Jammu Kashmir Terror Attack: ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে জম্মু-কাশ্মীরে বিগত কয়েক বছরে বেড়েছে সন্ত্রাসবাসী হামলার ঘটনা। একের পর এক সন্ত্রাসবাদী হামলায় মৃত্যু হয়েছে একাধিক সেনা-জওয়ানের। সামনে এসেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটিও। কেন সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে একের পর এক সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা? তা জানতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একাধিক সেনা আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছে।
২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর কাশ্মীরে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু জম্মুতে ধীরে ধীরে কমতে থাকে উত্তেজনা। এরপর ২০২০ সালে চিনের সঙ্গে বিরোধের পর পুরো ফোকাস দেওয়া হয় চিনের উপর। চিনকে আটকাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অনেক বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়। যার ফলে জম্মু থেকে প্রচুর সংখ্যায় সেনাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এবিষয়ে শীর্ষ এক সামরিক কর্তা দ্য ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'এটা নিঃসন্দেহে একটা বড় ভুল। জম্মুতে সেনা কমানোর পর সিআরপিএফ বা বিএসএফ দিয়ে সেই শূন্যতা পূরণ করার কোন চেষ্টা করা হয়নি। হয়তো আমরা তার ফল ভোগ করছি। বিগত কয়েকবছরের শান্তির কথা বিবেচনা করে আমরা জম্মু থেকে সেনা সরিয়ে নিয়েছি। তার জেরেই জম্মুতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তাদের সাপোর্ট সিস্টেম শক্তিশালী করার সুযোগ পেয়েছে। সেনাবাহিনী তার ভুল স্বীকার করেছে। এখন এটাও বলেছে এই ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়েছে'।
জম্মুতে ফের সেনা মোতায়েন বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে জম্মুতে ৩ হাজার সেনা,২ হাজারের বেশি বিএসএফ জওয়ান রয়েছে। পাশাপাশি এখন অসম রাইফেলসের দুটি ব্যাটেলিয়নকে সেখানে মোতায়েন করার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী তিন মাসে তাদের উপস্থিতি জম্মুর মাটিতে সেনাবাহিনীর নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করবে। যাইহোক সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধী ইণ্ডিয়া জোট। অনেকেই ৯০-র দশকের সঙ্গে বর্তমান সময়ের তুলনাও টানা শুরু করে দিয়েছেন।
তবে ৯০-র দশক ফিরে এসেছে এমন ধারণা মানতে নারাজ শীর্ষ এক সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন উদ্বেগ অবশ্যই বেড়েছে তবে ৯০-র দশক ফিরে এসেছে একথা বলা ভুল। আমরা বিশ্বাস করি সেনাবাহিনীকে এখন আবার তাদের নজরদারি বাড়াতে হবে। উঁচু পাহাড়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। অবশ্যই তা সময় সাপেক্ষ। তবে তাতে কিছু ধৈর্য্যের প্রয়োজন। কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
আরও পড়ুন - < Bangladesh Violence : শতাধিক মৃত্যু, অগ্নিসংযোগ, কারফিউ…! বাংলাদেশ জুড়ে অশান্তির আগুন, কেন্দ্রের বিশেষ নির্দেশ >
গত কয়েক বছরে চিন ও পাকিস্তান কাছাকাছি এসেছে তা কারুর অজানা নয়। এই প্রেক্ষাপটে সন্ত্রাসবাদী হামলার পিছনে চিনের কোন না কোন হাত থাকতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। সেই কারণেই উপত্যকা ও জম্মুতে সন্ত্রাসবাদীদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বর্তমানে কাশ্মীরে ৮০-৯০ জন সন্ত্রাসবাদী রয়েছে বলেই সেনা সূত্রে খবর। জম্মুতে ৯০-১০০ জন সন্ত্রাসবাদী সক্রিয় রয়েছে। যার মধ্যে ৫৫-৬০ জন বিদেশি বলেও জানা গিয়েছে। ৩৭০ ধারা বাতিলের পর হিংসাকে সাম্প্রদায়িক রঙ দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা করছে আততায়ীরা। এবিষয়ে এক সেনা কর্তা বলেছেন, আগে সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালানোর পর পাকিস্তানে ফিরে যেত। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালানোর পর জঙ্গলে লুকিয়ে থাকছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে খুব কম যোগাযোগ করছে। এই কারণে তাদের খুঁজে বের করাটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেনাদের কাছে।