রাশিয়ায় মরণফাঁদ! ভুল বুঝিয়ে ভারতীয়দের পাঠানো হচ্ছে যুদ্ধে। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ দেওয়ানো হয়েছিল একাধিক ভারতীয়কে। আর সেই যুদ্ধে তেলেঙ্গানার যুবক মহম্মদ আসফানের মৃত্যু হয়েছে বলে বুধবার মস্কোর ভারতীয় দূতাবাস নিশ্চিত করেছে।
এই খবর শোনার পর থেকে কর্ণাটক পুলিশের হেড কনস্টেবল সৈয়দ নওয়াজ আলি তাঁর ছেলেকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁর ছেলে সৈয়দ ইলিয়াস হুসাইনি (২২) এবং মহম্মদ সমীর আহমেদ এবং সুকাইন মহম্মদ মস্কোতে চাকরির প্রস্তাব পেয়ে রাশিয়ায় পা দিতেই তাদের জোর করে পাঠানো হয় যুদ্ধক্ষেত্রে। হুসাইনি সহ বেশ কয়েকজন ভারতীয়কে প্রতারিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ভারত সরকারের কাছে দেশে ফিরে আসার আবেদনও জানিয়েছেন।
কর্ণাটকের কালাবুর্গি জেলার মাদবুল থানার হেড কনস্টেবল আলী বলেছেন, “আমাদের কী করা উচিত এবং কার কাছে যেতে হবে? আমি আমার ছেলেকে জীবিত দেখতে চাই"। বছর ৪৮-এর আলী বলেন, হুসাইনি কয়েক বছর ধরে দুবাইতে কাজ করেছেন এবং মস্কোতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক এজেন্ট তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আলী আরও যোগ করেছেন যে তার ছেলেকে সিকিউরিটি গার্ডের কাজের জন্য মাসে ৭০ হাজার টাকা বেতনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এই বড় অঙ্কের বেতনের প্রলোভন পেয়েই সে মস্কো চলে যায়"।
গত ডিসেম্বরে ছেলে শেষ বারের মত বাড়িতে আসেন এবং বেশ কিছুদিন পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন আলী। কিন্তু গত পাঁচ দিন হুসাইনির সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই। পরিবার জানে না তিনি আদৌ বেঁচে আছেন কিনা! তিনি ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন, 'ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার'।
আলী, ইতিমধ্যেই জেলাশাসকের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন এবং স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। আলী জানিয়েছেন, "শেষ ফোন কলে, ছেলে পরিবারকে বলেছিলেন যে তাকে এখন তাকে সীমান্তে পোস্ট করা হচ্ছে এবং যে কোনো সময় যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের পাঠানো হতে পারে"।
হায়দরাবাদের বাসিন্দা মহম্মদ আফসান গত নভেম্বরে মস্কো গিয়েছিলেন চাকরির লোভে পড়েই। আর সেটাই কাল হল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন তিনি। মৃত্যুর বিষয়ে ভারতীয় দূতাবাস এক্স পোস্টে বলেছে, "আমরা ভারতীয় নাগরিক শ্রী মহম্মদ আসফানের মর্মান্তিক মৃত্যুর বিষয়ে জানতে পেরেছি। আমরা তার পরিবার এবং রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তার মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাব,"।