Advertisment

জেএনইউকাণ্ডের ২৪ ঘন্টা অতিক্রান্ত, শনাক্ত করা গেল না আক্রমণকারীদের, হল না গ্রেফতার

এইমস হাসপাতাল থেকে কপালে ১৬টি স্টিচ নিয়ে সদ্য ছাড়া পাওয়ায় ঐশীর গলায় কিন্তু জারি লড়াইয়ের সুর। সরাসরি বললেন, আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপকেরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
সেদিনের ঐশীই আজ লড়াকু নেত্রী, বিস্মিত পরিবার

সাংবাদিক বৈঠকে ঐশী ঘোষ। এক্সপ্রেস ফোটো- তাশি তোবজিয়াল

দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে হামলার চব্বিশ ঘন্টা পেরিয়েছে। আহত হয়েছেন ৩১ জন শিক্ষার্থী-সহ দু'জন শিক্ষক এবং দু'জন প্রহরী। প্রকাশ্যে এসেছে হামলার বেশ কিছু ভিডিও। তবু এখনও অধরাই অভিযুক্তেরা। কারুর হাতেই হাতকড়া পরাতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। জেএনইউতে হামলার দিন থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। কীভাবে শ'খানেক বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে তিন ঘন্টা ধরে তাণ্ডব চালাতে সক্ষম হল? কেন রবিবার বিকেল ৪.৪৭ নাগাদ ফোন পেয়েও হামলা বন্ধ করতে ব্যর্থ হল পুলিশ? এমন হাজারও প্রশ্ন উঠছে দেশের ঐতিহ্যশালী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হামলাকে কেন্দ্র করে।

Advertisment

আরও পড়ুন: ঐশী ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের পুলিশের

হস্টেলের ফি বৃদ্ধি থেকে নয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা, সবেতেই সরব জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের উপর নেমে এসেছিল লাঠির আঘাত। এইমস হাসপাতাল থেকে কপালে ১৬টি স্টিচ নিয়ে সদ্য ছাড়া পাওয়ায় ঐশীর গলায় কিন্তু জারি লড়াইয়ের সুর। সরাসরি বললেন, আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপকেরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি সাকেত মুন অভিযোগ করেন যে ছাত্র সংগঠন দু'ঘন্টা আগে পুলিশ ডাকলেও তাঁদের তরফ থেকে কোনও সহায়তা পাননি। সাংবাদিক বৈঠক থেকেই ঐশীর অভিযোগ, “এটি পরিকল্পনামাফিক সংগঠিত আক্রমণ ছিল। জেএনইউ প্রশাসন, পুলিশ এবং এবিভিপির মধ্যে একটি সুস্পষ্ট যোগসূত্র রয়েছে। হামলা বন্ধে তাঁরা কোনও সাহায্য করেনি। “গত চার-পাঁচ দিন ধরে, আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন অধ্যাপকরা আমাদের আন্দোলন ভাঙার জন্য হিংসাত্মক প্রচার চালাচ্ছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে আমরা কি জেএনইউ এবং দিল্লি পুলিশের থেকে সুরক্ষা চেয়ে ভুল করেছি?"

আরও পড়ুন: জেএনইউকাণ্ড: হোয়াটসঅ্যাপে মুখোশ খুলল এবিভিপির

ঐশী জানান তিনি রবিবার বিকেল ৩টে নাগাদ দিল্লি দক্ষিণ শাখার ডিসিপি দেবেন্দ্র আর্যকে মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়েছিলেন পড়ুয়াদের মারধর করা হচ্ছে। কিন্তু সেকথা স্বীকার করেননি ডিসিপি। সাফ বলেন, "পেরিয়ার হস্টেল থেকে বিকেল ৪.৫৭ মিনিটে পিসিআরে একটি ফোন আসে। যেখানে বলা হল বাম সমর্থকেরা ইট বৃষ্টি করছেন। এরপর ৭.১২ মিনিট নাগাদ আরেকটি ফোন আসে যেখানে বলা হয়েছে অন্য দলের হামলার কথা।" তিনি এও বলেন, জেএনইউ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও একটি ফোন করা হয়েছিল এবং সন্ধ্যা ৭.৪০ মিনিটে একটি লিখিত চিঠি দিয়ে ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশের অনুরোধ জানানো হয়। দাঙ্গা ও সম্পত্তির ক্ষতি করার অভিযোগে দিল্লি পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সোমবার একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।

আরও পড়ুন: ‘ও যখন শুনবে না, তখন আর বলে কী হবে?’, দুর্গাপুরের বাড়িতে উদ্বিগ্ন ঐশীর দিদিমা

অভিযোগ উঠেছে জেএনইউয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধেও। আহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই বলেন যে জেএনইউ প্রশাসনের কেউ তাঁদের খোঁজখবর নিতে যাননি। মুখোশধারীদের লাঠিতে আহত শুক্লা সাওয়ান্ত বলেন, “উপাচার্য বা প্রশাসন কারও কাছ থেকে কোনও কল বা কোনও ধরণের যোগাযোগ করা যায়নি। কোনও মেসেজও পাঠানো হয়নি।" এদিকে সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে থাকা হামলাকারীদের শনাক্ত করার প্রশ্নে এবিভিপি জানিয়েছে, অনেকের মুখ দেখানো হলেও তাঁরা সেই সময় সেখানে ছিলেনই না। নিজেদের আত্মরক্ষার স্বার্থেই তাঁরা হাতে লাঠি তুলে নেন। কাউকে মারছেন এমন দৃশ্য কোনও ভিডিওতে নেই বলেই দাবি করেছেন এবিভিপি দিল্লির রাজ্য সম্পাদক সিদ্ধার্থ যাদব।

Read the full story in English

delhi JNU Violence
Advertisment