২০১৫ সালের ৩০ অগাস্ট চরম দক্ষিণপন্থী এক গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতেই খুন হয়েছিলেন কন্নড় পণ্ডিত এমএম কালবুর্গী। সম্প্রতি কর্ণাটক পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল এই তথ্য জানিয়েছে। ২০১৪ সালে দেওয়া কালবুর্গীর এক ভাষণের জন্যই খুন করা হয়েছিল তাঁকে। এমনটাই জানা গিয়েছে।
কর্ণাটকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন বিশ্বাস নিষিদ্ধ করার আইনের পক্ষে ২০১৪ সালের ৯ জুন এক ভাষণ দিয়েছিলেন। বিশেষ তদন্তকারী দল বলেছে , "ওই ভাষণে ডঃ ইউ আর অনন্তমূর্তির লেখা বই থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃত করেছিলেন কালবুর্গী"।
"এই ভাষণের ওপর ভিত্তি করেই অভিযুক্ত ব্যক্তি কালবুর্গিকে 'দুর্জন' হিসেবে চিহ্নিত করে", স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের সদস্যরা শনিবার চার্জশিট জমা দেওয়ার সময় জানিয়েছে।
আরও পড়ুন, কালবুর্গীর হত্যাকারীকে চিহ্নিত করলেন স্ত্রী
জানা গিয়েছে, আততায়ী হল বছর সাতাশের গনেশ মিসকিন। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ হত্যা মামলায় জড়িত দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন এই গণেশ মিসকিন, যাকে চিহ্নিত করে কর্নাটক পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। তদন্তে এই তথ্যও উঠে আসে যে এই অভিযুক্ত কর্ণাটকের হিন্দুত্ববাদী দল সনাতন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
নিহত বাবার কথা স্মরণ করেই পুত্র শ্রীবিজয় কালবুর্গী জুলাই মাসে জানিয়েছিলেন, “আমার মা আজ শনাক্তকরণ পরীক্ষায় অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন। যে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার নাম আমাদের কাছে প্রকাশ করা হয় নি।”
আরও পড়ুন, ভিন্ন মতকে আক্রমণ করাই স্বাধীনতার অর্থ হয়ে দাঁড়িয়েছে: বিচারপতি চন্দ্রচূড়
প্রসঙ্গত, এই বছরের মার্চ মাসে উমাদেবী সিবিআই তদন্তের আবেদন জানান। তার ভিত্তিতেই গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে ধৃত দুই ব্যক্তিকে কালবুর্গী হত্যা মামলায় নিজেদের হেফাজতে নেয় কর্ণাটক পুলিশের সিআইডি। এমনকি সেই আবেদনে উমাদেবী উল্লেখ করেন যে তাঁর স্বামী এবং গৌরী লঙ্কেশকে একই বন্দুক দিয়ে গুলি করে মারা হয়েছিল।
মে মাসে বিশেষ তদন্তকারী দল কালবুর্গী হত্যা মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারে যে গনেশ মিসকিন এবং প্রবীণ প্রকাশ চতুর (২৭) মিলে গুলি করে তাঁকে। হত্যার দিন কালবুর্গীর বাড়িতে বাইকে করে আসে দুই অভিযুক্ত। তারপর দরজা খোলেন উমাদেবী। এম এম কালবুর্গীর সঙ্গে দেখা করার আবেদন জানানোর পর কালবুর্গী এসে পৌঁছলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গুলি করা হয়, সেখানেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার উমাদেবী গনেশ মিসকিনকে সঠিকভাবেই কালবুর্গীর হত্যাকারী হিসেবে সফলভাবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন। যদিও প্রবীণ প্রকাশ চতুরকে ওই বাইকের আরোহী হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
Read the full story in English