শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী মুম্বই মাফিয়া করিম লালার সঙ্গে দেখা করতেন। তাঁর এই মন্তব্যে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার জোটসঙ্গী কংগ্রেস অস্বস্তিতে পড়েছে।
পুনের অবিসংবাদী সাংবাদিকদের সম্মান দেওয়ার জন্য লোকমত গোষ্ঠী আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাউতকে ক্রাইম রিপোর্টার হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাওয়া হয়। রাউত বলেন, তখনকার দিনে মুম্বইয়ের রাজনীতি ও সমাজে আন্ডারওয়ার্লডের প্রভাব খুব বেশি ছিল।
"হাজি মাস্তান মন্ত্রালয়ে আসত, তাঁর সঙ্গে সম্মানিত অতিথির মত ব্যবহার করা হত। ইন্দিরা গান্ধী করিম লালার সঙ্গে দেখা করতেন। সে সব আন্ডারওয়ার্লড ডনদের দিন ছিল। এখন মুম্বই আর সেরকম নেই।"
রাউতের মন্তব্যের পরেই কংগ্রেসের সমালোচনা তাঁর দিকে ধেয়ে আসে। তাঁকে মন্তব্য প্রত্যাহার করতেও বলা হয়। শিবসেনা নেতা তৎক্ষণাৎ মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। বলেন, ইন্দিরা গান্ধীর ভাবমূর্তিকে আঘাত করা তাঁর লক্ষ্য ছিল না।
করিম লালা কে
করিম লালার নাম ছিল আব্দুল করিম শের খান। সে জন্মেছিন আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশে। ৬ থেকে ৮-এর দশক পর্যন্ত মদ, জুয়া ও তোলার কারবারি হিসেবে আব্দুল করিম ছিল কুখ্যাত। মুম্বইয়ের পাঠান গ্যাংয়ের সর্বেসর্বা ছিল সে।
রাউত বলেন, "আমার মনে হয় না ইন্দিরা গান্ধী তাঁর সঙ্গে আন্ডারওয়ার্লড ডন হিসেবে দেখা করেছিলেন। লালা পাঠান সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্মানিত ছিল। ফলে দেশ থেকে পাঠানরা এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করত। দেখা করতেন নেতা-নেত্রীরাও।" রাউতের দাবি নেহরুও করিম লালার সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
তৎকালীন বম্বেতে করিম কাজ শুরু করে একজন সামান্য কর্মী হিসেবে। সেটা ছিল ১৯২০-র দশক। পরে তিনি আদি পাঠানদের একটি দলে সুদ ও ঋণের টাকা আদায় করার দলে যোগ দেয়। ২০০২ সালে করিম লালার মৃত্যু মুম্বইয়ে আন্ডারওয়ার্লড মাফিয়া ডনের শাসন শেষের সূচক।
মুম্বইয়ের অন্য দুই মাফিয়া ডন ছিল হাজি মাস্তান ও বরদারাজন মুদালিয়র। তিন ডনই মুম্বইয়ের তিন অংশে রাজ করার ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ ছিল, যাতে নিজেদের মধ্যে সংঘাত এড়ানো যায়।