Advertisment

বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরাই আগে মুখোশ পরে এসেছিল: জেএনইউ উপাচার্য জগদেশ কুমার

একদিকে লোক আমাদের সমালোচনা করে যে আমরা কেন পুলিশ ডাকলাম না। অন্যদিকে আমরা যদি সরাসরি পুলিশেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বলি, তাহলেও আমাদের সমালোচনা করা হয়। আমরা যেন পাঞ্চিং ব্যাগ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
JNU

জেএনইউ উপাচার্য জগদেশ কুমার

দিল্লির জেএনইউ-তে ছাত্রছাত্রী বনাম প্রশাসন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, সে প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম জগদেশ কুমার। কথা হল ক্যাম্পাসে হিংসা, এবং নয়া সেশনের রেজিস্টার করা নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা যে বাধা দিচ্ছেন সে নিয়েও।

Advertisment

সম্প্রতি যে আপনার সম্পর্কে যা প্রকাশিত হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে দুজন জগদেশ কুমার রয়েছেন, একজন আইআইটির অধ্যাপক জগদেশ কুমার, অন্যজন জেএনইউয়ের অধ্যাপক জগদেশ কুমার। আবার শিক্ষক অধ্যাপক জগদেশ কুমার আর প্রশাসক অধ্যাপক জগদেশ কুমারকেও দুজন পৃথক মানুষ বলে মনে হয়।


সব ক্ষেত্রেই আমি ছাত্রছাত্রীদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল এবং আমার ছাত্রছাত্রীরা যাতে পেশাদার ভাবে বেড়ে উঠতে পারে, সে ব্যাপারে আমি তাদের সাহায্য করে থাকি। ফলে দুজন অধ্যাপক জগদেশ কুমারের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই।

জেএনইউ-তে তো দীর্ঘ আলোচনা ও তর্ক বিতর্কের একটা ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছে অধ্যাপক জগদেশ কুমার প্রতিষ্ঠান-বিরোধী বড় অংশের ছাত্রছাত্রীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন।

একেবারেই তা নয়। আপনি যখন বড় অংশের ছাত্রছাত্রীদের কথা বলছেন, আমার মনে হচ্ছে ৮০০০-এর বেশি বড় সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর কথা, যারা থার্ড সেমেস্টারের পরীক্ষার লেখা শেষ করতে হিমশিম খাচ্ছে, যারা উইন্টার সেশনের জন্য রেজিস্টার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কারণ স্বল্প সংখ্যক কিছু ছাত্রছাত্রী আন্দোলন করে চলেছে। জেএনইউ প্রশাসন তাদের প্রতিটি প্রস্তাব সম্পর্কে অত্যন্ত নমনীয় ভূমিকা নিয়ে সেগুলিকে বিবেচনা করে দেখা সত্ত্বেও এমনটা চলছে। আমার বিশ্বাস আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় অংশ- তা সে ছাত্রছাত্রীই হোক কী শিক্ষকশিক্ষিকা- সকলেই চান এ বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান পাক। আমি তাঁদের সঙ্গে আছি।

কিন্তু আপনার সম্পর্কে ধারণা হল, আপনি শুধু ক্যাম্পাসের আন্দোলনরত বা প্রতিষ্ঠানবিরোধী ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধেই নন, একই সঙ্গে যারা সরকারবিরোধী, তাদেরও বিরুদ্ধে। ফলে শেষ পর্যন্ত আপনি প্রতিষ্ঠানপন্থী হিসেবেই প্রতিভাত হচ্ছেন...

দেখুন, আমরা বিভিন্ন স্তরে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মোলাকাত করেছি। ওয়ার্ডেন স্তর থেকে শুরু করে, হস্টেল সেক্টর প্রোভোস্ট, ডিন অফ স্টুডেন্টস, রেক্টর এবং তারপর আমরা সবাই মিলে এই ছাত্রনেতাদের অনেকের সাথেই মিলিত হয়েছি। আমরা বোঝানোর চেষ্টা করেছি কেন হোস্টেল চার্জ বাড়ানো দরকার। ফলে, কেউ যদি বলেন আমরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় যেতে চাইছি না, বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে।

কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা যদি হোস্টেল ফি ইস্যুতে আরও দীর্ঘ, ধরুন আরও দুই সেমেস্টার দেরি করতে চায়, তাহলে আরও আলোচনা নয় কেন?

আমরা আলাপ আলোচনার জন্য ৬ সেমেস্টার দিয়েছিলাম। হোস্টেল চার্জ বাড়ানোর কথা প্রথম ওঠে ২০১৬ সালে। হস্টেলের খরচ দেখভাল করার ব্যাপারে সেমস্ত দিক খতিয়ে দেখার জন্য প্রথম কমিটি গঠিত হয় ২০১৬ সালে। বিভিন্ন স্তরে, হস্টেল সেক্টরের মঘ্যেই বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেএনইউ ওয়েবসাইটে ছাত্রছাত্রীদের পরামর্শের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। তিন থেকে চার সপ্তাহ সেটা রাখা হয়েছিল। এর পর বিষয়টি ইন্টার-হল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বৈঠকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সে কমিটিতে ১৮ জন হস্টেল প্রেসিডেন্ট, ১৮ জন ওয়ার্ডেন, অ্যাসোসিয়েট ডিন এবং জিন অফ স্টুডেন্টস রয়েছেন। ফলে গোটা বিষয়টাই খুবই স্বচ্ছ ও খোলামেলা। এবং জেএনইউ-য়ের খোলামেলা আলোচনা ও বিতর্কের যে ঐতিহ্য তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণও। ফলে আমি বুঝতে পারছি না কেন হঠাৎ এ ইস্যু আলোচ্য হয়ে উঠল। একেবারেই বোধগম্য হচ্ছে না।

কিন্তু এ ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন ছাত্র গোষ্ঠী বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। সব মিলিয়ে জেএনইউয়ের ভিসি একেক ছাত্রগোষ্ঠীর প্রতি একেক রকম মনোভাব দেখান, এরকমটাই মনে হচ্ছে।

আমার তাছে সব ছাত্রছাত্রীরাই সমান। সমস্ত ফ্যাকাল্টি মেম্বাররাও সমান। একজন প্রশাসক হিসেবে, আমি ছাত্রছাত্রী বা শিক্ষকশিক্ষিকাদের মধ্যে শিবির বিভাজন করিনা। যারা ইউনিভার্সিটির অ্যাকাডেমিক উন্নয়ন চায়, আমি তাদের পক্ষে। যাদের কাজ কর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আমি তাদের একেবারেই পক্ষে নই। আমি অত্যন্ত খুশি যে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী উন্নয়নের পক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যতের পক্ষে।

আপনি বিষয়টাকে দুভাগে ভাগ করছেন। একদল যারা অ্যাকাডেমিক কাজকর্মে অংশগ্রহণ করতে চায়, আর একদল- যারা তাতে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু সোশাস সায়েন্সের ফ্রেম থেকে একে বাম বনাম দক্ষিণ দ্বন্দ্ব হিসেবেও দেখা হবে। সে দিক থেকে দেখলে আপনি বাম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বলেই মনে হচ্ছে।

আমি সর্বদাই বিশ্বাস করি য়ে কিছু বিষয়ে ধর্না বা আন্দোলন আমাদের য়ে কোনও ছাত্রছাত্রীর মৌলিক অধিকার। এরকম ধর্নার জন্য আমরা একটা নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির করে গিয়েছিষ আমি সব সময়েই বলে এসেছি যে অন্য ছাত্রছাত্রীদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা যাবে না। অন্য ছাত্রছাত্রীরা পড়োশোনা চালিয়ে যাবে। তারা নিজেদের কাজে এক্সেল করতে চায়। নিজেদের ক্লাস কীভাবে বন্ধ করা যায়, কীভাবে সেখানো ডোকা, ল্যাবে ঢোকা, লেকচার হলে ঢুকতে বাধা দেওয়া যায়। আমার মনে হয়, তাহলে ব্যাপারটা সভ্য পদ্ধতির বিক্ষোভ ছাকে না। আমি সে কারণেই ছাত্রছাত্রীদের বলেছি, আমি বিক্ষোভে সুরক্ষাকবচ দেব কিন্তু অন্য ছাত্রছাত্রীদের জীবনযাপন ব্যাহত করার রক্ষাকবচ আমি দেব না।

Jagdesh Kumar JNU ক্যাম্পাসে জগদেশ কুমার

বাইরে থেকে দেখলে অধ্যাপক কুমারকে পক্ষাবলম্বীর মত দেখাচ্ছে। আপনার প্রেস বিবৃতিতে দেখা যাচ্ছে আপনি পেরিয়ার হস্টেলের হিংসার উপর জোর দিচ্ছেন, কিন্তু সবরমতী হোস্টেলের হিংসা ফুটনোটের মত দেখা যাচ্ছে সেখানে। মনে হচ্ছে একদল ছাত্রছাত্রীর যন্ত্রণা সম্পর্কে জগদেশ কুমার যতটা ওয়াকিফহাল, অন্যদের সম্পর্কে ততটা নন।

আমি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময়ে কোনও হোস্টেলের নাম নিইনি। যেখানে যেখানে হিংসা হয়েছে, সেই হোস্টেল সেক্টরের ব্যাপারে কথা বলেছি আমি। হ্যাঁ, শুরুতে সিকিউরিটি গার্ডরা পেরিয়ার হস্টেলে গিয়েছিল, পরে অন্য হস্টেলে যায়। ঘটনাপ্রবাহ সেরকম ভাবেই ঘটেছিল। কিন্তু আমাদের কাছে, যদি হিংসা ঘটে, যদি আমাদের ছাত্রছাত্রীরা আহত হয়, আমাদের হৃদয় তাদের জন্য কাঁদে। আমি সবসময়েই বলে এসেছি, আমাদের ক্ষোভের উত্তর আমরা হিংসার মধ্যে দিয়ে পাব না। আমাদের আলোচনায় বসে সমস্যা মেটাতে হবে।

কিন্তু উপাচার্য আহত ছাত্রছাত্রীদের দেখতে গেলেন না।


দেখুন, ছাত্রছাত্রীরা আহত হলে প্রথম কাজ হল তাদের সাহায্যের ব্যাপারটা নিশ্চিত করা। আমরা দ্রুত তাদের এইমসে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করি এবং হোস্টেলে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। আমাদের সিনিয়র ওয়ার্ডেন, ডিন অফ স্টুডেন্টসরা মেডিক্যাল সেন্টারে যাতে চিকিৎসা পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করেছেন। প্রথম যে কর্তব্য ছিল, আমরা তা সম্পন্ন করেছি, আমরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রেখেছি। আমরা অবশ্যই আলোচনায় বসব।

পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য এরকম সময়ে হাতটা কাঁধে রাখলে একটু উপশম হয় তো।

সে কাজ আমি করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে আমি ডিন অফ স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে কথা বলেছি। যাতে আহত ছাত্রছাত্রীরা সমস্ত সাহায্য পায়, তা নিশ্চিত করতে আমি ওয়ার্ডেনদের সঙ্গে কথা বলেছি।

উপাচার্য এবং ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশের মধ্যে বিশ্বাসের অভাব রয়েছে। এর কারণ কী?

দেখুন, ছাত্রছাত্রীরা হোস্টেল চার্জ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। এই একমাত্র বিষয়, যাতে সম্প্রতি কালে আন্দোলন হচ্ছে। ইউজিসি পরিষ্কার বলে দিয়েছে বিদ্যুৎ, জল এবং মেসের ঠিকাকর্মীদের বেতন বিশ্ববিদ্যালয়কেই মেটাতে হবে। এ বিষয়টা আমার ছাত্রছাত্রীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিষ ইউজিসি আর এ খরচ দেবে না। আমাদের কাছে একমাত্র উপায় হল হয় ছাত্রদের কাছ থেকে এ টাকা জোগাড় করা অথবা ইউজিসি। আমরা শুরু থেকেই বলেছি, ইউজিসি যদি টাকা দেয়, তাহলে ছাত্রছাত্রীদের টাকা দিতে হবে না।

কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা যখন বলল খরচ বেশি, দরিদ্র পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের কথা ভাবতে হবে, তখন একসিকিউটিভ কাউন্সিল সমস্ত প্রস্তাব খতিয়ে দেখে এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য ৫০ শতাংশ এবং দারিদ্র্যসীমার নিচের ছাত্রছাত্রীদের ৭৫ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করে।

JNU Jagdesh Kumar আমার কাছে সব ছাত্রছাত্রীরাই সমান

আরও একটা ব্যাপারে নজর দেওয়া উচিত। আমাদের ৮০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী স্কলারশিপ পায়। এই সামান্য বর্ধিত ফি এবং নিজের খরচ নিজে মেটানোর ব্যাপারটা ওরা নিজেদের স্কলারশিপের টাকা থেকেই মেটাতে পারে। যদি অন্য ছাত্ররা খরচ না জোগাতে পারে, সে জন্য ইকোয়াল অপারচুনিটি অফিস রয়েছে, তারা সে ধরনে ব্যাপারে সাহায্য করবে।

এ সমস্ত কথা বোঝানোর পরেও ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম বন্ধ করে দিল। এ খুবই দুর্ভাগ্যজনক। যদি কেউ মনে করে তাদের দাবি ন্যায্য তাহলেও তোমরা হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে তাদের অ্যাকাডেমিক লক্ষ্যপূরণ থেকে বঞ্চিত করছ। এবং সেকারণেই এই বিক্ষোভ সভ্যতার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু হিংসার সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পর, আপনার মনে হয় না মুখোশধারী বহিরাগতরা এসে আপনার ছাত্রছাত্রীদের মারধর করে যাওয়ার ঘটনার দায়িত্ব আপনার উপর বর্তায়!

বিক্ষোভকারীরা মুখোশ পরে প্রথম এসেছিল ৩ জানুয়ারি। ইউনিভার্সিটির ডেটা সেন্টারে হামলা করেছিল তারা। আমরা যখন ডেটা সেন্টার ফের কার্যকর করে তিলি, তার পর, ৪ জানুয়ারি ফের একদল ছাত্র ডেটা সেন্টারে ঢুকে তাকে অকেজো করে দেওয়ার চেষ্টা করে। ৫ তারিখে ফের একই ঘটনা ঘটে। আমি সে কারণেই বলছি, যদি তোমাদের বিক্ষোভ ন্যায্য হয়, তাহলে মুখ লোকোনোর কী দরকার? কিসের থেকে পালাতে চাইছ তোমরা?

JNU Campus Violence জেএনইউ চত্বরে মুখোশধারী হামলা

এই প্রশ্নটা আমি বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদেরকে করেছি এবং আমরা যখন ৫ জানুয়ারির ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করার চেষ্টা করছি, তখন দেখছি বেশ কয়েক ঘণ্টার ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না, ডেটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য। এবার ৩ ও ৪ তারিখে ওরা কেন এরকম করেছিল! সার্ভার নষ্ট করার চেষ্টা কেন হয়েছিল! আর ৫ তারিখের যে ঘটনা ঘটবে, সে কথা কি বিক্ষোভকারীরা আগে থেকেই জানত! পুলিশের তৈরি করা তদন্ত কমিটি এসব প্রশ্ন তুলেছে।

এগুলো বিবেচনা করেই সত্যা জানা যাবে। কিন্তু আমরা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করিনি বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভুল। আমি এখানে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে অফিসে ছিলাম। সাড়ে চারটে নাগাদ ফ্যাকাল্টি সিলেকশন কমিটির মিটিং শেষ হয়। সে সময়েই সিকিউরিটির লোকেরা আমাকে বলে যে ১০০ থেকে ১২০ জন হিংস্রভাবে স্কুল এলাকা থেকে হোস্টেল এলাকার দিকে যাচ্ছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে সিকিউরিটি গার্ডদের সেখানে পাঠাই। আপনারা দয়া করে একটা ব্যাপার বুঝুন, আমাদের নিরাপত্তাকর্মীরা প্রাক্তন সেনাকর্মী, তাঁরা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত ও দায়বদ্ধ। ওঁরা বেলা পাঁচটা নাগাদ বুঝতে পারেন ছাত্রছাত্রীরা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে এবং তারা সংখ্যায় বাড়ছে। সে সময়ে আমরা পুলিশে খবর দেবার সিদ্ধান্ত নিই। আমি নিজে পুলিশ কমিশনার, ডিসিপি এবং এসিপি ও থানায় কথা বলি। ফলে, যদি কেউ বলেন আমরা কোনও ব্যবস্থা নিইনি এবং ব্যবস্থা নিতে দেরি করেছি, তাহলে তিনি সম্পূর্ণ ভুল।

কিন্তু আপনি তো তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে অপেক্ষা করতে বলেছিলেন যখন এখানে সন্ত্রাস চলছে... মারধর শেষ হবার পর তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়।

দেখুন, বিশ্ববিদ্যালয় একটা মুক্ত এলাকা। আমরা সেখানে পুলিশ চাই না। আমরা সব সময়েই পুলিশকে নর্থ গেটে অপেক্ষা করতে বলি এবং সাদা পোশাকের পুলিশ সব সময়েই এখানে থাকে। তারা যদি মনে করে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে তখন আমরা পুলিশকে বলি তাড়াতাড়ি ভিতরে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে। সেদিনও তাই করা হয়েছে।

jagadeesh kumar, JNU violence JNU fee hike protest, JNU CAA protest, jnu attack, JNU vice chancellor interview, jnu news, indian express জেএনইউ ক্যাম্পাসে সংসদ সভানেত্রী ঐশী ঘোষ

আপনি বলছেন সাদা পোশাকে নিরাপত্তাকর্মী ছিল।

হ্যাঁ

তাহলে পরিস্থিতি বুঝে আরও বাহিনী ডাকা তাদের দায়িত্ব ?

দেখুন, আরও বাহিনী নর্থ গেটে ছিলই। এক দল পুলিশকর্মী এসেছিল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সাদা পোশাকে পুলিশ ছিল, আমাদের নিজেদের নিরাপত্তাবাহিনীও ছিল। এরকম অবস্থায় সাদা পোশাকের পুলিশ ও আমাদের নিরাপত্তাকর্মীরা যদি দেখে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তখন পুলিশকে ডাকা হয় এবং তারা চলে আসে। এরকম ঘটনা এই প্রথম নয়। যখনই বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তি হয়, আমরা পুলিশকে নর্থ গেটের বাইরে অপেক্ষা করতে বলি এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তারপর ইউনিভার্সিটিতে ঢুকতে বলি। একদিকে লোক আমাদের সমালোচনা করে যে আমরা কেন পুলিশ ডাকলাম না। অন্যদিকে আমরা যদি সরাসরি পুলিশেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বলি, তাহলেও আমাদের সমালোচনা করা হয়। আমরা যেন পাঞ্চিং ব্যাগ। কিন্তু আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা এবং আমাদের ছাত্রছাত্রীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করা। সেিনও আমরা আমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী সব থেকে ভাল যেটা, তাই করেছি।

এখন তো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা রয়েছে। এবার উত্তেজনা কমাতে, বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য ও পড়াশোনা শুরু করার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আপনি আজই ক্যাম্পাসে ঘুরে দেখুন কোনও উত্তেজনার চিহ্ন নেই কারণ ক্লাস শুরু হয়ে হিয়েছে। উইন্টার সেমেস্টারের জন্য অর্ধেকের বেশি ছাত্রছাত্রী রেজিস্টার করে ফেলেছে, প্রশাসন এব্যাপারে যথেষ্ট সহযোগিতা করছে। বিভিন্ন স্তরে ওয়ার্ডেনদের সঙ্গে বৈঠক হচ্চে, ছাত্রদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, ডিন ও স্কুলের চেয়ারপার্সনদের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে।

ফলে, বিভিন্ন স্তরে বৈঠক চলছে। এর পর এরকম ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সে নিয়ে মিটিং চলছে। বিশেষ করে, বহিরাগত সমস্যাটা নিয়ে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও বেআইনি বহিরাগত চাই না, ফলে আমরা ওয়ার্ডেনদের অনুরোধ করেছি, হস্টেলে যাঁরা থাকেন তাঁদের সহায়তা নিয়ে বেআইনি বহিরাগতদের চিহ্নিত করা হোক, যাতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। ফলে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, আমরা আজও পুলিশকে বলেছি গেটে প্রস্তুত থাকতে, যাতে যে কোনও রকম আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে আমাদের তারা সাহায্য করতে পারে। ফলে আমরা সম্ভাব্য সমস্তরকম ব্যবস্থা নিয়েছি।

আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের কী হবে? তাঁদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কীভাবে বিশ্বাস অর্জন করবেন?

দেখুন, শুধু বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরা নয়, গোটা ছাত্র সমাজের ব্যাপারেই জেএনইউ প্রশাসন নমনীয়তা দেখিয়েছে। কিন্তু আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও কিছু শিক্ষক দুর্ভাগ্যজনক ভাবে অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। একদিকে তাঁরা বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুকূল পরিস্থিতি ফিরয়ে আনতে কিন্তু তাঁরা নিজেরাই গবেষণা ও পড়াশোনার যাতে না চলতে পারে তার জন্য অসহযোগিতার ডাক দিচ্ছেন। এরকম দুমুখো কথা বার্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম চালাবার জন্য ঠিক নয়। জেএনইউ প্রশাসন যা করেছে, তার বাইরে আর কী করতে পারে! এবার আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের তাদের অনড় অবস্থান থেকে সরে আসা এবং জেএনইউ প্রশাসন যেভাবে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার জন্য সাহায্য করেছে তার পাশে দাঁড়ানো ও বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে, তার অংশ হয়ে ওঠা।

কিন্তু আপনিও তো কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তিন চারশ ছাত্রছাত্রীকে আপনি রেজিস্টার করতে দেননি। একজন অভিভাবক হিসেবে আপনি তাদের একবার সুযোগ দিয়ে পড়াশোনার ফেরার সুযোগ করতে পারতেন।

আমরা নিজেরা ছাত্রছাত্রীদের আটকাতে পারি না। আমাদের চিফ প্রোক্টরের অফিস রয়েছে। কোনও ছাত্র যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভাঙে তাহলে প্রথমে তাকে নোটিস পাঠিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন ও ব্যাখ্যার সুযোগ দেওয়া হয়। সে না এলে, দ্বিতীয় নোটিস পাঠানো হয়। দ্বিতীয়বারও না এলে তৃতীয় নোটিস পাঠানো হয়। তৃতীয়বারেও না এলে তাকে অ্যাকাডেমিক্যালি সাসপেন্ড করা হয়। কারণ চিফ প্রোক্টরের দফতরের সঙ্গে সমন্বর রাখার জন্য তাদের নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতেই হবে। তাহলেই তদন্ত এগোবে। যেহেতু এরা চিফ প্রোক্টরের সঙ্গে সহযোগিতা করেনি, ফলে তাদের অস্থায়ীভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিন্তু তারা যদি এগিয়ে এসে নিজেদের অবস্থান না বলে তাহলে সত্য সামনে আসবে না। কিন্তু যদি ওরা আসে তাহলে তো সত্য বেরিয়ে পড়বে। ওরা তা ঘটতে দেবে না।

কিন্তু আপনি তো আপনার ক্ষমতাপ্রয়োগ করে সে শাস্তি মকুব করতে পারেন এবং এই সেমেস্টারে সব নতুন করে শুরু করতে পারেন। আপনি তো সে কাজও করছেন না।

উপাচার্যের যে কোনও শাস্তি মকুব করা বা কমানোর অধিকার রয়েছে। কিন্তু প্রথমত তুমি যদি না এসে নিজের কথা না বলো, তাহলে তুমি কিসের ভয় পাচ্ছ! আমার মনে হয়, ছাত্রছাত্রীরা অত্যন্ত অনড় এবং তারা বলে চলেছে জেএনইউ প্রশাসন অনড়। একটা অপরাধ যদি প্রমাণিত হয়, যদি চিফ প্রোক্টর কাউকে শাস্তি দেন, তাহলে আমরা বিষয়টি নরমভাবে দেখব। কিন্তু প্রথমে তাদের এগিয়ে এসে সহযোগিতা করতে হবে।

আপনি বলছেন, প্রোক্টরের দফতর শাস্তি দিলে আপনি তা মকুব করতে পারেন?

হ্যাঁ। মকুব করতে পারি। শাস্তি কমাতে পারি। অনেক উপায় রয়েছে...

আপনি কি তা করবেন?

আমরা আগেও এরকম করেছি। কোনও ছাত্র যদি আবেদন করে... আমাদের কাছে সব রাস্তাই খোলা। কিন্ত ছাত্রছাত্রীরা এত অনড়।

কিন্তু মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের বৈঠকে স্থির হয়েছিল যে উপাচার্য নরম মনোভাব দেখাবেন…

আমরা দেখাব। আমি এও বলেছি যে অতীত ভুলে যাও। সামনের দিকে তাকাও। এবং মানবসম্পদোন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকের নথিতেই প্রশাসনের নরম দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে। নরম দৃষ্টভঙ্গি তখনই আসবে যখন চিফ প্রোক্টর শাস্তি দেবেন। তখনই আমি নরম মনোভাব দেখাতে পারব। তুমি বলতে পারো না যে তদন্ত থামিয়ে দিতে হবে। ফলে আমাদের প্রথমে সত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং সে কারণেই তদন্ত শুরু হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের উচিত তদন্তে সহযোগিতা করা।

কিন্তু তাতে অংশগ্রহণ করলে, সেটাই যে তাদের সমস্ত রকম পড়াশোনা বন্ধ রাখার ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে যাবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়?

তদন্ত শেষ হোক। চিফ প্রোক্টর প্রস্তাব দিন। তারপর আমরা নরম মনোভাব নেব।

কিন্তু তদন্ত বন্ধ করার কোনও পরিকল্পনা আপনি নিচ্ছেন না।

দেখুন, তদন্ত প্রক্রিয়া তো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া চলতেও হবে। যেমন ছাত্রদের রেজিস্ট্রেশেন প্রক্রিয়া। কেউ যদি আগের সেমেস্টারের প্রয়োজনীয় অ্যাকাডেমিক কাজকর্ম না শেষ করে, তাহলে আমি তাদের পরের সেমেস্টারের জন্য রেজিস্টার করাতে পারব না। আমি অস্থায়ীভাবে রেজিস্টার করিয়ে দিতে পারি। আমাদের সে ক্ষমতা রয়েছে। একইভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হবার পর ও শাস্তিদানের পর আমি নরম মনোভাব নিতে পারি।

আরেকটা ইস্যু হল ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধিত্বের। ভোট হয়েছে, কিন্তু উপাচার্য আইনি প্রতিনিধিদের স্বীকৃতি দিচ্ছেন না কেন? সমস্ত মতাবলম্বী ছাত্রছাত্রীরাই ভোটে অংশগ্রহণ করেছিল এবং ফলাফলও মেনে নিয়েচে তারা। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাদেরকে মাধ্যম হিসেবে নেওয়া হচ্ছে না কেন?

হস্টেল সংক্রান্ত ব্যাপারের কথা যদি ধরেন, তাহলে আমাদের ১৮টা হস্টেল রয়েছে, ১৮ জন নির্বাচিত হস্টেল প্রেসিডেন্ট রয়েছেন। আমরা হস্টেল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছি। উপাচার্যও তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু ছাত্র সংসদের কথা যদি বলেন, তাহলে গোটা ব্যাপারটাই বিচারাধীন। লিংডো কমিটির সুপারিশ অনুসারে, একটা অভিযোগ প্রতিকার কমিটি থাকার কথা। সে কমিটি সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখবে এবং দেখবে সবটা কমিটির সুপারিশ মোতাবেক হয়েছে কিনা।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, কিছু ছাত্রনেতা হাইকোর্টে গিয়ে এই কমিটির যথার্থতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। এবার হাইকোর্ট পরের তারিখ দিয়েছে ২০২০ সালের ১ মে। যদি তোমরা অভিযোগ প্রতিকার কমিটির অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোল, যে কমিটি তোমাদের নোটিফাই করবে তাহলে বিষয়টি মুশকিলের হয়ে পড়ে। আমরা যদি এদের এখন স্বীকৃতি দিই তাহলে আদালতের অবমাননা হবে। সেটা একটা ব্যাপার। দ্বিতীয়ত, ওরা আমাদের সঙ্গে দেখা করে প্রস্তাব ও পরামর্শ দিতে পারে।

মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক জেএনইউ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ডাকছে, উপাচার্য তাদের ডেকে উঠতে পারছেন না কেন?

আমরা ছাত্র সংসদের নির্বাচনে যারা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিল তাদের সবাইকে আমন্ত্রণ করেছি। ফলে আমরা একভাবে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে মিলিত হচ্ছি।

কিন্তু জেএনইউ ছাত্র সংসদের সঙ্গে আলোচনায় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দিক থেকে কোনও বাধা নেইষ লিংডো কমিটির ব্যাপার মাথায় রাখলেও মন্ত্রক তাদের সঙ্গে দেখা করছে। জগদেশ কুমারের গোঁয়ার্তুমির কারণ কী?

আমরা জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট ইলেক্টকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমরা অন্য প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাহলে আমন্ত্রণ না জানানোর কথা উঠছে কেন?

অচলাবস্থা ভাঙতে কি তাদের আবার আলোচনায় ডাকবেন?

ওরা সবসময়েই স্বাগত। ওরা যদি এসে আলোচনা করতে চায়, আমরা কখনওই না বলব না।

ক্যাম্পাসের সমস্যা মেটাতে যদি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে মধ্যস্থতা করতে হয় তাহলে উপাচার্যের খুব কারাপ অবস্থাই প্রতিফলিত হয়। আপনার মনে হয় না যে একভাবে এ কথা বলা হচ্ছে যে জেএনইউ উফাচার্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় সফল নন?

মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ও জেএনইউ প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করছে। কারণ আমাদের উভয় পক্ষের কাছেই মূল লক্ষ্য হল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার কাজ য়াতে চলে তা নিশ্চিত করা। ফলে আমরা একসঙ্গেই আছি।

কিন্তু মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক মধ্যস্থতা করছে মানেই আপনি সফল নন। আপনার মনে হয় না আপনার পদত্যাগ করা উচিত?

দেখুন আমার পদত্যাগের দাবি নতুন নয়, ২০১৬ সালে আমি যখন নতুন ছিলাম, তখন থেকে উঠেছে। প্রথমবার অল্প কিছু ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক জেএনইউ প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতের রাস্তা বেছে নেন। সেবার আমরা বলেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন অধ্যাপকের অধীনে কতজন গবেষণা করতে পারবেন সে ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের গাইডলাইন মেনে চলতে হবে। এটা কোনও নতুন নোটিফিকেশন নয়। ২০০৯ সালে ইউজিসি এ নোটিস জারি করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তা গ্রহণ করেনি। ২০১৭  সালে তা গৃহীত হয়।

ভাবতে পারেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনের অধীনে ৩০-৪০ জন গবেষণা করেন। পৃথিবী সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এ সংখ্যা গড়ে ৩.৫ থেক ৪। আমরা যখন এই নোটিফিকেশন গ্রহণ করি, তখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, অ্যাডমিন বিল্ডিং দখল হয়ে গিয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জনশুনানি হয়েছিল, আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাড়িয়েও করেছিলেন ওঁরা। বুঝতেই পারছেন এখানে কীরকম মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চলে। ফলে, তখন থেকেই ওরা বলে চলেছে উপাচার্যের পদত্যাগ করা উচিত। কিন্তু কেন? আমি কী পাপ করেছি? আমি এই কথাটা জিজ্ঞাসা করতে চাই।

জামিয়ার ক্যাম্পাসের বিক্ষোভ নিয়ে, সেখানে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আপনি কী বলবেন?

আমি সবসময়েই মনে করি, ক্যাম্পাসে হিংসা ঘটা উচিত নয়। যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে হবে। যদি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হয়, তাহলে পুলিশ তা নিয়্ন্ত্রণ করবে। এটাই আমার অবস্থান। কিন্তু সামান্য ঘটনায় ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকা উচিত নয়।

আপনি বলছেন ৫ জানুয়ারি হামলা যখন চলছে তখন সার্ভার বন্ধ ছিল। কিন্তু সেদিনই ছাত্রছাত্রীরা সিআইএসের কাছ থেকে মেল পেয়েছে... তখন সার্ভার সমস্যার কী হল?

আমাদের ওয়েব সার্ভার আর কম্যুনিকেশন নেটওয়ার্ক আলাদা। সে কারণেই ওই সময়ে ওয়েবসাইট কাজ করছিল।

JNU
Advertisment