Advertisment

মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণায় কী ভাবে বাগড়া দিচ্ছে চিন?

২৬-১১র মুম্বই হামলার পর থেকে, সেই ২০০৮-০৯ সাল থেকে ভারত মাসুদ আজহারের নাম জঙ্গি তালিকায় ঢোকানোর চেষ্টা করছে, এবং তখন থেকেই তাতে চিন বাগড়া দিয়ে চলেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
China Masood Azhar

মাসুদ আজহার

পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে থাকা জৈশ-এ-মহম্মদ। এর পরেই ফের সবার নজর গিয়ে পড়েছে জৈশ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের উপর। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই মাসুদ আজহারকে  আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করার জন্য বহুরকম চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে ভারত।

Advertisment

আরও পড়ুন, করাতকলের কর্মী থেকে জইশ জঙ্গি, কাশ্মীর হামলার মূল চক্রী আদিল

মাসুদ আজহারকে ভারত জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছিল। সেটা সন ১৯৯৪, বাজপেয়ীর আমল। ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান, আই সি ৮১৪ ছিনতাই করে, সমস্ত যাত্রীদের পণবন্দি করে রাখা হয়েছিল, মাসুদকে ছাড়ানোর জন্য। সরকার সে দাবি মেনে নিয়ে মাসুদ, মুস্তাক আহমেদ জাকর এবং ওমর শেখকে ছেড়ে দেয়।



রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জঙ্গি তালিকায় বারবার মাসুদের নাম ঢোকাতে চেয়েছে দিল্লি। বার বার তা আটকেছে চিন।

এ ব্যাপারে সাম্প্রতিকতম চেষ্টা ঘটেছিল বছর তিনেক আগে। ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি পাঠানকোটে ভারতীয় বিমান বাহিনীর উপর হামলার ঘটনায় জৈশের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলে ভারত। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ কমিটিতে আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয় ভারতের তরফ থেকে। এর মধ্যে টেকনিক্যাল কারণ দেখিয়ে ঢুকে পড়ে চিন, পাকিস্তানের পক্ষ নেয় তারা। এ ঘটনা ঘটে দু বার, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে এবং ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে। সে বছরের ডিসেম্বর মাসে চিন এ নিয়ে  ভেটো প্রয়োগ করে।

China shields azhar again পুলওয়ামা হামলায় নিহত হয়েছেন ৪০ জন জওয়ান (ফোটো শোয়েব মাসুদি)

২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স আজহারকে জঙ্গি ঘোষণার জন্য ফের একটি প্রস্তাব দেয়। আবার তাতে বাদ সাধে সেই চিন।



২৬-১১র মুম্বই হামলার পর থেকে, সেই ২০০৮-০৯ সাল থেকে ভারত মাসুদ আজহারের নাম জঙ্গি তালিকায় ঢোকানোর চেষ্টা করছে, এবং তখন থেকেই তাতে চিন বাগড়া দিয়ে চলেছে।

ভারতের বিমান ছিনতাইয়ের সময়ে যিনি মধ্যস্থতা করেছিলেন, সেই প্রাক্তন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিবেক কাটজু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "আজকের ঘটনার পর চিনের মাসুদকে নিয়ে কৌশল সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সে দেশের দুমুখো কৌশল ফাঁস করে দিল।    ব্যাপারটা চিনা কুকুরের পাকিস্তানি লেজ নাড়ানোর মতন।"

আরও পড়ুন, কাশ্মীরে সিআরপিএফ: কী তাদের ভূমিকা

জৈশ এ মহম্মদকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করার পর থেকেই য়ুক্তিসংগত ভাবে ভারত বারবার আজহারের নাম সন্ত্রাসবাদী তালিকায় ঢোকানোর ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময়ে, সে প্রধানমন্ত্রী স্তরেই হোক কিংবা বিদেশমন্ত্রী, বা সচিব পর্যায়ের আলোচনা- বারবার এ প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে।

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে উহান সম্মেলনে ভারত ও চিন সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোর ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছয়। তারপর ১০ মাস কেটে গেলেও মাসুদ আজহার নিয়ে চিনের অবস্থান বদলানোর ব্যাপারে কোনও অগ্রগতি হয়নি।

ওই সম্মেলনের পর বিদেশ সচিব বিজয় গোখেলকে আজহার নিয়ে চিনের অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, "সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সাধারণভাবে আলোচনা হয়েছে, তবে খুঁটিনাটি নিয়ে এ স্তরে আলোচনা হয়নি। ভারত ও চিন দুপক্ষই নিজেদের স্বার্থে সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে অসহনীয় নীতি নেওয়ার ব্যাপারে সহমত হয়েছে এবং এ ব্যাপারে তারা পরস্পরের সহযোগিতা করে চলবে।"

jammu and kashmir Explained Terrorist
Advertisment