তথ্যচিত্রে ব্যবহৃত উস্কানিমূলক সব পোস্টার সরানোর জন্য সোমবারই কানাডার আগা খানা মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল ভারতের হাইকমিশন। এর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পদক্ষেপ করল মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ। অনিচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের জন্য ক্ষমতা চেয়েছে তারা। একইসঙ্গে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তামিল পরিচালক লীনা মণিমেকালাইয়ের তৈরি তথ্যচিত্রে ব্যবহার হওয়া কালীর সহ পোস্টার।
ক্ষমাপ্রার্থনার চিঠিতে আগা খান মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের উল্লেখ, 'টরন্টো মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন জাতিগত ও সাংস্কৃতিক পটভূমির ছাত্রদের কাছ থেকে কাজ একত্রিত করেছে, প্রত্যেক শিক্ষার্থী 'আন্ডার দ্য টেন্ট' প্রকল্পের জন্য কানাডিয়ান বহুসংস্কৃতির অংশ হিসেবে তাদের স্বতন্ত্র অনুভূতির অন্বেষণ করছে। শিল্পকলার মাধ্যমে আন্তঃসাংস্কৃতিক বোঝাপড়া এবং কথোপকথনকে উৎসাহিত করাইমিউজিয়ামের মূল লক্ষ্য। এ জন্য চলতি বছর ২-রা জুলাই, আগা খান মিউজিয়ামে একটি উপস্থাপনা হোস্ট করা হয়েছিল। বিভিন্ন ধর্মীয় অভিব্যক্তি এবং বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা সেই মিশনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। উপস্থাপনাটি আর মিউজিয়ামে দেখানো হচ্ছে না। যাদুঘর গভীরভাবে অনুতপ্ত- কারণ, 'আন্ডার দ্য টেন্ট'-এর ১৮টি ছোট ভিডিওর একটি এবং এর সঙ্গে থাকা সোশাল মিডিয়া পোস্টগুলি অসাবধানতাবশত হিন্দু এবং অন্যান্য বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের সদস্যদের ভাবাবেগে আগাত করেছে।'
৪ঠা জুলাই, অটোয়ায় ভারতীয় হাইকমিশন একটি বিবৃতি জারি করেছে। এটি উল্লেখ করেছে যে তারা কানাডার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের কাছ থেকে আগা খান মিউজিয়াম, টরন্টোতে 'আন্ডার দ্য টিএনটি' প্রকল্পের অংশ হিসাবে প্রদর্শিত একটি তথ্যচিত্রের পোস্টারে হিন্দু দেবদেবীদের অসম্মানজনক চিত্রণের অভিযোগ পেয়েছে।
হাই কমিশন উল্লেখ করেছিল- 'টরন্টোতে আমাদের কনস্যুলেট জেনারেল ইভেন্টের আয়োজকদের কাছে উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছে৷ আমাদের আরও জানানো হয়েছে যে বেশ কয়েকটি হিন্দু গোষ্ঠী পদক্ষেপের জন্য কানাডা প্রশানের কাছে আবেদন জানিয়েছে। আমরা কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ এবং ইভেন্ট আয়োজকদের এই ধরনের সমস্ত উস্কানিমূলক উপাদান প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করছি।'
এদিকে ভারতে মঙ্গলবার দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশ পুলিশ তথ্যচিত্র নির্মাতা লীনা মণিমেকালাইয়ের বিরুদ্ধে এইআইআর দায়ের করেছে। তাঁর পরিচালিত তথ্যচিত্রের পোস্টারে দেখা যায় হিন্দু দেবী কালীর আদলে একজন মহিলা সিগারেট খাচ্ছেন এবং তার হাতে রয়েছে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের একটি প্রাইড পতাকা। যা "ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত" বলে অভিযোগ।
নেটিজেনদের অনেকে মণিমেকালাইকে গ্রেফতারের দাবি করেন। আবার একাংশ মাদুরাইয়ের বাসিন্দা এই তথ্যচিত্র নির্মাতার পক্ষ নেন। এই বিতর্কের মধ্যেই মণিমেকালাই কালী বিতর্কে মুখ খোলেন। তাঁর যুক্তি, “চলচ্চিত্রটি এমন ঘটনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে যেগুলি এক সন্ধ্যায় ঘটে, যখন কালী আবির্ভূত হয় এবং টরন্টোর রাস্তায় হাঁটতে থাকে। আপনি যদি ছবিটি দেখেন তবে হ্যাশট্যাগ রাখবেন না লীনা মণিমেকলাই গ্রেফতার করুন এবং হ্যাশট্যাগ রাখুন লাভ ইউ লীনা মানিমেকালাই টুইট করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা। আমার হারানোর কিছু নেই। নির্ভয় কণ্ঠের সঙ্গে আমি থাকতে চাই। এর মূল্য যদি আমার জীবন হয়, তবে আমি তাই দেব।”