হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই মারাত্মক অভিযোগ করলেন জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ। আরএসএস ঘনিষ্ঠ অধ্যাপকরাই রবিবার রাতে পড়ুয়াদের উপর হামলা চালাতে মদত যুগিয়েছিল। পড়ুয়াদের সংঘবদ্ধ আন্দোলনকে ভাঙতেই এই চক্রান্ত বলে জানান ঐশী। বিশ্ববিদ্য়ালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে দুষ্ক্ৃতীদের আঁতাঁত রয়েছে এদিন অভিযোগ করেন জেএনইউ ছাত্র সংসদের নেত্রী। পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে ঐশী বলেন, 'ক্যাম্পাসের মধ্যে পড়ুয়াদের উপর হামলা সত্ত্বেও পুলিশ হস্তক্ষেপ করেনি।' এদিকে রবিবার জেএনইউ ক্যাম্পাসে ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনায় পুলিশকে নোটিস পাঠাল দিল্লি মহিলা কমিশন। সোমবার সকালে জেএনইউকাণ্ডে দিল্লির উপরাজ্যপাল অমিত বাইজালের সঙ্গে কথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জেএনইউ-এর প্রতিনিধিদের ডেকে রবিবারের ঘটনা নিয়ে কথা বলতে বাইজালকে নির্দেশ দেন তিনি। দাঙ্গা ও রাষ্ট্রীয় সম্মত্তি ভাঙচুরের অভিযোগে দিল্লি পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এই কারণ দেখিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন সবরমতী বস্টেলের ওয়ার্ডেন।
মুখে কালো মুখোশ। হাতে লাঠি, রড, হাতুড়ি। রবিবার রাতে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে প্রবেশ করে মুখোশধারীদের তিন ঘন্টার তাণ্ডবে রক্তাক্ত হল ক্যাম্পাস। ঘটনায় আহতের সংখ্যা ২৬। তবে কারা এই মুখোশধারীরা? প্রত্যক্ষদর্শী এবং আহতদের অভিযোগ বহিরাগতরা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সদস্য। প্রায় শ'খানেক মুখোশধারীরা এসে এই তাণ্ডব চালায় বলেও অভিযোগ করেন পড়ুয়ারা। তবে এই ঘটনায় কার্যত দর্শক হিসেবেই ছিল পুলিশ, এমন বিস্ফোরক মন্তব্যও করেন আহতরা। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের তরফে ফোন পাওয়ার পরেও কীভাবে গোটা ঘটনায় নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করল পুলিশ? প্রশ্ন উঠছে সেখানেই।
তবে, তাদের দিকে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। রবিবারের হামলায় জখম হয়েছেন, জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ একাধিক ছাত্রছাত্রী, দু’জন শিক্ষক এবং দু’জন সুরক্ষা কর্মী। আহতদের সকলকেই দিল্লির এইমস এবং সফদরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার প্রত্যেককেই ছেড়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে।
Read the full story in English
Live Blog
জেএনইউ সংক্রান্ত সব খবরের হাইলাইটস পেতে চোখ রাখুন এখানে, Follow the Highlights here:
জেএনইউ-তে হামলার ঘটনায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘কে কাকে মেরেছে আমরা কেউই বলতে পারব না। এটা ছাত্রদের ব্যাপার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপার, প্রশাসনের ব্যাপার। ওখানে কাদের আখড়া? মারপিট হলে অস্বাভাবিক কিছু নয়। শিক্ষাঙ্গন মারামারির জায়গা নয়। কে আমদানি করেছে এসব? কমিউনিস্টরা আমদানি করেছে। এসএফআই-কংগ্রেস করেছে। ত্রিপুরা, বাংলা, কেরালা ছাড়া আর তো কোথাও এমনটা হয় না। এদেশে কমিউনিস্টদের মারা শুরু হয়েছে। মনে হয়, এটা তাদের পাওনা আছে, কারণ যা ব্যবহার করেছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। হিসেব বরাবর হচ্ছে’’। বিস্তারিত পড়ুন
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপর পুলিশি নিগ্রহের ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের কথা বলেছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। এবার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার ঘটনার সঙ্গে ২৬/১১ মুম্বই হামলার তুলনা টানলেন শিবসেনা প্রধান। যা ঘিরে জোর চর্চা জাতীয় রাজনীতিতে। এ প্রসঙ্গে শিবসেনা প্রধান বলেন, ‘‘রবিবার রাতে জেএনইউ-তে পড়ুয়াদের উপর হামলার ঘটনা আমাকে ২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হামলার কথা মনে করাচ্ছে। মহারাষ্ট্রে জেএনইউ-এর মতো ঘটনা ঘটতে দেব না…দেশে এখন পড়ুয়ারা নিরাপদ নন’’। বিস্তারিত পড়ুন...
রবিবারের ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছাত্র-ছাত্রীরা। জেএনইউতে পড়ুদের উপর হামলার প্রতিবাদে এদিন গেট ওয়ে অফ ইন্ডিয়ার সামনে জড়ো হয় মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান দিয়ে তারা গতকালের ঘটনার নিন্দার করে।
উপাচার্য এম জগদেশ কুমারই জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপর হামলা চালাতে মুখশধারীদের অনুমতি দিয়েছিলেন। অভিযোগ করল সিপিআইএম। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যিনি দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের অবণতি ঘটাতে উদ্যোগী ভূমিকা নিচ্ছেন সেই উপাচার্যই পড়ুয়াদের উপর হামলার চালাতে অনুমতি দিয়েছিলেন। জেএনইউ-এর ভিজিটর রাষ্ট্রপতি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তাঁর উপাচার্যকে বরখাস্ত করা উচিত।
জেএনইউ-তে হামলার জন্য দায়ী বামেরাই। সোমবার আবারও দাবি করল এবিভিপি। রবিবারের ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ সভা করে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
Varanasi: Akhil Bharatiya Vidyarthi Parishad(ABVP) members protest in Banaras Hindu University alleging attack on JNU students by Left groups yesterday. #JNUViolence pic.twitter.com/QorQ56FCAk
— ANI UP (@ANINewsUP) January 6, 2020
অশান্ত জেএনইউ। এই পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেস, আপ ও বামেদেরকেই দায়ী করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। তিনি বলেন, 'হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করি। কংগ্রেস, আপ ও বামেরাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশে ও বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তি পাকাচ্ছে। এটার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।'
জেএনইউ-এর পড়ুয়াদের আতঙ্কে ক্যাম্পাস না ছাড়ার আহ্বান জানালেন প্রোক্টার ধনঞ্জয় সিং। তিনি বলেন, 'আতঙ্কিত হয়ে ক্যাম্পাস না ছাড়ার জন্য আমি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে আবেদন করছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে প্রত্যেকের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।' রবিবারের হামলার প্রেক্ষিতে এদিন মানব সম্পদ উন্নয় মন্ত্রকের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন ধনঞ্জয় সিং। তারপরই এই আহ্বান জানান তিনি। ডাকা পাওয়া সত্ত্বেও এই বৈঠকে উপস্থিত হননি জেএনইউ-এর উপাচার্য।
প্রতিদিন ভারতের যুবসমাজ এবং পড়ুয়াদের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে । পড়ুয়াদের উপর ভয়ঙ্কর ও অভিনব কায়দায় গুন্ডাদের দ্বারা ক্ষমতাসীন মোদী সরকার দমনপীড়ন চালাচ্ছে- যা কোনও মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। গতকাল জেএনইউতে অধ্যাপক ও শিক্ষার্থীদের উপর হাড় হিম করা হামলার ঘটনাই দেখিয়ে দিল কীভাবে মোদী সরকার বিরোধী স্বরকে গুঁড়িয়ে দেয়। ছাত্র ও যুব সমাজের প্রয়োজন, সুলভে শিক্ষা, যোগ্য চাকরি, আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যত এবং আমাদের সমৃদ্ধ গণতন্ত্রে অংশগ্রহণের অধিকার। দুঃখের বিষয় যে মোদী সরকার এইসব আকাঙ্খাকেই দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে। গোটা কংগ্রেস দল পড়ুয়া ও যুব সমাজের পাশে রয়েছে। আমরা জেএনইউতে এই পরিকল্পিত হিংসাকে অনুমোদন করি না ও স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাই।
ক্যাম্পাসে শান্তি মিছিল চলাকালীন তাঁকেই বিশেষভাবে নিশানা করা হয়েছিল বলে সোমবার দাবি করলেন জেএনইউ ছাত্র সংগঠনের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ। তিনি বলেন, 'রবিবার প্রায় ২০-২৫ মুখোশধারীর দল চড়াও শান্তি মিছিল ব্যাহত করে এবং লোহার রড দিয়ে হামলা চালায়। এতেই তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন।' পরে তাঁকে এইমস-এ ভর্তি করা হয়। ঐশীকে সোমবারই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গতকাল জেএনইউ হামলায় জখম ৩৪ জন পড়ুয়াকে এইমস-এ ভর্তি করা হয়েছিল। সোমবার তাদের প্রত্যেককেই ছেড়ে দেওয়া হয়। এদের মধ্যে ৪ জনের মাথায় আঘাত ছিল বলে জানিয়েছে হাসপাতাল।
সোমবার জেএনইউ-তে হামলার ঘটনার নিন্দা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমিও ছাত্রনেতা হিসেবে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেছিলাম। ছাত্র রাজনীতি ভাল করে জানি। এখন কীভাবে পড়ুয়াদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রের উপর আঘাত হানা হচ্ছে। কেউ কারও বিরুদ্ধে কথা বললেই পাকিস্তানি বলা হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে কথা বললে দেশের শত্রু বলা হচ্ছে। পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে বলে যা খুশি করছে। সকলকে সংবিধান মেনে কাজ করা উচিত। এটা ফ্যাসিস্ট সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। এটা ফ্যাসিস্ট স্ট্রাইক, এমন স্ট্রাইক দেশে আগে কখনই দেখিনি। সব পড়ুয়াদের বলব, ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে’’। বিস্তারিত পড়ুন
#WATCH West Bengal CM Mamata Banerjee on #JNUViolence : It is very disturbing, it is a dangerous planted attack on democracy.Anyone who speaks against them is labelled a Pakistani and an enemy of the country. We never saw such a situation in the country before this. pic.twitter.com/79oegFnMeA
— ANI (@ANI) January 6, 2020
দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে রবিবার রাতে পড়ুয়া ও শিক্ষিকাদের উপরে হামলার ঘটনায় নিন্দায় সরব গোটা দেশ। শনিবারই আলিগড় থেকে পুনের ফিল্ম ইন্সটিটিউট, মুম্বই থেকে কলকাতা, জেএনইউএর তাণ্ডবের প্রতিবাদে সোচ্চার দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও। জেএনইউয়ের পাশে থাকতে আজ মহানগরের রাস্তায় মিছিল করবে যাদবপুর, প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা। বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ের গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ায় চলছে বিক্ষোভ।
পুলিশকে সমন পাঠল দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল। জেএনইউ ক্যাম্পাসের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ছাত্রীরা। কেন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হল পুলিশ? এই প্রশ্ন তুলেই সমন পাঠান হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া ওই রাতে কজনের বিরুদ্ধে এফআইয়ার করা হয়েছে, ও কেন হামলার সময়ই হস্তক্ষেপ করা হল না? পুলিশর কাচে তা জানতে চেয়েছে দিল্লি মহিলা কমিশন।
রবিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার উপাচার্য সহ জেএনইউয়ের প্রশাসনকে জরুরি বৈঠকের জন্য ডাকল মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। অধ্যাপক, পড়ুয়াদের উপর মুখোশধারীদের হামলার পর গতকালই জেএনইউয়ের রেজিস্ট্রার প্রমোদ কুমারের থেকে রিপোর্ট তলব করেছিল মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই সেই রিপোর্ট মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সব বিবরণ দিতে মন্ত্রকে রয়েছেন বলে সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন উপাচার্য জগদেশ কুমার।
'জেএনইউ-র বর্তমান পরিস্থিতির উৎস হল কিছু পড়ুয়ার হিংসাত্মক আন্দোলন। এর জেরেই বিশ্ববিদ্য়ালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর পঠনপাঠন বাধা পাচ্ছে। প্রতিবাদকারীরা শীতকালীন সেমিস্টারের রেজিস্ট্রেশনের কাজ ব্যাহত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ সার্ভারগুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছিল। তারা হাজার হাজার পড়ুয়াকে শাতকালীন সেমিস্টারের জন্য নাম নথিভুক্ত করতে বাধা দিয়েছে। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ ব্যহত করা। এটি গুন্ডামি এবং জেএনইউয়ের নীতিবিরোধী। কোনও অভিযুক্তকে আড়াল করা হবে না, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' রবিবারের ঘটনার পর জানিয়েছেন জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এন জগদেশ কুমার।
জেএনইউ-এর ঘটনার জের। সোমবার ইস্তফা দিলেন সবরমতী হস্টেলের সিনিয়র ওয়ার্ডেন। হস্টেলের পড়ুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। সেই কারণেই ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পদত্যাগী ওয়ার্ডেন।
জেএনইউতে হামলার জন্য বাম ছাত্র সংগঠনকেই দায়ী করেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। তিনি বলেছেন, 'বাম ছাত্ররা জেএনইউকে বদনাম করছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গুন্ডামির কেন্দ্রে পরিণত করেছে।'
Union Minister Giriraj Singh on #JNUViolence: Left students are defaming Jawaharlal Nehru University (JNU), they have turned the University into a centre of hooliganism. pic.twitter.com/AmjPiEnB3r
— ANI (@ANI) January 6, 2020
রবিবারের ঘটনার পর জেএনইউ ক্যাম্পাস ও তার বাইরে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে পুলিশ। সোমবার পরিচয়পত্র ছাড়া কোনও ব্যক্তি বা গাড়িকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ক্যাম্পাসের বাইরেও মোতায়েন রয়েছে প্রচুর পুলিশ। হস্টেলগুলোতেও পুলিশি নিরাপত্তা বাড়নো হয়েছে।
দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখোশধারীদের হামলা ও নিগ্রহের ঘটনা ‘পরিকল্পনামাফিক’, এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তদন্তে। রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাণ্ডব চালানোর আগে হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরল এমন কিছু মেসেজ যেখানে লেখা ছিল ‘দেশ বিরোধীদের মেরে ফেলুন’। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে তাঁদের মধ্যে ছ’জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে, যাদের মোবাইল থেকেই বেশ কয়েকটি গ্রুপে এই মেসেজটি পাঠানো হয়েছিল। বিস্তারিত পড়ুন...
রাতেই জেএনইউতে যান কংগ্রেস সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সমালোচনায় মুখর হন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, বৃন্দা কারাতরা। টুইটে প্রতিবাদ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের অধিকাংশ নেতৃত্ব।
জেএনইউকাণ্ডের তদন্তে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করল দিল্লি পুলিশ। প্রথমিক তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলেছে বলে দাবি দিল্লি পুলিশের। যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বিশেষ সূত্রের মাধ্যমে তদন্ত শেষ করবে বলে মনে করছে। সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানান দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক এম এস রানধাওয়া।
সাংবাদিক বৈঠকে জেএনইউএসইউ-এর সভানেত্রী ঐশী ঘোষ।
ছবি: তাসি তোবগেয়াল
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই মারাত্মক অভিযোগ করলেন জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ। আরএসএস ঘনিষ্ট অধ্যাপকরাই রবিবার রাতে পড়ুয়াদের উপর হামলা চালাতে মদত যুগিয়েছিল। পড়ুয়াদের সংঘবদ্ধ আন্দোলনকে ভাঙতেই এই চক্রান্ত বলে জানান ঐশী। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের আঁতাত রয়েছে এদিন অভিযোগ করেন জেএনইউ ছাত্র সংসদের নেত্রী। পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে ঐশী বলেন, 'ক্যাম্পাসের মধ্যে পড়ুয়াদের উপর হামলা সত্ত্বেও পুলিশ হস্তক্ষেপ করেনি।'
জেএনইউকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরব অভিনেতা অনিল কাপুর।তিনি বলেন, 'রবিবার রাতে যা ঘটেছে তাতে আমি অত্যন্ত হতাশা ও মর্মাহত।ঘটনাটি বেশ বিরক্তিরও।এই ঘটনার কথা মনে করে আমি গত রাতে ঘুমতে পারিনি।হিংসা থেকে আমদের কিছি পাওয়ার নেই।যারা এই কাজ করেছে তাদের শাস্তি পাওয়া উচিত।'
জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি করল বিজেপির বন্ধু দল জেডিইউ। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে রবিবারের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছে নীতীশ কুমারের দল। জেডিইউ মুখপাত্র কে সি ত্যাগী বলেছেন, 'উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শীর্ষ পদাধিকারীরা এই নোংরা খেলার নীরব দর্শক। এদের অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়া হোক। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে গোটা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা উচিত। পুলিশও তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।'
সিএএ বিরোধী আন্দোলনে গর্জে উঠেছিল আসামের গুয়াহাটি। জেএনইউ তাণ্ডবের প্রতিবাদেও সামিল গুয়াহাটির পড়ুয়ারা। প্ল্যাকার্ড হাতে, স্লোগানে এদিন মুখরিত হয় উত্তর পূর্ব ভারতের এই শহর। এবিভিপিকে ফ্যাসিস্ত শক্তির সঙ্গে তুলনা করা হয় পড়ুয়াদের বিক্ষোভ থেকে।
প্রতিবাদের শহরে বিক্ষোভের আঁচ। জেএনইউ-এর ঘটনার প্রতিবাদে এদিন কলকাতায় পথে নেমে বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই ও ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা। প্রসিডেন্সির এসএফআই সমর্থকরা এদিন কলেজ স্ট্রিট মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করে। অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের সামনে প্রতিবাদ দেখায় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন।।
ছবি: শশী ঘোষ