টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হেরে যায় ভারত। রবিবার ম্যাচ শেষ হতেই পঞ্জাবের সাঙ্গুরের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের মারধরের অভিযোগ ওঠে। একই ঘটনার খবর মেলে পঞ্জাবের খারার থেকেও। যদিও পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশি মধ্যস্থতায় সমস্যা মেটে। পুলিশ জানিয়েছে, দু'পক্ষই নিজেদের মধ্যে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে নিয়েছে।
ঠিক কী হয়েছিল রবিবার? গতকাল টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয় ভারত-পাকিস্তান। হাইভোল্টেজ সেই ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে বড়সড় হার হয় ভারতের। ম্যাচ শেষ হতেই উত্তেজনা ছড়ায় পঞ্জাবের সাঙ্গরুর জেলার ভাই গুরদাস ইন্সটিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজে। অভিযোগ, কলেজের হোস্টেলে থাকা কাশ্মীরি পডুয়াদের মারধর করে তাঁদেরই কয়েকজন সহপাঠী। কাশ্মীরি পড়ুয়াদের উপর সেই 'হামলা'র একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। উল্টোদিকে, একই ঘটনার খবর মেলে পঞ্জাবের খারারের রায়ত ভারত বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও। সেখানেও ভাকত-পাক ম্যাচ শেষ হতেই কাশ্মীরি পড়ুয়াদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
জম্মু কাশ্মীর ছাত্র সংগঠনের জাতীয় মুখপাত্র নাসির খুহামি বলেন, “পঞ্জাবের সাঙ্গরুর এবং খারার মোহালিতে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের মারধর করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও কিছু পঞ্জাবি পড়ুয়া ওঁদের উদ্ধার করেছেন। কাশ্মীরি পড়ুয়াদের ঘরে ঢুকে মারধর করেছে বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানার কয়েকজন পড়ুয়া।” সাঙ্গরুরের গুরদাস ইন্সটিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিও-তে এক ছাত্রের অভিযোগ, হোস্টেলের নিরাপত্তারক্ষী উত্তর প্রদেশের একদল পড়ুয়াকে কাশ্মীরি ছাত্রদের ঘরে ঢুকে হামলা চালাতে সাহায্য করেছেন।
রবিবার সন্ধেয় সাঙ্গরুরের ওই কলেজের ঘটনার খবর যায় পুলিশের কাছে। শেষমেশ পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। কাশ্মীরি ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ আধিকারিকরা। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “এই কলেজে প্রায় ৯০ জন কাশ্মীরি পড়ুয়া রয়েছেন। উত্তর প্রদেশ ও বিহারের ৩০ পড়ুয়া রয়েছেন কলেজটিতে। কলেজের হোস্টেলের দু'দিকে কাশ্মীরি পড়ুয়ারা থাকেন। ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন পাকিস্তানের রান বাড়তে থাকায় উল্লাসে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা। ওঁরা আজাদি স্লোগানও দিয়েছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে উত্তর প্রদেশ এবং বিহারের পড়ুয়ারা কাশ্মীরি ছাত্রদের ঘরে ঢোকে। দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে, কাশ্মীরি ছাত্ররাও উত্তর প্রদেশ এবং বিহারের ছাত্রদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে শেষমেশ পরিস্থিতি শান্ত হয়।” সাঙ্গুরের এসএসপি স্বপন শর্মা জানিয়েছেন, দু'পক্ষই একে অপরের কাছে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশি মধ্যস্থতায় বিষয়টির মিটমাট হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন- করোনা-স্বস্তি, দৈনিক সংক্রমণ নিম্নমুখী, আরও কমল অ্যাক্টিভ কেস
উল্টোদিকে, রবিবার পঞ্জাবের খারার মোহালির রায়ত ভারত বিশ্ববিদ্যালয়েও একই ঘটনা ঘটে। সেখানেও চার ছাত্রকে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ শেষের পর মারধরের অভিযোগ ওঠে। জম্মু কাশ্মীর ছাত্র সংগঠনের জাতীয় মুখপাত্র নাসির খুহামির অভিযোগ, রায়ত ভারত বিশ্ববিদ্যালয়ের চার পড়ুয়াকে হরিয়ানার কয়েকজন ছাত্র মারধর করেছে। পঞ্জাবে পাঠরত সব কাশ্মীরি পড়ুয়াদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে আবেদন জানিয়েছেন খুহামি। পুলিশ প্রশাসনকে সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথোপযুক্ত পদক্ষেপের দাবি করেছেন তিনি।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন