দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখোশধারীদের হামলা ও নিগ্রহের ঘটনা 'পরিকল্পনামাফিক', এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তদন্তে। রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাণ্ডব চালানোর আগে হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরল এমন কিছু মেসেজ যেখানে লেখা ছিল 'দেশ বিরোধীদের মেরে ফেলুন'। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে তাঁদের মধ্যে ছ'জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে, যাদের মোবাইল থেকেই বেশ কয়েকটি গ্রুপে এই মেসেজটি পাঠানো হয়েছিল।
যদিও ছ'জনের মধ্যে তিনজন জানিয়েছে তাঁদের নম্বর 'অপব্যবহার' করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন বলেছেন, তাঁর বন্ধু এই মেসেজটি পাঠিয়েছেন, তিনি নন। এক ব্যক্তি মেসেজে লিখেছেন, "একদম! একবার তো এসপার নয়তো ওসপার করতে হবেই। এখনই যদি ওদের না মারি তাহলে আর কবে? অসভ্যতা চালিয়ে যাচ্ছে।" যখন সেই ছেলেটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় তখন তিনি বলেন, " হ্যাঁ। আমি জেএনইউর ছাত্র, স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ থেকে পিএইচডি করছিলাম। হ্যাঁ, আমি এবিভিপি থেকে এসেছি। সাংবাদিকরাই জেএনইউয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।" কিছু সময় বাদে আবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি বলেন, "আমি জেএনইউতে পড়ি কিন্তু আমি এই মেসেজগুলি পোস্ট করিনি।"
এমনকী এই তাণ্ডব চালানোর পর একটি গ্রুপ যার নাম 'লেফট টেরর ডাউন ডাউন', সেখানে এক ব্যক্তি পোস্ট করেছেন, "আজ জেএনইউতে আমরা দারুন মজা করেছি। দেশদ্রোহীদের মেরে খুব ভালো লাগছে।" সেই ছাত্রের সঙ্গে যখন যোগাযোগ করা হয় তিনি বলেন, "আমি হরিয়ানা থেকে আসা এক ছাত্র। আমরা কয়েকজন মজা করছিলাম। আমরা মিডিয়াতে একটি পোস্ট দেখি তারপর আমার বন্ধু এই গ্রুপে জয়েন করে এই পোস্টটি করে। আমি তাকে তিরস্কারও করেছিলাম। আমি রাজনৈতিকভাবে তেমন সচেতন নই তাই জেএনইউর শিক্ষার্থীরা দেশবিরোধী কিনা তা বলতে পারি না। "
গ্রুপগুলিতে একজন লিখেছেন, "ওদের হস্টেলে ঢুকে মারবো"। সেই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "আমি তো নয়ডায় আছি। কে আপনাকে আমার নম্বর দিয়েছে?" এরপরই ফোনটি কেটে দেন ওই ব্যক্তি। অপর এক ব্যক্তি যিনি 'ইউনিটি এগেনস্ট লেফট' নামক একটি গ্রুপে আছেন, তিনি সেখানে লেখেন, "ক্যাম্পাসে হিংসতা প্রকাশের পরিকল্পনা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করুন।" তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে এবিভিপির সঙ্গে তাঁর যোগ অস্বীকার করেন, এমনটি পোস্টটিও তাঁর করা নয় এমনটাই জানান।