মাস দুই আগে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করলে ভারত-পাক সম্পর্ক আবারও তলানিতে পৌঁছয়। এরপরও বৃহস্পতিবার দিল্লীর অনুরোধে সাড়া দিয়ে কর্তারপুর সাহিব করিডোর শিখ তীর্থযাত্রীদের জন্য খুলে দিল পাকিস্তান। অর্থাৎ গুরু নানকের বিশ্রামস্থলে যেতে পারবেন এদেশের শিখ ধর্মালম্বী মানুুুুষ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার একটি বৈঠকে গুরুদাসপুর জেলার কর্তারপুর করিডোর থেকে বাবা নানকের ডেরার মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত নির্মান ও বিকাশের অনুমোদন দেওয়া হয়। যাতে ভারতীয় শিখ সম্প্রদায়ের মানুষরা কর্তারপুর সাহিব গুরুদ্বারে যেতে পারেন। এই গুরুদ্বার পাকিস্তানে পাঞ্জাব প্রদেশের নরওয়াল জেলায় রাভি নদীর পারে অবস্থিত। ভারত-পাক সীমান্ত থেকে তিন কিলোমিটার ভেতরে। এখানে গুরু নানক দেব ১৮ বছর কাটিয়েছিলেন।
দিল্লির অনুরোধের কিছুক্ষণের মধ্যেই পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেন, পাকিস্তান ভারতকে এই বার্তা দিতে চায় যে, গুরু নানকের ৫৫০ তম জন্মজয়ন্তীতে কর্তারপুর করিডোর খোলা রাখা হবে এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ২৮ নভেম্বর গ্রাউন্ড-ব্রেকিং উৎসবে উপস্থিত থাকবেন।পরে চণ্ডীগড়ে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ''ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং ২৬ নভেম্বর কর্তারপুর করিডোরের ভারতীয় সীমানার ভিত স্থাপন করবেন। দুদিন আগেই করিডোরে গ্রাউন্ড-ব্রেকিং অনুষ্ঠানের ঘোষনা করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন: গুজরাতের গণতন্ত্র মডেলই বেশি আকর্ষণীয় লেগেছে কাশ্মীরের রাজ্যপালের: চিদম্বরম
বিদেশ মন্ত্রকের মুখ্যপাত্র রবিশ কুমার বলেন, ''২০১৯-এ গুরু নানকের ৫৫০ তম জন্মজয়ন্তীর কথা মাথায় রেখে মন্ত্রী পরিষদ পাকিস্তান সরকারকে শিখদের ধর্মাবেগকে সম্মান জানিয়ে সারা বছর তাঁরা যাতে সহজে কর্তারপুর সাহিব গুরুদ্বারে যাতায়াত করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছে। আর ভারত সরকার সিন্ধান্ত নিয়েছে কর্তারপুর করিডর থেকে বাবা নানকের ডেরার মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিরাপত্তার সমস্ত আধুনিক সুবিধা রাখবে।"
কিছুটা অপ্রত্যাশিতভাবেই তিনমাস আগে কর্তারপুর করিডোরের বিষয়টি সামনে আসে, যখন ইমরান খানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং বর্তমান রাজনীতিক নভজ্যোৎ সিং সিধু পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান কামার জাভেদ বাজওয়াকে আলিঙ্গন করে বিতর্কের সামনে পড়েন। বাজওয়াকেও বলতে শোনা যায়, পাকিস্তান কর্তারপুর করিডোর খোলায় সম্মতি দেবে। এদিকে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সহ বিজেপি সরকারের আরও অনেকে পাকিস্তানে সিধুর আচরণ নিয়ে তাঁকে ভৎসর্না করেন।
দিল্লি সূত্রে খবর, কর্তারপুর সাহিব করিডোর সারা বছর ২৪ ঘন্টা খুলে রাখতে চায় ভারত, এবং কতজন তীর্থযাত্রী সীমান্ত পেরিয়ে যাচ্ছেন তা নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ না রাখার পক্ষে এদেশের সরকার। সীমান্ত পেরিয়ে যাওয়া ভারতীয়দের সুরক্ষার জন্য দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ নিশ্চিত করুক পাকিস্তান, তাও চায় ভারত।
Read the full story in English