দূরত্ব সাত সমুদ্র তের নদীর। সেখানেই ইতিহাস রচনা করে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে জয়লাভ করেছেন কমল হ্যারিস। ভারতীয় এই বংশোদ্ভূতের জয়ে আনন্দের জোয়ার বয়ে এনেছে এ দেশের গোপালন পরিবারেও। টিভি-তে কমলার জয়ের খবর ঘোষণা মাত্রই অনবরত বেজে চলেছে ৮০ বছরের বৃদ্ধ গোপালন বালাচন্দ্রনের মোবাইল। তিনিই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের মামা। আপ্লুত গোপালন বালাচন্দ্রন। বললেন, 'আমি আজ খুবই গর্বিত। শীঘ্রই কমলাকে ফোন করে অভিনন্দন জানাব। খবর শোনার পর থেকেই সবাই ফোন করছেন, কথা শেষই হচ্ছে না।'
বাধনহারা উচ্ছ্বাস। বালাচন্দ্রন জানালেন কমলার পরিবারের বাকি সদস্যরা শপথ অনুষ্ঠানে হাজির হতে জানুয়ারিতে মার্কিন মুলুকে পারি দেবেন। তাঁর কথায়, 'আমার মেয়ে সেখানেই রয়েছে। কমলাকে প্রচারে সহায়তা করেছে। কোনওভাবেই বাড়ির মেয়ের শপথ অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না।'
গোপালন বালাচন্দ্রন মার্কিন বাইস প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী কমলা হ্যারিসের মামা। বর্তমানে দিল্লির মালব্য নগরে থাকেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এই কর্মী। ভারতীয় সময় শনিবার রাত ১০টা নাগাদ হ্যারিসের মামাতো বোনই টুইট করে লেখেন, 'আবাক করা কাণ্ড, শেষ পর্যন্ত বাস্তবে তাই ঘটল, আমেরিকার পরবর্তী ভাইস প্রেসিডেন্ট, আমাদের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাডাম- তথা আমার দিদি কমলা হ্য়ারিস।'
গত চারদিন ধরেই ট্রাম্প-বিডেন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখল দুনিয়া। একই সঙ্গে দিল্লির এই পরিবারের অবশ্য নজর ছিল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী ফলাফলের দিকেও। গত চারদিন ধরে টিভির সামনে মুখ বুঝে পড়েছিলেন বালাচন্দ্রনের পরিবার। শুক্রবার চরম উত্তেজনার মাঝে গোপালন বালাচন্দ্রণ বলেছিন, 'আমি নিজে মার্কিন নির্বাচন ও সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে অনেক পড়শোনা করেছি। মনে হচ্ছে ডেমোক্র্যাটরাই জিতবেন।' তাঁর সেই আশা পূরণ হয়েছে।
তাঁর মাঝে ওই দিনই দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলতে বলতে দিদি (কমলা হ্যারিসের মা) শ্যামলা গোপালনের কথা উঠেছিল। যারপরনাই তখন চোখের কোণে চিলতে জল ৮০ বছরের বৃদ্ধর। বলেলেন, 'বেঁচে থাকলে আজ কমলার মা সবচেয়ে খুশি হতেন।' উল্লেখ্য ১৯ বছর বয়েসে আমেরিকায় যান শ্যামলা। ২০০৯ সালে মারণ ক্যানসারে মৃত্যু হয় তাঁর।
কমলার সাফল্যে তাঁর ছোটবেলার অনেক স্মৃতি উগড়চ্ছিলেন মামা বালাচন্দ্রন। বললেন, 'দিদির দ্বারাই অনুপ্রাণিত হয়েছে কমলা। নাগরিক আধিকারের দাবিতে সেদেশে শ্যামলা হ্যারিসের সমর্থন ছিল। নিজেও লড়াই করেছেন। সবার জন্য সমান অধিকার- ছোট থেকেই এই নীতিশিক্ষায় বড় হয়েছে কমলা। তাই আগামিতে আমেরিকায় সর্বজাতি-বর্ণের মানুষের অদিকার রক্ষায় ও বড় ভূমিকা নেবে এই বিশ্বাস রাখছি।'
২০১৯ সালে মামা-ভাগ্নির মধ্যে ওয়াশিংটনে শেষ দেখা হয়েছিল। দু'দেশের সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে কমলার সঙ্গে মাঝেমধ্যেই কথা হয় বলে দাবি করেছেন বালাচন্দ্রন। তাঁর কথায়, জানার আগ্রহ ও লক্ষ্যে পৌঁছানোর একগ্রতাই কমলাকে আদ শীর্ষে পৌঁছে দিল।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন