"যেন শরীরের উপর কেউ খোদাই করে দিচ্ছে কিছু।" জম্মু কাশ্মীরকে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে বিভাজনকে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করলেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান ফারুক আবদু্ল্লা। এনডিটিভি চ্যানেলে তিনি বলেছেন সরকার আমাদের হৃৎপিণ্ডকেও দুভাগে ভাগ করে দিল। এ ব্যাপারে প্রথম প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি, বলেন তাঁর আশা সারা দেশ কাশ্মীরের সঙ্গে রয়েছে।
"এ ভারত আমি দেখিনি। এ ভারত আমি কখনও দেখিনি। এ ভারত সকলের ভারত, হিন্দুর, মুসলমানের, শিখের, খ্রিশ্চানদের, এ ভারত সবার।"
এনডিটিভি-কে তিনি বলেন, "আমরা ছেড়ে দেব না। মৃত্যু ভগবানের হাতে। সে নিয়ে চিন্তার কী আছে! যেটা চিন্তার তা হল সাধারণ মানুষ যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। ঘরবন্দি মানুষটার হয়ত বাড়িতে ওষুধ নেই, হয়ত খাবারও নেই। সরকার বলছে আমাদের তিন মাসের রেশন আছে, তিন মাসের চিনি আছে, তিন মাসের আটা আছে, যদি একজন মানুষের কাছে টাকা থাকলেও এসব কেনার অবস্থা না থাকে, তাহলে এসব দিয়ে কী হবে!"
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, "দরজা যখন খুলবে, মানুষ যখন বেরোতে পারবে, আমরা লড়াই করব, আমরা আদালতে যাব। আমরা বন্দুক ছুড়ি না, গ্রেনেড ছুড়ি না, পাথর ছুড়ি না, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।"
দেশের প্রতি আবেগঘন আবেদনে তিনি এনডিটিভিকে বলেন, "আমরা সব অবস্থায় আপনাদের সঙ্গে থেকেছি। আমাদের আশা আপনারাও এই খারাপ পরিস্থিতিতে আমাদের সঙ্গে থাকবেন এবং প্রার্থনা করবেন যাতে এ দেশে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরে আসে।"
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে মিথ্যাবাদী বলে আখ্যা দিয়ে ফারুক আবদুল্লা জানান গতকাল রাতে তাঁকে আটক করা হয়েছে। "আমায় নিজের বাড়িতে আটক করে রাখা হয়েছে... আমার দুঃখ হয় যখন দেখি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ধরনের মিথ্যে কথা বলতে পারেন।" তিনি জানিয়েছেন কীভাবে নিরাপত্তাবাহিনী তাঁকে বাড়িতে আটকে রেখেছে। তিনি বলেন, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন আমায় আটক করা হয়নি। আমাকে আটক করার তোমরা কে!"
আজ লোকসভায় অমিত শাহ বলেছেন, "ফারুক আবদুল্লাকে গ্রেফতার বা আটক কিছুই করা হয়নি। তিনি স্বেচ্ছায় নিজের বাড়িতে রয়েছেন।" এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলে এ প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ফারুক আবদুল্লা তাঁর পাশে বসেন। আবদুল্লাকে যে সভায় দেখা যাচ্ছে না বা তাঁর কথা শোনা যাচ্ছে না সে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। তারই প্রেক্ষিতে এই জবাব দেন আবদুল্লা।
তাঁর ছেলে এবং ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লার সঙ্গে দেখা হয়েছে কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ফারুক আবদুল্লা বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় ওমরের গ্রেফতারির আগে শেষবার ছেলেকে দেখেছিলেন তিনি।
মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পর, রবিবার মাঝরাত থেকে গোটা কাশ্মীর বিচ্ছিন্ন ও আটক। ৩৭০ ধারা মোতাবেক কাশ্মীরের মিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পর সোমবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে মেহবুবা মুফতি, এমর আবদুল্লা ও পিপলস কনফারেন্স নেতা সাজ্জাদ লোনকে।
Read the Full Story in English