জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার ও রাজ্যকে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা করা হয়েছিল তা পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস এ বোবডে ও আব্দুল নাজিরের বেঞ্চ জানিয়েছে এ ব্যাপারে নোটিস দিয়ে জানিয়েছে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে এ মামলার শুনানি হবে। আদালত একই সঙ্গে এ বিষয়ে কেন্দ্র ও জম্মু কাশ্মীর প্রশাসনের বক্তব্যও জানতে চেয়েছে।
নোটিস ইস্যু করা হলে সীমান্তের ওপারে তার প্রতিক্রিয়া হবে বলে দাবি করা হলেও তা মানতে চায়নি বেঞ্চ।
আরও পড়ুন, ‘মুখ খুললে খারাপ হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে’, অমিত শাহকে চিঠি লিখলেন মেহবুবা মুফতির মেয়ে
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, "নোটিস ইস্যু করার উদ্দেশ্য হল যাতে সংশ্লিষ্ট পক্ষ শুনানিতে উপস্থিত থাকে। আমরা সবাই এখানে রয়েছি।" তিনি আরও বলেন, "এর ফলে অন্য দেশে এর প্রভাব পড়বে।" রামচন্দ্রন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন "আদালত যদি কোনও নোটিস ইস্যু করে তাহলে তা কারও পক্ষে বিড়ম্বনার কারণ হতে পারে কীভাবে!"
মেহতা এর উত্তরে বলেন, "নোটিস কাউকে বিড়ম্বনায় ফেলবে না, কিন্তু অন্য দেশ এর সুবিধা নেবে।" অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেণুগোপালও আদালতের কাছে আবেদন করেন নোটিস জারি না করতে, কারণ এটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয়।
দু পক্ষের কৌঁশুলিরা বাদানুবাদ শুরু করলে বেঞ্চ জানায়, "আমরা জানি কী করতে হবে। আমরা নির্দেশ দিয়েছি এবং সে নির্দেশ বদলাচ্ছি না।"
গত ৫ অগাস্ট ৩৭০ ধারার আওতায় জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাঁরা মামলা দায়ের করেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতারা, প্রাক্তন আইএএস অফিসার- বর্তামান রাজনৈতিক নেতা শাহ ফয়জল, সমাজকর্মী শেহলা রশিদ, আইনজীবী এমএল শর্মা এবং এক কাশ্মীরি আইনজীবী।
আরও পড়ুন, কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়াতে যতদূর যেতে হয় যাব: ইমরান খান
কাশ্মীরে যোগাযোগে অচলাবস্থা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট
জম্মু কাশ্মীরে যোগাযোগব্যবস্থা যে সম্পূর্ণ বন্ধ সে নিয়ে কাশ্মীর টাইমসের একজিকিউটিভ এডিটর অনুরাধা ভাসিন যে আবেদন সুপ্রিম কোর্টে করেছেন, তা নিয়েও নোটিস জারি করেছে বেঞ্চ।
সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে জম্মু কাশ্মীর যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ইয়েচুরি তাঁর সতীর্থ মহম্মদ ইউসুফ তারিগামির স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে যেতে চাইলেও তাঁকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, "তারিগামি যেহেতু জেড প্লাস নিরাপত্তা পান, ফলে তিনি হারিয়ে যেতে পারেন না।" এর উত্তরে প্রধান বিচারপতি বলেন, "জেড বা জেড প্লাস যাই হোক না কেন, একজন নাগরিক যদি দেশের কোথাও যেতে চান, তাঁকে অবশ্যই যেতে দিতে হবে।" তবে একই সঙ্গে আদালত জানিয়ে দেয় তারিগামির স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া ছাড়া অন্য কোনও উদ্দেশ্যে যেন এই ভ্রমণ ব্যবহৃত না হয়।
আরও পড়ুন, জম্মু কাশ্মীর: আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে গিয়ে কি কিছু সুবিধে হবে পাকিস্তানের?
জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র আদালতে জানিয়েছিলেন তিনি অনন্তনাগে তাঁর বাবা-মাকে দেখতে যেতে পারছেন না। আদালত রাজ্যকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
গত ৫ অগাস্ট জম্মু কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ঠিক আগের দিন, অর্থাৎ ৪ অগাস্ট থেকে সরকার সমস্ত মোবাইল লাইন, ইন্টারনেট যোগাযোগ ও কেবল টিভি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
Read the Full Story in English