হাতে Gun তুলে নেবেন বলে পাকিস্তান গিয়েছিলেন, কাশ্মীরে ফিরল তাঁর গলার গান
খওয়ানদের ভয়ে আবারও সীমানা পার করেছিলেন আলতাফ আহমেদ মীর ১৯৯৫ সালে। তারপর মুজাফফরবাদে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে কোয়াসামির নামে একটি পোশাকের ব্র্যান্ড তৈরি করেন তিনি।
ইচ্ছা ছিল জঙ্গি হওয়ার। সে জন্যই কাশ্মীর ছেড়ে পাকিস্তানে পা বাড়িয়েছিলেন তিনি। তিন দশক পর Gun নয়, গানই তাঁর সঙ্গী। কোক স্টুডিওর দৌলতে মুজাফরবাদের দর্জি একটি ক্লাসিকাল গানেই মাতিয়ে দিয়েছেন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট। কিংবদন্তি কবি গোলাম আহমেদ মজুরের বিখ্যাত ক্লাসিক, “Ha Gulo পাকিস্তানের “Coke Studio Explorer” এ গেয়ে ইতিমধ্যে কাশ্মীরবাসী তো বটেই, অন্যদেরও মন জয় করেছেন আলতাফ আহমেদ মীর।
Advertisment
২২ বছর বয়সে জঙ্গি হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে অনন্তনাগের জাঙ্গলাত মান্ডি থেকে নিজের বাড়ি ছেড়ে পাকিস্তান রওনা দেন আলতাফ আহমেদ মীর। সেটা ছিল ১৯৯০ সাল।
পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকেই কম্পোজ করা হয়েছে এই লোক সঙ্গীত। ১২ জুলাই ইউটিউবে পাবলিশ হয় Coke Studio এর ইউটিউব চ্যানেলে। এই মূহুর্তে ভিডিওর ভিউ ছুঁয়েছে প্রায় ২ লাখ।
সেলাইয়ের কাজ তো ছিলই, পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই গানবাজনার প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল বলে জানিয়েছেন মীরের ভাই, জাভেদ আহমেদ। পাকিস্তানের উদ্দেশে ভিটে ছাড়ার চার বছর পর, ১৯৯৪ সালে কাশ্মীরে ফিরে আসেন মীর। তবে জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দিতে নয়। ততদিনে জঙ্গিবাদের চেহারা বদলে গেছে, এবং সরকারপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী ইখওয়ান, কাশ্মীরে, বিশেষত অনন্তনাগে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে।
ইখওয়ানদের ভয়ে আবারও সীমানা পার করেছিলেন আলতাফ আহমেদ মীর ১৯৯৫ সালে। তারপর মুজাফফরবাদে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে কোয়াসামির নামে একটি পোশাকের ব্র্যান্ড তৈরি করেন তিনি। গত বছর Coke Studio এর একটি দল পাকিস্তানে গিয়েছিল নতুন প্রতিভার খোঁজে। তখনই তাঁদের নজরে পড়ে মীর ও তাঁর ব্যান্ডের দিকে।
মীরের ব্যান্ডে তিনি ছাড়াও রয়েছেন সারেঙ্গি বাদক গুলাম মহম্মদ দার, এবং পাকিস্তানের দুটি নিজস্ব বাদ্যযন্ত্রের বাদকরা। এঁরা সকলেই কাশ্মীরেরই মানুষ।
“Coke Studio Explorer” প্রযোজনায় রয়েছেন বিখ্যাত পাকিস্তানি গায়ক আলী হামজা ও জোহাইব কাজী। এই মুহূর্তে পরিবারের লোকজন চান মীর ফিরে আসুন কাশ্মীরে। কিন্তু তা যে আর সম্ভব নয়। তাই পাকিস্তানে থেকেই নাম যশ করুক আলতাফ আহমেদ মীর।