মুখে কালো মুখোশ। হাতে লাঠি, রড, হাতুড়ি। রবিবার রাতে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে প্রবেশ করে মুখোশধারীদের তিন ঘণ্টার তাণ্ডবে রক্তাক্ত হল ক্যাম্পাস। ঘটনায় আহতের সংখ্যা ২৬। তবে কারা এই মুখোশধারীরা? প্রত্যক্ষদর্শী এবং আহতদের অভিযোগ বহিরাগতরা বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (ABVP)-এর সদস্য। প্রায় শ'খানেক মুখোশধারীরা এসে এই তাণ্ডব চালায় বলেও অভিযোগ করেন পড়ুয়ারা। তবে এই ঘটনায় কার্যত দর্শক হিসেবেই ছিল পুলিশ, এমন বিস্ফোরক মন্তব্যও করেন আহতরা। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের তরফে ফোন পাওয়ার পরেও কীভাবে গোটা ঘটনায় নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করল পুলিশ? প্রশ্ন উঠছে সেখানেই।
Advertisment
রাতের অন্ধকারে এই ভয়ঙ্কর হামলায় আহত হয়েছেন জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ একাধিক ছাত্রছাত্রী, দু'জন শিক্ষক এবং দু'জন সুরক্ষা কর্মী। আহতদের সকলকেই দিল্লির এইমস এবং সফদরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে দিল্লির পুলিশ। গোটা ঘটনায় যখন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সেই প্রেক্ষাপটেই পুলিশকে অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন অমিত শাহ স্বয়ং। গোটা ঘটনার নিন্দা করে শাহ বলেন, বহিরাগতরা এসে এই তান্ডব চালিয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই 'নৈরাজ্য সহ্য করা হবে না'। অমিত শাহের পাশপাশি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবং এস জয়শঙ্করের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা জেএনইউ প্রাক্তনীরাও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন।
রক্তাক্ত ঐশী ঘোষ
ঠিক কি ঘটেছিল রবিবার রাতে?
হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সম্প্রতি সরব হয়েছিল জেএনইউ। সেই রেশেই রবিবার সন্ধ্যে ৬.৩০ নাগাদ 'শান্তিপূর্ণ মিছিলের' ডাক দেন জেএনইউএর টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। ক্যাম্পাসে এবিভিপি এবং বাম সংগঠনের নেতাদের কোন্দলের একদিন পরই এই মিছিলের ডাক দেন তাঁরা। সেই উদ্দেশে জড়ো হয়েছিলেন সকলেই। এরপরই শুরু হয় অতর্কিত হামলা। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ৭.৩০ নাগাদ। প্রায় ৭০০ পুলিশ ছিল ক্যাম্পাসে, এমনটাই জানা গিয়েছে।
ভাঙচুর চালানো হয়েছে হস্টেলেও
গোটা ঘটনায় এবিভিপির দিকে আঙুল উঠলেও, আরএসএসের এই শাখা গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তাঁদের বক্তব্য বাম সদস্যরাই তাঁদের উপর আক্রমণ করে। যদিও এই ঘটনাকে 'ফ্যাসিবাদ, নৈরাজ্যবাদের শক্তি' বলে নিন্দা এবং ধিক্কারে মুখর হয়েছে বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেসের সহ-সভাপতি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদরা আহত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে যান এইমস হাসপাতালে।