Advertisment

জয়গাঁ সোনা পাচার বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়

উত্তরবঙ্গকে পাখির চোখ করে শুরু হয়েছে সোনা পাচারের রমরমা কারবার। অভিযোগ, তাতে মদত দিচ্ছে সীমান্তবর্তী এলাকার পুলিশকর্মী থেকে সেনা কর্মীরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
gold, সোনা

সোনা পাচারের গ্রিন করিডোর শিলিগুড়ি (ফাইল ছবি)।

সোনা পাচারের গ্রিন করিডর হয়ে উঠেছে উত্তরবঙ্গ। চিন সহ মিজোরাম, আইজল থেকেও বিপুল পরিমাণ সোনা ভুটান ও উত্তরবঙ্গের জয়গাঁও, আলিপুরদুয়ার হয়ে শিলিগুড়ির উপর দিয়ে পাচার হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। গত ছ মাসের সরকারি পরিসংখ্যান অন্তত এমনটাই বলছে।

Advertisment

বিগত ছ মাসে শিলিগুড়ি ও তার সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০০ কেজিরও বেশি সোনা উদ্ধার করেছে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর (ডি আর আই)। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪০-এরও বেশি পাচারকারীকে। মূলত জয়গাঁও এবং শিলিগুড়িকে করিডর করেই করে মুনাফা লুটছে একদল অসাধু। আর তাতেই টনক নড়েছে প্রশাসনের।

পাচার হওয়া সোনা উদ্ধার করে তা আত্মসাতের অভিযোগে শনিবার আলিপুরদুয়ার জেলায় গ্রেফতার হয়েছে তিন পুলিশ আধিকারিক সহ এক সেনা কর্তা ও এক সেনা জওয়ান। ধৃতরা হল জয়গাঁর এসডিপিও অনিরুদ্ধ ঠাকুর, হাসিমারা থানার প্রাক্তন ওসি কমলেন্দ্র নারায়ণ, হাসিমারা পুলিশ ফাঁড়ির সেকেন্ড অফিসার এসআই সত্যেন্দ্রনাথ রায়, হাসিমারা সেনা ছাউনির গোয়েন্দা বিভাগের লেফটেন্যান্ট কর্নেল পবন ব্রক্ষ্ম, সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের কনস্টেবল দশরথ সিং। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গনেশ বিশ্বাসের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে। তাদের হেপাজত থেকে ১০কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রিভেনশন অফ করাপশন অ্যাক্ট এবং সিআরপিসির একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। আদালত ধৃতদের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি উত্তরবঙ্গ।

সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে আলিপুরদুয়ার জেলার তিন পুলিশকর্মী এবং দুই সেনা কর্মীর বিরুদ্ধে একটি রিপোর্ট নবান্নে যায়। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে দেখা যায় এলাকায় পাচারের উদ্দেশ্যে উদ্ধার হওয়া সোনা আত্মসাৎ করে দিয়েছে ওই পুলিশ কর্মী ও সেনা কর্মীরা। এর পরই শুরু হয় প্রমাণ খোঁজার কাজ। প্রমাণ হাতে পেতেই শুক্রবার রাত থেকেই তৎপরতা শুরু হয় আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশে। রাতেই আলিপুরদুয়ার পৌঁছান উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার। ওই রাতেই আটক করে নিয়ে আসা হয় তিন পুলিশকর্মী ও সেনা কর্মীকে। টানা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর শনিবার গ্রেফতার করা হয় তাদের। তাদেরই একজনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ১০ কেজি সোনা।এরপরেই ঘটনার তদন্ত ভার যায় সিআইডির হাতে।

তদন্তে নেমে সিআইডি আধিকারিকেরা জানতে পারেন, মূলত উত্তরবঙ্গকে পাখির চোখ করে শুরু হয়েছে সোনা পাচারের রমরমা কারবার। আর তাতে মদত দিচ্ছে সীমান্তবর্তী এলাকার পুলিশকর্মী থেকে সেনা কর্মীরা। চিন, মিজোরাম, আইজল এলাকা থেকে সোনার বিস্কুট, সোনার বাট পাচার হয়ে আসছে ভূটানে। এরপর সেখান থেকে তা হাতবদল হয়ে ক্যারিয়ার এর মাধ্যমে আসছে জয়গাঁতে। সেখান থেকে অন্য ক্যারিয়ারের মাধ্যমে কলকাতা এবং রাজ্যের অন্যত্র পাচার করা হচ্ছে এই সোনা। পাশাপাশি ভিন রাজ্যেও এই সোনা যাচ্ছে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা কর্তারা। উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার বলেন,"গোটা ঘটনার তদন্তভার দেয়া হয়েছে সিআইডির হাতে, এখন তারাই তদন্ত করে দেখবে। এই বিষয়ে পুলিশের কোন কিছু বলার নেই।"

Gold smuggling
Advertisment