কেমন ছিল দু’দশক আগের ইউক্রেন? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক সাক্ষাতকারে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন পাঞ্জাবের আপ বিধায়ক ডাঃ আমনদীপ কৌর অরোরা। ২০০৮ সালে ইউক্রেনের ডাক্তারি পড়া শেষ করা দেশে ফিরে এসে ডাঃ অরোরা এফএমজিই পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। এবং দেশেই চিকিৎসক হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। শুধুমাত্র তিনি একা নন, তার স্বামী এবং ভাই বোনেরাও ইউক্রেন থেকে ডাক্তারি পাশ করেছেন।
তার স্বামী ডাঃ রাকেশ অরোরা বর্তমানে একটি সরকারি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত। মিস্টার আরোরা লুহানস্ক স্টেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার মেডিকেল কোর্স সম্পূর্ণ করেছেন। ডাঃ আমনদীপ কৌর অরোরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, “ভারতে সে সময় বেশিরভাগ কলেজেই র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটত। কিন্তু ইউক্রেনে তেমন কিছু ছিল না। খুব শান্তির একটা দেশ। অনেক ভাল স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে ইউক্রেনের সঙ্গে। একটা স্বপ্নের মত দেশ ইউক্রেন, সাজানো গোছানো। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, সেদেশে পড়ার খরচ ভারতের তুলনায় অনেক কম। এবং প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় সেদেশে মেডিকেল পড়তে যেতেন”।
কেন ছেলেমেয়েয়া ইউক্রেনে মেডিকেল পড়তে যান? উত্তরে ডাঃ আরোরা জানালেন, ‘ভারতে সরকারি কলেজে আসন সংখ্যা খুবই কম, সেই সঙ্গে বেসরকারি কলেজগুলিতে ভর্তির জন্য ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা ডোনেশন দাবি করে। তা বহন করা সকলের পক্ষে সম্ভব হয় না। তুলনায় ইউক্রেনে পড়ার খরচ অনেকটাই কম। ভারতের প্রায় অর্ধেক’।
রাজপুরার চান্দু মাজরা গ্রামের বাসিন্দা ডাঃ আরোরা। বাবা অবসর প্রাপ্ত সেনা, মা গৃহবধূ। তিনি বলেন, “দরিদ্র পরিবারের একজন ছাত্র ভারতে ডাক্তার হওয়ার কথা ভাবতেও পারে না। ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে আমার খরচ হয়েছে ৩০ লক্ষ টাকা। সেটা ভারতে পড়লে খরচ হত ১ কোটি টাকা যা বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না, আর আমি পরিবারের একা নই। আমার ভাই বোন রয়েছে”।
আরো পড়ুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে প্রকট হচ্ছে স্বাস্থ্য সংকট, সাবধান করল WHO
ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা মেডিকেল ছাত্রদের সাহায্য করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডঃ আমনদীপ বলেছেন, “যুদ্ধ শুরু তাদের দোষ নয়। ভারত সরকারকে ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা পড়ুয়ারা যাতে তাদের ডিগ্রি সম্পূর্ণ করতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে। নাহলে এতগুলো বছরের পরিশ্রম তাদের বেকার হয়ে যাবে”। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ভারতীয় ছাত্রদের দেশে থেকে মেডিকেল পড়ার জন্য সরকারকে আসন সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে সেই সঙ্গে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ গুলির কোর্স ফির ওপরেও লাগাম টানতে হবে সরকারকে”।
ডাঃ আরোরা পাঞ্জাব নির্বাচনের আগে একটি সেনা হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন, ভোটে লড়াই করার জন্য তিনি সেই চাকরি ছেড়ে দেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন দেশের মানুষ, রাজ্যের মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদে আমি ২০১৫ সালে আপে যোগ দিই। আমি কৃতজ্ঞ মানুষ আমার দলের ওপর আস্থা রেখেছে, আমাকে ভরসা করেছে। আমি সবসময় মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করে যাব”।
Read story in English