মস্কোয় ভারত-চিন বিদেশমন্ত্রী বৈঠকে উভয়পক্ষই পাঁচটি বিষয়ে একমত হয়েছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার দৌত্যে সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমণ হবে বলে দুই দেশই বিবৃতি দিয়ে আশা প্রকাশ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রটোকল মেনে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই ভারত-চিন।
ভারত-চিন বিদেশমন্ত্রকের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমান্ত ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে দুই বিদেশমন্ত্রী ‘খোলাখুলি ও গঠনমূলক’ আলোচনা করেছেন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহার ও উত্তেজনা হ্রাসে দুই দেশের মধ্যে পূর্বে হওয়া চুক্তির ভিত্তিতেই এগোতে হবে ও মতপার্থক্য যাতে বিরোধে পর্যবসিত না হয় তার খেয়াল রাখতে হবে। বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি কোনও দেশের পক্ষেই লাভজনক নয় বলে সহমত পোষণ করেছেন জয়শঙ্কর ও ওয়াং। উত্তেজনা প্রশমণে দুই দেশই সেনা ও কূটনৈতিকস্তরের আলোচনা, দ্রুত সেনা প্রত্যাহার, সেনা অবস্থানে পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে সহমত হয়েছে। সেই সঙ্গেই দুই পক্ষের সেনা ঘাঁটির মাঝে ব্যবধান বাড়িয়ে উত্তেজনায় লাগাম দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
ভারতের দাবি, চিনা সেনা যে ভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে, তা নিয়ে বৈঠকে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। ওই বিপুল সেনা জমায়েত ১৯৯৩ এবং ১৯৯৬ সালের দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত চুক্তিকে বিঘ্নিত করছে এবং সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি করছে। সেনা সমাবেশের প্রকৃত কোনও কারণ চিনা কর্তৃপক্ষ এখনও দেখায়নি। ভারতীয় সেনা যে সমস্ত সীমান্ত চুক্তি এবং প্রোটোকল অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলছে সেই বার্তাও গত কাল বেজিং-কে দিয়েছে নয়াদিল্লি। জয়শঙ্কর জানিয়েছেন যে, পূর্ব লাদাখের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাই সীমান্ত সমস্যা মেটাতে সময় এবং উদ্যোগ প্রয়োজন।
চিনা বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারত-চিন সম্পর্ক সংঘাতের জায়গায় এসে পৌঁছেছে। অবিলম্বে উস্কানিমূলক আচরণ, গুলি চালানো বন্ধের মধ্যে দিয়ে পরিস্থিতির বদল প্রয়োজন। অর্থাৎ উত্তেজনার জন্য ভারতকেই দায়ী করেছে চিন।
চিনের এই বক্তব্য ঘিরেই বিভ্রান্তি দানা বেঁধেছে। আদৌ নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে লালফৌজ সরবে কিনা, সরলেও কবে থেকে পদক্ষের করা হবে তা নিয়েই জল্পনা চলছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন