ভারতের সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের উপর ইজরাইয়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করে নজরদারি চালাচ্ছে অপারেটররা, ফেসবুকের মালিকানাধীন মেসেজিং পরিষেবা হোয়াটসঅ্যাপ দ্বারা এমন বিবৃতি প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসল কেন্দ্রীয় তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রক। বিষয়টির গুরুত্ব এবং বিস্তারিত তথ্য হোয়াটসঅ্যাপের কাছে জানতে চেয়েছে ভারত সরকার, এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া চেয়ে হোয়াটসঅ্যাপকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। ৪ নভেম্বরের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপকে সেই চিঠির উত্তর দিতে বলা হয়েছে তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, হোয়াটসঅ্যাপে ভারতের নাগরিকদের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের বিষয়ে সরকার যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। লক্ষ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকের গোপনীয়তা রক্ষা লঙ্ঘন এবং তাঁর বিস্তারিত তথ্যর ব্যাখ্যা দিতে বলেছি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এও বলেন যে সরকার সমস্ত ভারতীয় নাগরিকের গোপনীয়তা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন, জম্মু-কাশ্মীর ভাগ ‘বেআইনি’, সুর চড়াল চিন
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর একটি আদালতে দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে হোয়াটসঅ্যাপের অভিযোগ, ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও গ্রুপ টেকনলজিস পেগাসাস নামক একটি স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে ১,৪০০ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর তথ্য হ্যাক করেছে। হোয়াটসঅ্যাপ-এর এক মুখপাত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বলেন, “ভারতের কোন কোন ব্যক্তিদের নিশানায় রাখা হয়েছে, তাঁদের পরিচয় এবং ফোন নম্বর আমাদের পক্ষে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে হোয়াটসঅ্যাপ সেই সমস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের সতর্ক করে দিয়েছে।”
হোয়াটসঅ্যাপ-এর ওই মুখপাত্র আরও বলেন, “যে সব ভারতীয় সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীদের উপর নজরদারি চালানো হয়েছে, তাঁদের পরিচয় এবং সঠিক নম্বর প্রকাশ করতে না পারলেও, আমরা এটা বলতে পারি যে এই নম্বরগুলি খুব সাধারণ কারও নয়।”
জানা গিয়েছে, ভারতে বহু শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, দলিত কর্মী ও সাংবাদিকদের নিশানা করা হয়েছিল। হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েও দিয়েছিল যে অত্যাধুনিক নজরদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে তাঁদের উপর মে মাস পর্যন্ত নজর রাখা হয়েছিল। এনএসও গ্রুপ এবং কিউ সাইবার টেকনোলজিসের বিরুদ্ধে দায়ের এক মামলায় হোয়াটসঅ্যাপ অভিযোগ করেছে, এই সংস্থাগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যালিফোর্নিয়ার আইন এবং হোয়াটসঅ্যাপের পরিষেবার শর্তাবলী লঙ্ঘন করে এই ধরণের কাজকর্ম করেছে। বলা হচ্ছে, স্মার্ট ফোনে মিসড কলের মাধ্যমে এই স্পাইওয়্যার প্রবেশ করানো হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও ভিডিও লিঙ্কে ক্লিক করলেও এই স্পাইওয়্যার ফোনে প্রবেশ করতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।
Modi Govt caught snooping!
Appalling but not Surprising!After all, BJP Govt-
1. Fought against our right to privacy.
2. Set up a multi crore Surveillance Structure until stopped by SC.
S.C must take immediate cognisance & issue notice to BJP Govt.
1/2https://t.co/VFVlEA187E— Randeep Singh Surjewala (@rssurjewala) October 31, 2019
অন্যদিকে, এই ঘটনায় নরেন্দ্র মোদীর সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, মোদী সরকার নজরদারি করতে গিয়ে ধরা পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের কাছে কেন্দ্রকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানিয়েছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, “যে সরকার সাংবাদিক, কর্মী, বিরোধী নেতাদের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করে এবং নিজের দেশের নাগরিকদের প্রতি অপরাধীদের মতো আচরণ করে, সেই সরকার আমাদের গণতন্ত্রের নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার হারিয়েছে।"
Read the full story in English