প্রবেশিকা পরীক্ষায় স্থগিতাদেশ বাতিলের দাবিতে উপাচার্যসহ বিভাগীয় প্রধানদের টানা ১৬ ঘণ্টা ঘেরাও করে রেখেছে ছাত্রছাত্রীরা। রাতভর ঘেরাও বিক্ষোভের পরও যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য় করেননি। উপাচার্য এখনও নিজের অবস্থানে অনড়। তবে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত না বদল করলে অবস্থান চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। অন্য় দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে আজ বুধবার দুপুর ৩টের সময় জুটা বর্ধিত কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি বৈঠকে বসেছে। তবে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের একাংশের মতে, পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে ভর্তির আবেদন করা প্রায় ১৮,০০০ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
প্রায় ষোলো ঘণ্টা ধরে চলছে বিক্ষোভ।
সম্প্রতি কলা বিভাগের প্রবেশিকা পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ সরাসরি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের দাবি, "নিজের লোকেদের" বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যই প্রবেশিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে মন্ত্রী জানিয়েছেন, এটা সম্পূর্ণই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকার বিষয়ে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়ে দেয় ভর্তির ক্ষেত্রে মেধার সঙ্গে আপোস করা যাবে না। প্রবেশিকা পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণার বিরোধিতা করে সোমবার ধর্নায় বসে পড়ে ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ। ভিতরে আটকে পড়েন উপাচার্য এবং কর্মসমিতির অন্য সদস্যরা।
যাদবপুরে গত বছর ইংরেজি, তুলনামূলক সাহিত্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং দর্শনে প্রবেশিকার পাশাপাশি বাংলা এবং ইতিহাসেরও প্রবেশিকার সিদ্ধান্ত হয়। সম্প্রতি প্রবেশিকা পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। তারপর সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে অশান্ত হতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বর। শুরু হয় নতুন বিতর্ক। জানা গিয়েছে, ভর্তির আবেদনের তারিখ ২ জুলাই অবধি বাড়ানো হয়েছে। ৩ এবং ৫ জুলাই যে প্রবেশিকা হওয়ার কথা ছিল সেগুলি আপাতত পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, প্রবেশিকা নিয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে তা সম্পর্কে আইনজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও কেন হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইলেও কোন উত্তর পাচ্ছে না ছাত্র-ছাত্রীরা। ফলে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্য়ালয় ক্য়াম্পাসে।