চারদিন আগে তার মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল পচাগলা মৃতদেহ, তার জেরে আজ খালি করে দেওয়া হলো গোটা ১৫ একরের একটি জলাশয়। কারণ? যে মৃতদেহটি উদ্ধার হয়েছে, তা নাকি এইচআইভি পজিটিভ এক মহিলার। ঘটনাটি উত্তর কর্ণাটকের ধারওয়াড় জেলায় নভলগুন্ড তালুকে মোরাব গ্রামের। এই জলাশয়টি ১৫০ জনের ওই গ্রামের একমাত্র পানীয় জলের উৎস।
এলাকা থেকে আসা খবর অনুযায়ী, গ্রামবাসীদের দাবী, যে মহিলার মৃতদেহ জলের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে, তিনি সম্প্রতি একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরির রিপোর্ট থেকে জানতে পারেন যে তিনি এইচআইভি পজিটিভ। কাজেই সেই জল খেতে অস্বীকার করেন গ্রামের মানুষ এই ভয়ে, যে জল থেকে তাঁদেরও এইচআইভি/এইডস হতে পারে।
নভলগুন্ড তালুকের তহশিলদার নবীন হুল্লুর জানান, "এক সপ্তাহ আগে ওই মহিলা জলে ডুবে মারা যান। তিনি নাকি পরীক্ষা করিয়ে জেনেছিলেন তিনি এইচআইভি পজিটিভ। গ্রামের সবাই দাবী করেছেন তিনি এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন। চারদিন আগে আমরা তাঁর দেহ উদ্ধার করি। গ্রামবাসীদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত, যতক্ষণ না সমস্ত জল পাম্প করে বের করে দিয়ে মলপ্রভা ড্যাম থেকে নতুন জল ভরা হচ্ছে, তাঁরা এই লেকের জল খাবেন না। স্থানীয় পঞ্চায়েতও এতে সায় দিয়েছে।"
মোরাবের বাসিন্দারা তাঁদের সিদ্ধান্তে এতটাই অনড়, যে তিন কিলোমিটার দূরে যাচ্ছেন পানীয় জল সংগ্রহ করতে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় আধিকারিকরা শেষমেশ জলাশয় খালি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। হুল্লুর বলেন, "লেকের জল আগামী দিন দুয়েকের মধ্যে খালি হয়ে যাবে। পাঁচদিনের মধ্যে মলপ্রভা ড্যামের জল ছাড়া হবে যাতে লেক আবার ভরে যায়।" জলাশয় থেকে বের করে নেওয়া জল আশপাশের কৃষিজমিতে বিতরণ করা হচ্ছে।
ধারওয়াড় জেলার এইডস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের এক আধিকারিক, যিনি বুধবার গ্রাম পরিদর্শনে যান, বলেন যে গ্রামবাসীদের অনীহার প্রধান কারণ ছিল চারদিন আগে ভেসে ওঠা পচতে থাকা মৃতদেহের গন্ধ। "মৃতা মহিলা যে এইচআইভি পজিটিভ, এই দাবি ভাবনাচিন্তা করে পরে যোগ করা হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস," বলেন তিনি।
ওই আধিকারিক আরও বলেন, "আমরা গ্রামের মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করি যে এইচআইভি সংক্রমিত হয় শুধুমাত্র চারটি উপায়ে - অসুরক্ষিত যৌন মিলন, রক্ত দেওয়ার সময় অসাবধানতা, সংক্রমিত সিরিঞ্জ, অথবা মায়ের থেকে শিশু - এবং এইচআইভি ভাইরাস রক্ত ছাড়া বাঁচতে পারে না, কিন্তু তাঁদের বোঝাতে পারি নি।"
আরেক স্বাস্থ্য আধিকারিকের মতে, মৃতা মহিলা গত অক্টোবর মাসে এইচআইভি পজিটিভ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন, কিন্তু কোনও সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে সমর্থন মেলে নি।