হরিয়ানার নুহ জেলায় সোমবার রাত থেকে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা। দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে দিল্লি সংলগ্ন গুরুগ্রামেও। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় পুলিশ শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাটিকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু লোক একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। এই সামাজিক অনুষ্ঠান প্রতিবছরই পরিচালিত হয়। সেই সামাজিক অনুষ্ঠানকে বিঘ্নিত করার জন্য এই হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশকেও নিশানা করা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় ষড়যন্ত্রের অংশ। বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। নুহ ছাড়া অন্য এলাকার যারা এই ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল, তাদের চিহ্নিত করার পর তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে হিংসার আবহে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন এক মহিলা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং তার তিন বছর বয়সী কন্যাসন্তান। অভিযোগ তাদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মারাত্মক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পান মা-মেয়ে। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই একটি FIR দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরে বলা হয়েছে জেলায় একটি ধর্মীয় মিছিলে হামলার সময় উন্মত্ত জনতা তাদের গাড়ি আক্রমণ করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়িটিতে ছিলেন নুহ-এর এক অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট এবং তার তিন বছর বয়সী কন্যা। অল্পের কন্য প্রাণে বাঁচেন দুজনেই।
জানা গিয়েছে ওই মহিলা বিচারকের নাম অঞ্জলি জৈন। তিনি জেলার অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম), তিনি ও তাঁর তিন বছরের মেয়ে সেদিন হিংসার সময় কার্যত পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন। হামলাকারীরা তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে থাকে সেই সঙ্গে গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ। অবশেষে গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মা-মেয়ে কোনমতে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন। মঙ্গলবার এই ঘটনায় নুহ সিটি থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। জানা গিয়েছে নূহের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের একটি ওয়ার্কশপে আশ্রয় নিতে হয় ওই মহিলা বিচারক, তার মেয়েকে। পরে কয়েকজন আইনজীবী তাদের উদ্ধার করেন।
এফআইআর অনুসারে, সোমবার বেলা ১টা নাগাদ এসিজেএম, তার তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে ওষুধ কেনার জন্য নলহারের এসকেএম মেডিকেল কলেজে গিয়েছিলেন। দুপুর ২টো নাগাদ তারা যখন মেডিকেল কলেজ থেকে ফিরছিলেন, ঠিক তখনই পুরনো বাসস্ট্যান্ডের কাছে প্রায় ১০০-১৫০ জন দাঙ্গাবাজ তাদের ওপর হামলা চালায়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৮ (দাঙ্গা), ১৪৯(বেআইনি সমাবেশ), ৪৩৫ (ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে আগুন), ৩০৭ (খুনের চেষ্টা) এবং অস্ত্র আইনের প্রাসঙ্গিক ধারার অধীনে এফআইআর দায়ের করা হয়।
গত দুদিনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলকে কেন্দ্র করে যে হিংসার ঘটনা নুহতে ঘটে এবং পরে তা গুরুগ্রামে ছড়িয়ে পড়ে সেই ঘটনায় দুই হোম গার্ড, এক ইমাম সহ মোট ৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।