কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তান। তাই ভারত বিরোধিতায় এবার উস্কানিমূল মন্তব্যকেই হাতিয়ার করতে চাইছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর হুমকি, সংখ্যালঘুদের প্রতি ভারতের দমনমূলক পদক্ষেপের দিকে নজর রয়েছে বিশ্বের তামাম মুসলিমের। তাদের প্রতিহিংসাপরায়ণ হতে বাধ্য করা হচ্ছে। নয়াদিল্লির তরফে অবশ্য এপ্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য মেলেনি। সূত্রের খবর, ভারত মনে করে দেশে অশান্তি সৃষ্টির জন্যই ইমরানের এহেন মন্তব্য।
শুক্রবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদে সভা করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। কাশ্মীরিদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতেই এই সভা হয়। সেখানেই কাপ্তান খান 'প্রতিক্রিয়া'র তত্ত্ব তুলে ধরেন। যার ছত্রে ছত্রে উস্কানির ইঙ্গিত ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আম্বানি পরিবারকে কালো টাকা আইনে আয়করের নোটিস
পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, 'কার্ফু উঠে গেলেই মোদীর পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হবে। ভারতের মুসলিমদের সঙ্গেই তাতে সামিল হবে বিশ্বের সব মুসলিমই। ভারতে মুসলিমদের প্রান্তিক করার চেষ্টা চলছে। যা তাদের মারমুখী করে তুলছে। প্রতিহিংসাপরায়ণ হতে বাধ্য করছে। ইসলাম শান্তির কথা বলে, কিন্তু এই ধরণের অবিচারে বিশ্ব চুপ থাকলে তার ভয়ঙ্কর পরিণতি অপেক্ষা করছে।' এরপরই নাম না করে আমেরিকাকে উদ্দেশ্য করে ইমরান জানান, 'এই ধরণের প্রান্তিক করার বিষয়টি সারা বিশ্বের নজরে রয়েছে। ভারতকে কিছু কেউ বলছে না বাণিজ্য চুক্তির কারণে। তবে, মানুষ (মুসলিমরা) সব দেখছে।'
পাক প্রধানমন্ত্রীর এই ধরণের মন্তব্যের পর ভারতের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্র মাফত জানতে পারেছে ভারত নয়াদিল্লি মনে করছে আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে সুবিধা করতে না পেরেই মুসলিমদের একত্রিত করার মরিয়া চেষ্ঠা করছে ইসলামাবাদ।
কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করেছে ভারত। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে যার বিরোধিতায় সরব পাকিস্তান। এই সিদ্ধান্ত মোদী সরকার 'ভীরু'তার প্রকাশ বলে জানিয়েছেন ইমরান খান। আক্রমণ শানিয়েছেন আরএসএসকে। তাঁর যুক্তি, 'আরএসএস মুসলমানদের প্রতি গভীর ঘৃণা পোষণ করে এবং একটি জাতিকে নির্মূলের উপমহাদেশে অতীতের মুসলিম শাসনের প্রতিশোধ নিতে উদ্যোগী।'
ভারতকে সতর্ক করে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'কাশ্মীরের মানুষ নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে চরমপন্থার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটবে। তখন লোকেরা লাঞ্ছনার শিকার হওয়ার চেয়ে মরতে পছন্দ করবে। কাশ্মীরিদের উপর অত্যাচার চালিয়ে মোদী ভারতের ২০ কোটি মুসলমানকে এই বার্তা দিচ্ছেন যে তারা কেবল হিন্দুস্তানে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসাবে থাকতে পারবে। কোনও অধিকার ছাড়াই তাদের সঙ্গে পশুর মতো ব্যবহার করা হবে এবং লাঞ্ছনার স্বীকার হতে হবে।'
আরও পড়ুন: সুখবর! নতুন বছরে বর্ধিত হারে বেতন রাজ্য সরকারি কর্মীদের
এরপরই নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে ভারত-পাক উত্তেজনা কমাতে আলোচনায় না বসার অভিযোগ করে ইমরান। তুলে ধরেন অভিনন্দন বর্তমান প্রসঙ্গ। শেষে বলেন, ভারত ইঁট মারলে তার জবাব পাথর দিয়েই দেবে পাকিস্তান।
চলতি মাসের শেষেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভা। সেখানে বক্তব্য পেশ করবেন মোদী ও ইমরান। সেই সভাতে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে ভারতকে ফের বিপাকে ফেলার চেষ্টা করবে পাকিস্তান। মুজফ্ফরাবাদে স্পষ্ট করেছেন ইমরান খান। তবে কাশ্মীর ইস্য নিয়ে এর আগে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে অস্বস্তির মধ্যে পড়েছিল ইসলামাবাদ।
Read the full story in English