সময় যত এগোচ্ছে, ততই যেন দেশে শক্তিবৃদ্ধি করছে নাগরিকপঞ্জি বিরোধী সুর। দেশব্যাপী জাতীয় নাগরিক নিবন্ধকের (এনআরসি) বিরোধীতায় যখন সরব দেশের বিজেপি বিরোধী শক্তি, সেই আবহেই বিরোধীদের পাল্লা ভারী করে মোদীর-শাহর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগন মোহন রেড্ডি। সোমবারই তিনি বলেন যে রাজ্যে এনআরসি কার্যকর হবে না। প্রসঙ্গত, এনআরসি বিরোধিতায় প্রথম থেকেই সরব ছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে মমতার সুরেই সুর মেলান রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এবং ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস সরকার। দুই রাজ্যেই যে নতুন নাগরিকত্ব আইন এবং প্রস্তাবিত এনআরসি তাদের প্রয়োগ করা হবে না, এমনটাই জানিয়ে দেন এই দুই রাজ্যের প্রধান।
আরও পড়ুন: বিজেপি বিরোধী শক্তিদের একজোট হয়ে দেশ বাঁচানোর আর্জি মমতার
সোমবারই নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্ত হয়েছে ঝাড়খণ্ডে। সে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করতে চলেছেন শিবু সোরেন-পুত্র হেমন্ত সোরেন। তিনিও এই নাগরিকপঞ্জি বিরুদ্ধেই সুর তোলেন। বিজেপি বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পাঞ্জাবের অমরিন্দর সিং, ছত্তিশগড়ের ভূপেশ বাঘেল এবং কেরালার পিনারাই বিজয়ন ইতিমধ্যে সিএবি এবং এনআরসি উভয়ের বিরোধিতা করেছেন। এহেন পরিস্থিতিতে দিল্লি কংগ্রেসের উপর চাপ বাড়িয়েই অশোক গেহলট ঘোষণা করেন যে তাঁর সরকার নতুন নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি কার্যকর করবে না রাজ্যে। এমনকী তাঁর পড়শি রাজ্যে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ এনআরসি ইস্যুতে নীরব থাকলেও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরুদ্ধেই সরব হন।
আরও পড়ুন: বিজেপির মিছিলে নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে স্লোগান কম, কান ফাটলো অন্য স্লোগানে
এমনকী, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে সোচ্চার হন জেডিইউ নেতা তথা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। সিএএ-এনআরসি ইস্যুতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে একজোট হওয়ার বার্তাও দিয়েছেন এই নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে কেন রাস্তায় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে দেখা যাচ্ছে না, সে নিয়ে সোচ্চার হলেন কিশোর। শনিবার টুইট করে তৃণমূলের ভোটকুশলী লিখেছেন, ‘‘সিএএ ও এনআরসির বিরুদ্ধে নাগরিকদের লড়াইয়ে কংগ্রেসকে দেখা যাচ্ছে না। এই আন্দোলনে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব অনুপস্থিত’’। সোনিয়া গান্ধীর ভিডিও বার্তার প্রসঙ্গ টেনে পিকে লিখেছেন, ‘‘যেসব মুখ্যমন্ত্রীরা বলছেন তাঁদের রাজ্যে এনআরসি লাগু করতে দেবেন না, তাঁদের সঙ্গে সমস্ত কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীদের একত্রিত করতে পারে কংগ্রেস, তা না করলে এই বক্তব্য (সোনিয়া গন্ধীর ভিডিও বার্তা) ভিত্তিহীন’’।
তবে নির্বাচনে জয়লাভের পর রাঁচিতে হেমন্ত সোরেন বলেন যে তিনি বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নিয়ে সিএএ এবং এনআরসি বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-কে শিবু সোরেন পুত্র বলেন, “বিমুদ্রাকরণের সময় মানুষ লাইনে দাঁড়াতে বাদ্য হইয়েছিল। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য লোকেরা দলিলপত্র নিয়ে লাইনে দাঁড়াবে কি না তা প্রশ্নের মুখেই রয়েছে।"