নেটমাধ্যমে দেশবিরোধী লেখা পোস্ট, এবার সেই অভিযোগেই গ্রেফতার হলেন জম্মু—কাশ্মীরের এক সংবাদ পোর্টালের সম্পাদক। উপত্যকা পুলিশের দাবি, পোস্টের মাধ্যমে সন্ত্রাসবিরোধী কাজকর্মকে উস্কানি দিচ্ছিলেন এই সাংবাদিক। নাগরিকদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে, আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘন করার অভিসন্ধি ছিল তাঁর। অভিযুক্তের নাম ফাহাদ শাহ। তিনি অনলাইন পোর্টাল ‘দ্য কাশ্মীরওয়ালা’র সম্পাদক। গত ১ ফেব্রুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলওয়ামা থানায় প্রথম ডেকে পাঠানো হয় তাঁকে। শুক্রবার ফের থানায় গিয়ে বয়ান রেকর্ড করতে বলা হয়। তার পরই বিবৃতি জারি করে ফাহাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। বলা হয়েছে, তদন্তে নেমে ফাহাদ শাহকে শনাক্ত করে তারা। তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে আপাতত। আরও গভীরে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে ফাহাদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘সত্যের জন্য মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোকে আজ দেশবিরোধ বলে গন্য। অসহিষ্ণু এবং কর্তৃত্ববাদী সরকারকে আয়না দেখানো দেশবিরোধ। সাংবাদিক হিসেবে ফাহাদের কাজই তাঁর হয়ে কথা বলবে এবং ভারত সরকারের বাস্তবিক অবস্থান বুঝিয়ে দেবে। কত ফাহাদকে গ্রেফতার করবেন আপনারা?’
যদিও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে ধৃত ওই সাংবাদিক যে ধরণের লেখা লিখছেন তা দেশবিরোধীতার সামিল। পুলিশের কথায়, ‘ফেসবুক ব্যবহারকারী কিছু মানুষ এবং পোর্টাল দেশবিরোধী ছবি, ভিডিও এবং লেখা পোস্ট করে চলেছিলেন। এর পিছনে কুমতলব ছিল, যাতে মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করা যায় এবং আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করতে প্ররোচিত করা যায় মানুষকে'। পুলওয়ামা জেলা পুলিশের জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে "কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং পোর্টাল জনসাধারণের মধ্যে ভয় তৈরি করার অপরাধমূলক অভিপ্রায় সহ ছবি, ভিডিও এবং পোস্ট সহ দেশবিরোধী সামগ্রী আপলোড করছে এবং আপলোড করা বিষয়বস্তু জনসাধারণের মনে নেতিবাচক এবং দেশ বিরোধী ধারণার জন্ম দিনে পারে, যা আইন-শৃঙ্খলাকে ধ্বংস করতে পারে”।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১১ সালে চালু হয় অনলাইন পোর্টাল ‘দ্য কাশ্মীরওয়ালা’। সাধারণ খবর, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিষে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হতো তাতে। এর আগে, গত মাসে ওই পোর্টালের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থী সাংবাদিক সাজাদ গুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধেও আনা হয় একই অভিযোগ। আপাতত এখনও তিনি পুলিশি হেফাজতেই রয়েছেন।