অবলুপ্ত ৩৭০, জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে কী বলেছিলেন শেষ যুবরাজ?
"একই দেশের অংশ হওয়া মানেই পুরো ব্যবস্থা একরকম হবে, এমনটা নয়। জম্মু কাশ্মীরের ক্ষেত্রে বিষয়টির সমাধান কিন্তু অধরাই থেকে গেল। আগামী যতদিন সমাধান হবে না, ধন্দ বাড়তেই থাকবে"
"একই দেশের অংশ হওয়া মানেই পুরো ব্যবস্থা একরকম হবে, এমনটা নয়। জম্মু কাশ্মীরের ক্ষেত্রে বিষয়টির সমাধান কিন্তু অধরাই থেকে গেল। আগামী যতদিন সমাধান হবে না, ধন্দ বাড়তেই থাকবে"
সোমবার জম্মু কাশ্মীরকে বিশেষ তকমা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করল কেন্দ্র। জম্মু কাশ্মীর এবং লাদাখকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার প্রস্তাব উঠেছে রাজ্যসভায়। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যে সাড়া পড়ে গিয়েছে সারা দেশ জুড়ে। জম্মু কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে ২০১৬ সালে রাজ্যসভায় মুখ খুলেছিলেন কাশ্মীরের শেষ যুবরাজ তথা কংগ্রেস সাংসদ ডঃ করণ সিং।
Advertisment
ঠিক কী বলেছিলেন মহারাজা হরি সিং-এর পুত্র? "ম্যাজিকের মতো রাতারাতি কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে না", বছর তিনেক আগে রাজ্যসভার এক অধিবেশনে বলেছিলেন তিনি।
ডঃ করণ সিং ছিলেন জম্মু কাশ্মীরের প্রথম (৩০ মার্চ, ১৯৬৫) রাজ্যপাল। ২০১৬ সালে তিনি রাজ্যসভায় বলেন, "১৯৪৭ সালের ২৭ অক্টোবর, যে মুহূর্তে আমার বাবা কাশ্মীর সংযোজন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, সেই মুহূর্ত থেকেই এটি ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সময় আমি ওই ঘরে উপস্থিত ছিলাম। মনে রাখবেন আমার বাবা তিনটি বিষয় সংযোজিত করেছিলেন। প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ এবং বিদেশনীতি। অন্যান্য অঙ্গরাজ্য যেভাবে চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছিল, আমার বাবাও সেই একই উপায়ে করেছিলেন। বাকি সব প্রিন্সলি স্টেট বা দেশীয় রাজ্য ভারতের সঙ্গে মিশে গেল। শুধু কাশ্মীরের সংযোজন হল না",
"কিন্তু ১৯৫২ সালে শেখ আব্দুল্লাহ এবং জহরলাল নেহরুর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ১৯৫৭ সালের ২৬ জানুয়ারি আমি নিজে সংবিধানে স্বাক্ষর করি। কিন্তু তারপর থেকে ক্রমশ রাষ্ট্রপতির নির্দেশ জারি হওয়ার ঘটনা বাড়তেই থাকে। ১৯৭৫ সালে ফের শেখ আব্দুল্লাহ এবং ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে আবার এক রাজনৈতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়"।
ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে জম্মু কাশ্মীরের সম্পর্ক এবং এই রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই গিয়েছে। ভারতের অংশ এই রাজ্য, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু দেশের সঙ্গে জম্মু কাশ্মীরের সম্পর্ক কী হবে? যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রয়েছে, এরকম এক এক দেশে এক এক রকম নিয়ম রয়েছে। চিনেও একই দেশে দুটো আলাদা ব্যবস্থা জারি রয়েছে। হংকং এর জন্য নিয়ম আলাদাই। তাই একই দেশের অংশ হওয়া মানেই পুরো ব্যবস্থা একরকম হবে, এমনটা নয়। তাই জম্মু কাশ্মীরের ক্ষেত্রে বিষয়টির সমাধান কিন্তু অধরাই থেকে গেল। আগামী যতদিন সমাধান হবে না, ধন্দ বাড়তেই থাকবে"।