Advertisment

'ওরা চিঁড়ে খাচ্ছিল কেন? রুটি কেন নয়?' প্রশ্ন কৈলাশের

"ঠিকাদার বলে যে এরা খুব সস্তার দিনমজুর। দুবেলা খাবার আর ৩০০ টাকা দিলেই সারাদিন কাজ করে দেয়, যেখানে এখানকার মজুররা ৬০০ টাকা নিয়েও স্রেফ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবক্ষেক তথা বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে এক সেমিনারে বলেছেন, তাঁর বাড়িতে সম্প্রতি কিছু নির্মাণের কাজ হয়, এবং সেই কাজ করেন যেসব শ্রমিক, তাঁদের মধ্যে ছিলেন কিছু বাংলাদেশি।

Advertisment

কীভাবে বুঝলেন তাঁরা বাংলাদেশি? তাঁদের "অদ্ভুত" খাদ্যাভ্যাস দেখে তাঁদের জাতিগত পরিচয় সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়েন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) সমর্থনে আয়োজিত ওই সেমিনারে বলেন বিজয়বর্গীয়।

তাঁর বাড়িতে সম্প্রতি একটি নতুন ঘরের সংযোজন করা হয়েছে, এবং সেই কাজ চলাকালীন তাঁর মনে হয়, শ্রমিকদের মধ্যে কয়েকজনের "খাওয়াদাওয়া" খুব "অদ্ভুত", কারণ তাঁরা "স্রেফ চিঁড়ে (হিন্দিতে 'পোহা') খাচ্ছিল"। ওই শ্রমিকদের তত্ত্বাবধায়ক এবং বাড়ির কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে কথা বলে বিজয়বর্গীয়র সন্দেহ হয় যে উল্লিখিত শ্রমিকরা বাংলাদেশ থেকে আগত, বলেন তিনি।

সেমিনারের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, যাতে বিজয়বর্গীয় বলছেন, "একটা সত্যি ঘটনা বলতে চাই। দেশে শরণার্থী এবং অনুপ্রবেশকারী মিলিয়ে প্রায় দু'কোটি মানুষ রয়েছেন, তার মধ্যে প্রায় এক কোটি তো বাংলাতেই আছেন... অনুপ্রবেশকারীরা যে কোথায় কোথায় আছে, আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না। এর একটা উদাহরণ দিতে চাই। আমার ছেলে কল্পেশের বিয়ে, ওর ঘর তৈরি হচ্ছিল, তো আমি রাত ন'টা নাগাদ বাড়ি ফিরি, আর আমাদের এখানে খাওয়ার সময় যেই থাকুন, তাঁকে খাওয়ানো হয়। আমি যখন ওদের কাছে যাই, ওরা একটা থালায় করে বেশ খানিকটা 'পোহা' (চিঁড়ে) খাচ্ছিল। আমি জানতে চাইলাম এই সময় চিঁড়ে খাচ্ছে কেন। জিজ্ঞেস করলাম, রুটি খাচ্ছে না কেন, তখন ওরা বলল ওরা রুটি খায় না, শুধু চিঁড়ে খায়। আমার সন্দেহ হলো, যে এরা কোন দেশের লোক যে রুটি খায় না?"

এরপর তিনি আরও বলেন, "আমি যখন জানতে চাইলাম ওরা কোথাকার লোক, ওদের সুপারভাইজার বলল ওরা নাকি বাংলার। আমি জিজ্ঞেস করি বাংলার কোন জেলা, যেহেতু আমি বাংলার সমস্ত প্রান্ত ঘুরেছি, তখন কিছু বলতে পারল না। আমার আশঙ্কা হওয়ায় ফের জানতে চাই, ওরা কোথাকার লোক, তখন ঠিকাদার বলল হয়ত বাইরের কোনও জায়গার। আমার এখানে ওদের কেন কাজে লাগানো হয়েছে জানতে চাইলে ঠিকাদার বলে যে এরা খুব সস্তার দিনমজুর। দুবেলা খাবার আর ৩০০ টাকা দিলেই সারাদিন কাজ করে দেয়, যেখানে এখানকার মজুররা ৬০০ টাকা নিয়েও স্রেফ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করে।"

পরে এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, "আমার সন্দেহ হয় যে ওই মজুররা বাংলাদেশের নাগরিক। এবং এই সন্দেহ হওয়ার দুদিনের মধ্যে তারা আমার বাড়িতে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আমি এখনও পুলিশে খবর দিই নি, আমি শুধু জনসাধারণকে সচেতন করতে কথাটা বললাম।"

সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজয়বর্গীয় আরও দাবি করেন যে গত দেড় বছর ধরে তাঁর ওপরে নজর রাখছে কোনো এক বাংলাদেশি জঙ্গি। "যখনই আমি বাইরে যাই, ছজন সশস্ত্র দেহরক্ষী থাকে আমার সঙ্গে। কী হচ্ছে কী এই দেশে? বাইরের লোক ঢুকে এভাবে এতটা আতঙ্ক ছড়াবে?" প্রশ্ন বিজয়বর্গীয়র।

"গুজব শুনে বিভ্রান্ত হবেন না। সিএএ দেশের স্বার্থেই প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনের দ্বারা প্রকৃত শরণার্থীরা আশ্রয় পাবেন, এবং দেশের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা বিপন্ন করছে যেসব অনুপ্রবেশকারী, তারা চিহ্নিত হবে," বলেন তিনি।

bjp
Advertisment