জম্মু ও কাশ্মীরের তদন্তকারী সংস্থা (এসআইএ) জম্মুর ডোডা জেলার তিন হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গির গতিবিধি সম্পর্কে হদিশ পেতে পাকিস্তানের একটি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, এই তিন জঙ্গির মধ্যে দু'জন প্রতিবেশী পাকিস্তানে থাকছে। সেখান থেকেই ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এদের একজন ডোডার কাশতিগড়ের বাসিন্দা আসিফ শাবির নায়েক। অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছে তার বাবা শাবির হুসেন নায়েক ওরফে খালিদ শাবিরও। অন্যজন ডোডার মারমাটের সাফদর হুসেন ওরফে এহসান। জম্মু ও কাশ্মীরের তদন্তকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই এনআইএর বিশেষ আদালতে এই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে। এই তিন জনের মধ্যে শাবির হোসেন নায়েক ও সফর হোসেন পাকিস্তানের বাসিন্দা।
এই ব্যাপারে একটি বিবৃতিতে এসআইএ বলেছে, পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকা এবং সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের সমন্বয়কারী জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের চিহ্নিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত। ডোডা ওই অঞ্চলের ওই তিন বাসিন্দার বিরুদ্ধে গত ৭ নভেম্বর থেকে তদন্ত চলেছে। ছয় মাস তদন্তের পর এই চার্জশিট পেশ করা হল। চার্জশিট অনুসারে, আসিফ শাবির নায়েককে শ্রীনগর বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে। তদন্তকারীদের অনুমান, সে পাকিস্তানে পালানোর চেষ্টা করছিল। ভারতের ছাত্র হিসেবে সে পাকিস্তানে গিয়েছিল দুই দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে যোগসূত্র গড়ে তোলার নামে। বাস্তবে পাকিস্তানে জঙ্গি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শনের জন্য ওই পড়ুয়া পাকিস্তানে গিয়েছিল। এমনই অভিযোগ রয়েছে আসিফ শাবির নায়েকের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ অনুযায়ী তাকে গ্রেফতার করে বিচার বিভাগীয় হেপাজতেও পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- এবার আরএসএসের কায়দায় উত্তরপ্রদেশের ময়দান থেকে মহল্লায় শাখা বানাবে আপ
পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকা এই জঙ্গিচক্রের মূলচক্রী শাবির হুসেন নায়েক ও তার সহযোগী সফদর হুসেন-সহ অন্য দুই অভিযুক্তকে চার্জশিটে সিআরপিসির ২৯৯ ধারায় পলাতক হিসাবে দেখানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের তদন্তকারী সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, 'তদন্তের ফলে একজনের বাবার গল্প জানা গিয়েছে। সেই বাবা আবার বেআইনিভাবে পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিল। সেখানে সৈয়দ সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত হয়ে ধীরে ধীরে সংগঠনের উচ্চপদে নিযুক্ত হয়। এমনকী, হিজবুলের প্রচার সেলের মিডিয়া উপদেষ্টাও হয়েছিল।' এনিয়ে জম্মু থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হওয়া তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, পাকিস্তানের সংস্থাগুলো বৈধভাবে ভ্রমণে যাওয়া ব্যক্তিদের পাশাপাশি, উচ্চশিক্ষার জন্য পাকিস্তানে যাওয়া ভারতীয় ছাত্রদেরও ভারতের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করছে।
Read story in English