স্বাধিকার ভঙ্গের প্রতিবাদে কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আজ কথা বললেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস, যিনি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। উপাচার্য জানিয়ে দিলেন যে প্রবেশিকা পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া নিয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার সঙ্গে তিনি একমত নন। তাঁর দাবি, উপাচার্যের পদে থাকায় কর্ম সমিতির সিদ্ধান্ত মানতে তিনি বাধ্য। এই নিয়ে আচার্য অর্থাৎ রাজ্যপালের পরামর্শের অপেক্ষায় রয়েছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন, এবং সর্বোপরি বলেছেন, তাঁর বর্তমান পদে না থাকলে হয়তো অন্য সিদ্ধান্ত নিতেন। শুধু তাই নয়, কথার আড়ালে যেন পদত্যাগের ইঙ্গিতও দেন উপাচার্য। তিনি জানান, তাঁকে আর 'বেশিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে হবে না'।
শুক্রবার ঘেরাও চলাকালীনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন উপাচার্য। শনিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। পড়ুয়াদের অভিযোগ, সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করছেন। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সুরঞ্জনবাবুর দেখা করাও উচিত হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুন: প্রবেশিকা বাতিল নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পাশে শিক্ষকরাও
কলাবিভাগে প্রবেশিকা ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন আজও অব্যাহত বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। গত ৫০ ঘণ্টা ধরে অনশনে রয়েছেন কুড়ি জন আন্দোলনকারী। বেশ কিছু বিভাগের অধ্যাপকরাও পাশে দাঁড়িয়েছেন পড়ুয়াদের। সম্প্রতি উপাচার্যকে ই-মেল করে ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ালেন দর্শন বিভাগের ১২ জন অধ্যাপক।
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ম সমিতির সম্পাদক মনোজিৎ মন্ডলের একটি ফেসবুক পোস্ট আরও উসকে দিয়েছে এই পরিস্থিতি। নিজের পোস্টে তিনি লিখেছেন, এতদিন বাংলা এবং ইংরাজি, এই দুই বিভাগে 'চৌধুরীর সাম্রাজ্য' এবং 'ঘোষ এবং কোম্পানি' আধিপত্য চালিয়ে গেছে। ইঙ্গিত স্পষ্টতই ইংরেজির দুই কিংবদন্তী প্রাক্তন অধ্যাপক এবং বর্তমান প্রফেসর এমেরিটাস, সুকান্ত ও সুপ্রিয়া চৌধুরীর দিকে, এবং বাংলার ক্ষেত্রে নিশানা হলেন কবি শঙ্খ ঘোষ এবং তাঁর অনুগামীরা। যদিও বিপরীত দিক থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, সুপ্রিয়া জানিয়েছেন, এই ধরনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেওয়ার প্রবৃত্তি নেই তাঁর।