দিল্লির অঞ্জলি সিং হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা রুজু করেছে দিল্লি পুলিশ। এর আগে, এফআইআরে আইপিসি ৩০৪ নং ধারায় মামলা রুজু করা হলেও, ময়নাতদন্ত, সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষার পর দিল্লি পুলিশ অঞ্জলি সিং হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা রুজু করেছে। এবিষয়ে দিল্লি পুলিশ কমিশনার (আইন শৃঙ্খলা) সাগর প্রীত হুডা বলেন, ‘তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের ভিত্তিতে পুলিশ মামলাটিতে নতুন ধারা যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে’।
বর্ষবরণের রাতে দিল্লির রাস্তায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা নাড়িয়ে দেয় গোটা দেশকে। অঞ্জলির মৃত্যু একাধিক প্রশ্নের মুখে দাড় করিয়ে দেয় রাতের রাজধানীর নিরাপত্তা। তদন্তে দেখা গেছে, অঞ্জলিকে প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তা গাড়িটি টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই ৭ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
ঠিক একদিন আগে, দিল্লি পুলিশ রোহিণী আদালতকে জানায়, এই মামলার তদন্তে একাধিক বিষয় দিল্লি পুলিশের র্যাডারে ধরা পড়েছে। মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা যুক্ত করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে আইপিসির ৩০৪নং ধারায় মামলা রুজু করা হলেও, পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অঞ্জলি সিং হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা রুজু করেছে দিল্লি পুলিশ। এই বিষয়ে অঞ্জলির পরিবার জানিয়েছে "আমরা দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে একটি ফোন কল পেয়েছি, আমাদের জানানো হয়েছে এফআইআরে ৩০২ ধারা যুক্ত করা হয়েছে।"
দিল্লির একটি স্থানীয় আদালত মঙ্গলবার অঞ্জলি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আশুতোষ ভরদ্বাজকে জামিন দিয়েছে। অতিরিক্ত দায়রা জজ সুশীল বালা ডাগর অভিযুক্ত আশুতোষকে ৫০,০০০ টাকার ব্যক্তিগত বণ্ডে জামিন মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে এই মামলায় অঙ্কুশ নামে সপ্তম অভিযুক্তকে ৭ জানুয়ারি ২০হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করে দিল্লির একটি আদালত। অভিযুক্ত আশুতোষ ভরদ্বাজকে ১৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার আদালত জামিন দেয়। এদিকে দিল্লির কানঝাওয়ালা-কাণ্ডে এবার বড় পদক্ষেপ নিল দিল্লি পুলিশ। অঞ্জলি সিংকে গাড়িতে ধাক্কা দিয়ে সেই সঙ্গে দেহ প্রায় ১২ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত টেনে আনা হয়েছিল। যে রাস্তা দিয়ে আনা হয়েঠিল সেই রাস্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ১১ জন পুলিশকর্মীকে একসঙ্গে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম ও পিকেটের রুটে যেসব পুলিশ কর্মীরা দায়িত্বে ছিলে তাদেরই সাসপেন্ড করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী অঞ্জলির মস্তিষ্কের একাধিক অংশ আঘাতের কারণে পুরোপুরি শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। শরীর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল ফুসফুস। দুর্ঘটনার কারণে মাথা , মেরুদণ্ডে আর নিম্মাঙ্গে তীব্র আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর কারণ হিসেবে প্রবল আঘাত আর রক্তক্ষরণের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।