ব্যক্তি জানলা দিয়ে বাইরে থেকে যে কোনও জিনিস কিনতে পারেন। এইভাবে রাস্তার পাশে থাকা বিক্রেতার সংস্পর্শে আসতে পারেন গাড়িতে থাকা ব্যক্তিও।'' এই যুক্তিগুলি তুলে ধরেই গত বছর দিল্লি সরকারের নির্দেশ বহাল রেখেছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। যদিও ডিভিশন বেঞ্চ গাড়িতে মাস্ক পরা নিয়ে কেজরি সরকারের সেই নির্দেশই 'অযৌক্তিক' বলে মন্তব্য করল।
Read story in English