কানাডার সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে দু’দেশের সম্পর্কের বিষয়ে একটি সুখবর সামনে আসছে। জানা গিয়েছে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে 'গোপন' বৈঠক করেছেন কানাডার বিদেশমন্ত্রী মেলানিয়া জোলি। তবে দুই দেশের তরফ থেকে এখনও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জয়শঙ্কর এবং কানাডার বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলির মধ্যে এই বৈঠক হয়েছে। ভারতে নিযুক্ত কানাডার কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ভারতের দেওয়া ১০ অক্টোবরের সময়সীমা শেষ হলেও ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে কানাডার কূটনীতিকরা এখনও ভারতে রয়েছেন কারণ ভারত ও কানাডার মধ্যে অভ্যন্তরীণ আলোচনা চলছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পর কানাডা সরকার ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে।সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে ওয়াশিংটনে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে জোলির গোপন বৈঠক হয়েছিল। এ বিষয়ে আমরা কানাডার বিদেশ মন্ত্রকের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক সংক্রান্ত ভিয়েনা কনভেনশনের উদ্ধৃতি দিয়েছে। দুই দেশের কূটনীতিকের সংখ্যা সমান হওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন ভারত। ভারত বলেছে ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে এটি প্রাসঙ্গিক। কিন্তু, কানাডা এই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে যে ভারত ভিয়েনা কনভেনশনের ভুল ব্যাখ্যা করছে।
১৮ সেপ্টেম্বর, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারত সরকারকে খালিস্তানি সন্ত্রাসী নিজ্জার হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছিলেন। এরপর এক ভারতীয় কূটনীতিককেও বহিষ্কার করেন তিনি। কানাডার এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ভারতও কানাডার এক কূটনীতিককে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয়। এর পর ভারত কানাডার নাগরিকদের ভিসা পরিষেবাও বন্ধ করে দেয়।
মাত্র কয়েক দিন পরে, ভারত কানাডাকে তার ৪১ জন কূটনীতিককে ফিরিয়ে নিতে বলেছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই কূটনীতিকদের ভারত ছাড়ার জন্য ১০ অক্টোবরের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী নিজ্জার হত্যা নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে এই ৪১ জন কূটনীতিকের মধ্যে যারা সময়সীমার পরে ভারতে থাকবেন, তাদের জন্য যে ছাড় এবং অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার কথা তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৩২ কানাডিয়ান কূটনীতিক ভারতে কাজ করেন।
এর পরে, ৩ অক্টোবর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছিলেন যে তিনি ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়াতে চান না। তিনি দুই দেশের সম্পর্ককে বর্তমানে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বলে বর্ণনা করেছেন।
একই সময়ে, কানাডার বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি বলেছিলেন যে তিনি কূটনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে ভারতের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলোচনা করতে চান। জোলি বলেছিলেন, 'আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কানাডার কূটনীতিকদের নিরাপত্তা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ভারতের সাথে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলোচনা চালিয়ে যাব, কারণ কূটনৈতিক বিষয়গুলি পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সবচেয়ে ভাল সমাধান করা যেতে পারে।