উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ মন্দিরের একজন প্রবীণ পুরোহিত শ্রীবদ্রীনাথ-কেদারনাথ মন্দির কমিটির (বিকেটিসি) শীর্ষকর্তাদের বিরুদ্ধে মন্দিরের গর্ভগৃহের ভিতরে সোনার আবরণে ব্যবস্থা করে দেওয়ার নামে ১২৫ কোটি টাকা কেলেঙ্কারির অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারী পুরোহিত সন্তোষ ত্রিবেদী চারধাম মহাপঞ্চায়েতের সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্বপ্রাপ্ত। তিনি অভিযোগ করেছেন যে গর্ভগৃহের ভিতরে স্থাপিত সোনার প্লেটগুলো সোনা নয়, আসলে পিতলের তৈরি। গত বছর, কেদারনাথের গর্ভগৃহের দেয়ালজুড়ে থাকা রুপোর প্লেটগুলি মুম্বইয়ের একজন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ীর দান করা সোনার প্লেট দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছিল।
রাজ্য (উত্তরাখণ্ড) সরকার মন্দিরে ২৩০ কেজি সোনা দান করার ব্যাপারে ব্যবসায়ীর প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল। ওই ব্যবসায়ী বলেছিলেন যে কেদারনাথের গর্ভগৃহের দেওয়াল সোনায় মোড়ানো দেখা তাঁর 'দীর্ঘদিনের ইচ্ছা'। কিছু স্থানীয় পুরোহিত অবশ্য এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁরা দাবি করেছিলেন যে সোনা হল সম্পদ এবং পার্থিব আনন্দের প্রতীক। যা এই মন্দিরের প্রাচীন মূল্যবোধের বিরুদ্ধে। কারণ, এই মন্দির শারীরিক জগত থেকে বিচ্ছিন্নতার প্রতীক।
যাইহোক, শেষ পর্যন্ত মন্দিরের গর্ভগৃহের দেওয়াল সোনা দিয়ে মোড়ানো হয়। এই প্রসঙ্গে মন্দিরের পুরোহিত ত্রিবেদী ভিডিও বার্তায় অভিযোগ করেছেন, 'কয়েক মাস আগে, মন্দিরের গর্ভগৃহে সোনারস্তর দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছিল। কিন্তু, আজ যখন আমি ভিতরে গিয়েছিলাম, তখন দেখলাম সোনা পিতলে পরিণত হয়েছে। কেন সোনা পরীক্ষা করা হয়নি? এর জন্য দায়ী কে? সোনার নামে কেদারনাথে ১২৫ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে। এটি ভক্তদের অনুভূতির বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা।'
ভিডিওটি শেয়ার করে সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব বলেছেন যে এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। অখিলেশ টুইট করেছেন, 'কেদারনাথ মন্দিরে সোনারপাতের পরিবর্তে পিতলের পাত ব্যবহারের অভিযোগ অপরাধের পাশাপাশি বিশ্বাসের সঙ্গে খেলার মত একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। এই ষড়যন্ত্রের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করে মিথ্যার আবরণ দূর করা উচিত।'
আরও পড়ুন- যোগীরাজ্যে তাপপ্রবাহে মৃত্যুমিছিল, বেয়ারা মন্তব্য করে অপসারিত স্বাস্থ্য আধিকারিক
শ্রীবদ্রীনাথ-কেদারনাথ মন্দির কমিটি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কমিটি বলেছে, 'দাতা কেদারনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহ সোনা দিয়ে ঢেকে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। দাতার অনুভূতির প্রতি সম্মান জানিয়ে, মন্দির কমিটির বোর্ড সভায়, প্রস্তাবটি পরীক্ষা করা হয়। আর, তারপরই সোনার প্রলেপ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বদ্রীনাথ-কেদারনাথ মন্দির কমিটি আইন, ১৯৩৯ অনুযায়ী এই অনুদান গ্রহণ করা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সোনার প্রলেপ দেওয়া হয়েছে মন্দিরে।'