জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নির্ভর করছে পাকিস্তানের উপর। সীমান্তের ওপার থেকে উস্কানি বন্ধ হলেই উপত্যকায় আর বিধি-নিষেধের প্রয়োজন থাকবে না। মন্তব্য, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের। জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ আরোপ নিয়ে কৌশলে ইমরান খানের দেশের উপরই দায় চাপিয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের অগাস্টে জম্মু-কাশ্মীরে সংবিধান প্রদত্ত বিশেষ অধিকার ৩৭০ ধারা রদ করা হয়। তারপর এই প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি অজিত দোভাল। তিনি বলেন, 'আমরা চাই নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করতে। কিন্তু, নির্ভর করছে পাকিস্তানের আচরণের উপর। উপত্যকাকে অশান্ত করতে তারা প্রতিনিয়ত উস্কানি দিয়ে চলেছে।' কাশ্মীরিদের মানবাধিকার যাতে সুরক্ষিত থাকে তার জন্য ভারতের কাছে আর্জি জানায় আমেরিকা। তার প্রেক্ষিতেই এই জবাব দেন জতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: এনআরসি তালিকাছুটদের পরিচিতি নিয়ে বিভ্রান্তি আদতে রাজনৈতিক চাল
কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ ও রাজ্যটিকে দু'টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিণত করার কথা ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা দেখিয়েছেন তিনি। বলেন, 'যা অনুমান করেছিলাম কাশ্মীরের অবস্থা তার থেকে অনেক ভাল। আমি সেখানে দু'সপ্তাহ ধরে থেকে বুঝেছি উপত্যকার বেশিরভাগ মানুষই ৩৭০ ধারা রদের পক্ষে।'
একদিকে যখন ভূস্বর্গে শান্তির কথা বলছেন দোভাল, তখন জম্মু-কাশ্মীরে বন্দি করা হয়েছে দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সহ বহু রাজনৈতিক নেতা, কর্মীকে। কেন এই বৈপরত্য? জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কথায়, 'অঞ্চলকে শান্ত রাখতেই এই পদক্ষেপ। তাদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীরে রাজনৈতিক কার্যকলাপ চললে তার সুযোগ নিতে পারে জঙ্গিরা। তবে, কবে তাদের মুক্ত করা হবে তার সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য প্রশাসনই।' একই সঙ্গে তিনি যোগ করে বলেন, 'এতদিন জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের সেখানকার বাসিন্দাদের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা লক্ষ্য করা যায়নি।'
আরও পড়ুন: সংগঠনে নতুন-পুরনো বিবাদের অবসান চাইছেন দিলীপ ঘোষ
ভূস্বর্গে কেন্দ্রীয় পদক্ষেপে মানবাধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। অভিযোগ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের। সেখানকার প্রচুর বাসিন্দারাও অভিযোগ করেছেন এমনটাই। অভিযোগ উড়িয়ে, দোভাল জানাচ্ছেন, 'কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে ন্যায় বিচারের রাস্তা খোলা রয়েছে।' জম্মু-কাশ্মীরের বাস্তব পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, 'প্রায় ৯২ শতাংশ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকি অংশেও হবে। তবে, তার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া সম্ভব নয়।' কেন্দ্রের প্রধান লক্ষ্য উপত্যকায় রক্তপাত আটকানো। তাই নিয়ন্ত্রণ জারি বলে স্পষ্ট করে অজিত দোভাল।
প্রায় ২৩০ জঙ্গি কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় বলে খবর। পাকিস্তানের মদতেই এইসব চলছে বলে মনে করে ভারত। গত শুক্রবারের একটি জঙ্গি আক্রমণের কথাও উল্লেখ করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তাঁর মতে, বিজেপির কার্যক্রমেই ছিল ৩৭০ ধারা রদের বিষয়টি। এর ফলে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মনে করেন দোভাল।
Read full story in English