জম্মু-কাশ্মীর ৩৭০ ধারা বিলোপের বর্ষপূর্তি। উপত্যকায় নাশকতার আশঙ্কা করছে নিরাপত্তা বাহিনী। তাই বছর ঘুরতে তাই ফের কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হল 'ভূস্বর্গ'কে। জারি হল কার্ফু। কাশ্মীরে সোমবার রাত থেকে জারি হয়েছে কার্ফু, যা চলবে বুধবার পর্যন্ত।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসার, প্রশাসন ও গোয়েন্দা কর্তাদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতেই কাশ্মীরে ৩ তারিখ বিকেল থেকে ৫ অগাস্ট পর্যন্ত কার্ফুর লাগুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই বৈঠকে ছিলেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি দিলবাগ সিংৃ-ও।
পুলিশ রিপোর্টে উল্লেখ, 'বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও পাকিস্তানের মদতপুষ্ট কিছু দল এই ৫ অগস্টকে কালো দিন হিসেবে দেখে। তাই এই দু’দিন উপত্যকায় দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা চলতে পারে। নাশকতার সম্ভাবনাও আছে। তাই সবদিক দিয়েই নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে। শ্রীনগর প্রশাসন সিআরপিসি আইনে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।'
তবে, করোনা মহামারী আবহে জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলো চালু থাকবে। প্রশাসনের দেওয়া নির্দিষ্ট পাস নিয়ে জরুরি কাজে মানুষ বের হতে পারবেন।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি কে বিজয় কুমার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনে উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় আশঙ্কা রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে কিছু ছাড় দেওয়া হলেও ফের ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।'
জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা টুইটে লিখেছেন, '২০১৯ সালের তুলনায় ২৪ ঘন্টা আগে থেকেই কার্ফু জারির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এবারও একই কাজ করা হবে উপত্যকায়।'
২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ ধারা ৩৭০ ধারা রদ করা হয়। সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, জম্মু-কাশ্মীরকে দু'টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হবে। প্রস্তুতি অবশ্য শুরু হয়েছিল তার আগেই। ওইদিন যে কিছু একটা হবে তা কাশ্মীরে বিভিন্ন নিরাপত্তা রক্ষী সংস্থার কর্তাদের ১১ দিন আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার কথা তাদের জানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কাশ্মীরে বাড়তি আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ইন্টারনেট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা।
গণ্ডগোল এড়াতে জম্মু-কাশ্মীরের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মীদের গ্রেফতার বা গৃহবন্দি করা হয়েছিল। উপত্যকাজুড়ে জারি হয় কড়া নিয়ন্ত্রণ। বিগত কয়েক মাসে ফারুক-ওমর আবদুল্লাকে মুক্ত করা হলেও জননিরাপত্তা আইনে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে মেহেবুবা মুফতিকে। মোবাইল, ইন্টারনেট, ল্যান্ডলাইন সহ যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
Read in English
ন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন