"গণতন্ত্রে সরকারের সমালোচনা করার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। কেউ সেই অধিকার হরণ করতে পারে না।"- এই ব্যাপারে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বিএন শ্রীকৃষ্ণ। তিনি বলেন, "আজকের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে যদি আমি জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে বলি যে আমি প্রধানমন্ত্রীর মুখ পছন্দ করি না, কেউ আমাকে কোনও কারণ না-দেখিয়েই আমার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে পারে। আমাকে গ্রেফতার করতে পারে। জেলে পুরে দিতে পারে।'
দ্য হিন্দু পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে করা বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার বিভাগীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। এক টুইটে রিজিজু বলেন, “যাঁরা সবসময় কোনও বিধিনিষেধ ছাড়া কথা বলে জনপ্রিয় নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে গালিগালাজ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে হাহাকার করছেন! তাঁরা কখনই কংগ্রেস পার্টি দ্বারা জারি করা জরুরি অবস্থার বিষয়ে কথা বলবেন না এবং কিছু আঞ্চলিক দলের মুখ্যমন্ত্রীদের সমালোচনা করার সাহসও দেখাবেন না। আমি জানি না সুপ্রিম কোর্টের একজন প্রাক্তন বিচারপতি আসলে এই কথা বলেছেন কিনা। যদি এটি সত্য হয়, তবে বিবৃতিটি যে প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করেছেন, তাকে অবমাননা করেছে।''
বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ, তথ্যসুরক্ষার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা ও নজরদারি সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং সেগুলি সমাধানের পদ্ধতি নিয়ে সুপারিশ করেছিলেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, “আমি অসামরিক কর্মীদের বাক স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করার কথা বলেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত সমালোচনা সুশীল এবং শালীন পদ্ধতিতে হয়, এর বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত নয়। তবে আমার উদ্বেগ, আইনের শাসন এবং সরকার কীভাবে সমালোচকদের মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানায়, তা নিয়েও।"
আরও পড়ুন- লাল দুর্গে ধুন্ধুমার, আশার আলো দেখছে CPIM, ফায়দার অঙ্কে চোখ TMC-র
তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তেলেঙ্গানার একজন আইএএস অফিসার গুজরাট দাঙ্গায় গণধর্ষণের শিকার বিলকিস বানোর সমর্থনে তাঁর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করে কোনও ভুল করেছিলেন কি না। বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ জবাবে জানান, যে কেউ যখন সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করে, তখন তাঁকে কিছু শৃঙ্খলা মানতে হয়। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি হাইকোর্টের দুটি রায়ের উল্লেখ করেন এবং বলেন, "আমি মনে করি, বিচারকরা মেনে নিয়েছেন যে আইএএস অফিসারদের বৈধ এবং শালীনতার সঙ্গেই নিজের মত প্রকাশের অধিকার আছে।''
বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ ২০০৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর অবসর গ্রহণের পর থেকে তিনি কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার এবং বিজেপি সরকার উভয়েরই বেশ কয়েকটি কমিটির নেতৃত্ব দিয়েছেন।
Read full story in English