আন্দোলন, অনশন, একের পর এক বৈঠক। প্রবেশিকা ফেরানোর দাবিতে অনড় ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। অবশেষে তাঁদের দাবি মানতে বাধ্য হলেন কর্তৃপক্ষ, যাদবপুরে ফিরছে প্রবেশিকা পরীক্ষা, এবং মার্কশিট ও অ্যাডমিশন টেস্টে সংগৃহিত নম্বরকে সমান মান্যতা দেওয়া হবে। পাশাপাশি, যেসব শিক্ষক ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে গিয়ছিলেন, তাঁদের ফেরার আবেদন জানানো হলো। মঙ্গলবার এমনটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কর্মসমিতির বৈঠকে।
তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া পরই পদত্যাগের কথা জানিয়ে দিলেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। একই সঙ্গে পদত্যাগ করছেন সহ উপাচার্য প্রদীপ কুমার ঘোষ। আজ, অর্থাৎ বুধবার, আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির সঙ্গে দেখা করে রাজভবনে নিজেদের পদত্যাগ-পত্র জমা দেবেন উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্য। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সুরঞ্জনবাবু বলেন, "আমার পক্ষে এই বিশ্ববিদ্যালয় চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে, সেই কারণেই আমরা আচার্যকে চিঠি জমা দেব।"
আরও পড়ুন: চেয়ারে না থাকলে হয়তো অন্য সিদ্ধান্ত নিতাম: উপাচার্য সুরঞ্জন দাস
স্বাধিকার ভঙ্গের প্রতিবাদে কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সুরঞ্জনবাবু। জানিয়েছিলেন, আর বেশিদিন তাঁকে দেখতে হবে না। তবে এত কিছুর পরও নিশ্চিন্ত নন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। যতক্ষণ না প্রবেশিকা সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাঁরা জানতে পারছেন, ততক্ষণ নিজেদের আংশিক ভাবেই জয়ী মনে করছেন তাঁরা। পড়ুয়াদের এর পরের পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়েও আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি তাদের ছিল না। তাই তাঁর পদত্যাগ করার সঙ্গে আন্দোলনের কোনও যোগাযোগ নেই। আপাতত স্বাধিকারের আংশিক জয় মিললেও অনশন উঠছে না বলেই জানিয়েছেন পড়ুয়ারা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ঘেরাও চলাকালীনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন উপাচার্য। শনিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। অভিযোগ ওঠে, সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করছেন। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সুরঞ্জনবাবুর দেখা করাও উচিত হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ান অধ্যাপকদের একাংশ। তবে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করে উপাচার্য স্পষ্টই জানিয়েছিলেন তিনি স্বাধিকার চালু রাখার পক্ষে। যদিও উপাচার্যের পদত্যাগের সিদ্ধান্তে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ।