মাঝরাতে ফের বিক্ষোভ যাদবপুর ক্যাম্পাসে। গত বুধবার ইতিহাসের মেধা তালিকাকে ঘিরে তৈরি হয় জটিলতা। যাদবপুরে এ বার স্থগিত হয়ে গেল ইতিহাসে ভর্তির প্রক্রিয়া। এদিন অ্যাডমিশন কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ইতিহাসের প্রবেশিকা পরীক্ষার উত্তরপত্র ফের দেখে তবেই তারিখ ঘোষণা করা হবে। শুধু ইতিহাসই নয়, কলা বিভাগের অন্য পাঁচটি বিষয় অর্থাৎ ইংরেজি, বাংলা, তুলনামূলক সাহিত্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শনের মেধা তালিকায় এমন ভুল আছে কি না, তা বুঝতে ট্যাবুলেশন শিটও খতিয়ে দেখা হবে।
আজ, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, ইতিহাস বিভাগে ভর্তি নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইতিহাসের প্রথম মেধা তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, উচ্চ মাধ্যমিকে যেসব প্রার্থী ৮৫-৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন, তাঁদের কেউ প্রবেশিকা পরীক্ষায় পেয়েছেন এক, কেউ দুই আবার কেউ শূন্য৷ ২১৬ জনের মেধা তালিকায় প্রায় অর্ধেকই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এ বিষয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। বৈঠকের পর আবার একটি মেধা তালিকা প্রকাশ করেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়, দেখা যায়, মেধা তালিকায় প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাওয়া নম্বর দেওয়া থাকলেও উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের কোনও উল্লেখ নেই ৷ সব মিলিয়ে, যাদবপুরের প্রবেশিকা জট এখনও বহাল। ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন কলা বিভাগের ডিন।
আরও পড়ুন: প্রবেশিকা বন্ধের সিদ্ধান্ত যাদবপুরে, বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা, মান নিয়ে আশঙ্কা শিক্ষামহলে
এর আগেই কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তে আসেন যে উচ্চমাধ্যমিক এবং প্রবেশিকায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ৫০:৫০ অনুপাতেই মেধা তালিকা প্রকাশিত হবে। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্ত্বেও কেন বোর্ডের পরীক্ষা ও প্রবেশিকার নম্বর আলাদা করে দেখানো হয়নি, এইরকম একাধিক কারণে রাতে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের দফতরে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, যে তালিকা অনুযায়ী ভর্তি নেওয়ার কথা, তার ভিত্তিতেই আজ, বৃহস্পতিবার অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে ইতিহাসেও পড়ুয়া ভর্তি করতে হবে। তবে শেষ অবধি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, ইতিহাস বিভাগে ভর্তি আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার থেকে দু’দিনে ছ’টি বিষয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তির কথা ছিল। বৃহস্পতিবার ইতিহাস, ইংরেজি, বাংলা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার তুলনামূলক সাহিত্য এবং দর্শনে ভর্তি নেওয়ার কথা।
চলতি বছর কলা বিভাগের ছ’টি বিষয়ে প্রবেশিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় যাদবপুরে। কর্তৃপক্ষ প্রবেশিকা পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলেও ছাত্র আন্দোলনের জেরে তা ফিরিয়ে আনা হয় শেষ অবধি। একাধিক পরিবর্তনের পর, শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয় পরীক্ষা। আলাদা নম্বর-সহ মেধা তালিকা প্রকাশের পরেও বিতর্ক থামেনি। ইতিহাসের মেধা তালিকায় দেখা যায়, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে আসা ২১৬ জনের নাম আছে। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ১২০ জন পেয়েছেন দশেরও কম নম্বর!