আবারও রক্তাক্ত উপত্যকা। এবার জঙ্গি নিশানায় জম্মু কাশ্মীর পুলিশের এক কর্মী। শুক্রবার সকালে পুলওয়ামায় নিজের বাড়ির সামনে খুন হলেন পুলিশকর্মী রিয়াজ আহমেদ থোকার। গত ২৪ ঘণ্টায় এই নিয়ে ভূস্বর্গে পরপর দুটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাল জঙ্গিরা।
জম্মু কাশ্মীর পুলিশের আইজি বিজয় কুমার জানিয়েছেন, অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন জঙ্গি পুলওয়ামায় রিয়াজ আহমেদ থোকার নামে ওই পুলিশকর্মীর উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এলোপাথাড়ি গুলিতে গুরুতর জখম হন ওই পুলিশকর্মী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় এক কশ্মীরি পণ্ডিতকেও গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। কাশ্মীরের বুদগাম জেলার চাদোরার তেহসিল অফিসে কর্মরত ছিলেন রাহুল ভাট নামে ওই ব্যক্তি। অফিস চত্বরেই রাহুলকে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা।
এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং পিডিপি সভাপতি মেহবুবা মুফতি শুক্রবার সকালে পুলওয়ামায় নিহত রাহুল ভাটের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যেতে চেয়েছিলেন। তবে প্রশাসন তাঁকে সেই অনুমতি দেয়নি। পরে মেহবুবা মুফতি জানান, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের রক্ষা করতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পাশে দাঁড়াতেই তিনি বুদগামে যেতে চেয়েছিলেন।
শুক্রবার একটি টুইটে মুফতি লিখেছেন, ''কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পাশে দাঁড়াতে এবং কেন্দ্রের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বুদগাম যেতে চেয়েছিলাম। আমাদের গৃহবন্দি করা হয়েছে, কারণ কাশ্মীরি মুসলমান এবং পণ্ডিতরা একে অপরের যন্ত্রণার প্রতি সহানুভূতিশীল। তাঁদের পৈশাচিক সাম্প্রদায়িক ভাবনার সঙ্গে এই ভাবনা খাপ খায় না।''
এদিকে, গতকাল থেকেই ক্ষোভের আগুন জ্বলছে উপত্যকায়। বুদগামে কাশ্মীরি পণ্ডিতকে খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল এলাকার পরিস্থিতি। এদিন সকালে শ্রীনগর-বুদগাম হাইওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। তাঁদের রক্ষা করতে প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। তবে পুলিশ সেই বিক্ষোভ তুলতে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায়।
আরও পড়ুন- দৈনিক সংক্রমণের ওঠানামা জারি, স্বস্তি দিয়ে আরও কমল অ্যাক্টিভ কেস
পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভকারীদের। বিক্ষোভ তুলতে পুলিশি এই তৎপরতাকে 'লজ্জাজনক' বলে মন্তব্য করেছেন জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তিনি এদিন বলেন, ''কাশ্মীরের জনগণের জন্য এটি নতুন কোনও ঘটনা নয়। প্রশাসন যখন হাতুড়ির মতো হয়, তখন প্রতিটি সমস্যাই পেরেকের মতো হয়। যদি লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সরকার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের রক্ষা করতে না পারে তবে তাঁদের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে।''
Read full story in English