মার্কিন হুঁশিয়ারি ছিল, কিন্তু তাতে ভয় পায়নি দিল্লি। উল্টে পশ্চিমী দুনিয়াকে বার্তা দিয়েই শুক্রবার রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করলে এস জয়শংকর। কেন্দ্র মেনে নিয়েছে যে, 'কঠিন আন্তর্জাতিক পরিবেশে' দুই দেশের বিজেশমন্ত্রীস্তরে বৈঠক হয়েছে। ভারতের বিদেশমন্ত্রী সাফ বলেছেন যে, 'দিল্লি সবসময়ই আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে মতভেদ ও বিরোধ সমাধানের পক্ষে।'
বৈঠকে পুতিনের সহযোগী রুশ বিদেশমন্ত্রী লাভরভ বলেছেন, 'ভারত ও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে বন্ধুত্বই মূল ভিত্তি।' মার্কিন সহ পশ্চিমী সমালোচকদের ইঙ্গিত করে লাভরভ বলেছেন যে, 'আমাদের পশ্চিমী বন্ধুরা ইউক্রেনের সংকটের জন্য অর্থবহ একাধিক আন্তর্জাতিক ইস্যুর গুরুত্বকে খাটো করতে আগ্রহী।'
ইউক্রেনে রুশ আগ্রসনের নিন্দা করলেও পুতিনের দেশের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপের ভাগীদার হয়নি। দিল্লি এক্ষেত্রে জোট নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। যার প্রশংসা করছেন লাভরভ। বলেছেন, 'ভারত আমাদের অবস্থান জানে, আমরা কিছুই লুকোয়নি। কিছুতে প্রভাবিত হয়ে একতরফাভাবে নয়, ভারত বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে পদক্ষেপ ও যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা প্রশংসনীয়।' লাভরভ সাফ জানিয়েছেন যে, রাশিয়া 'বহু মেরুকৃত বিশ্বে'র পক্ষে।
বৃহস্পতিবারই দু'দিনের সফরে ভারত এসেছেন রুশ বিদেশমন্ত্রী। ইউক্রেনের উপর আগ্রাসনের পর চিনে গিয়েছিলেন সের্গেই লাভরভ। সেখানে আফগান নানা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। তবে যুদ্ধের আবহে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য এটাই তাঁর প্রথম সফর। পুতিনের মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন রুশ বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।
রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আমেরিকা সহ গোটা পশ্চিমী দুনিয়া। এই আবহে লাভরভের ভারত সফর তাৎপর্যবাহী। রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার ক্ষেত্রে দিল্লি কতটা ছাড় আদায় করতে পারে সেদিকেই নজর। অন্যদিকে, মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার জেরে ভারত-রাশিয়া পেমেন্ট সিস্টেম ডলারের বদলে রুবেলে সম্ভব কিনা তা নিশ্চিত করাই মস্কোর লক্ষ্য। এছাড়া, রাশিয়ার থেকে কেনা বিভিন্ন সামরিক সম্ভার ও ক্ষেপনাস্ত্রও যাতে ভারত দ্রুত পায় সেই বিষটিও সুনিশ্চিত করতে চায় দিল্লি।
Read in English