করোনার কারণে অনাথ শিশুদের পড়াশোনার ভার নিল দিল্লি সরকার। মঙ্গলবার এ কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। শুধু তাই নয়, সংসারের একমাত্র উপার্জনকারীর কোভিডে মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি।
কেজরিওয়াল বলেন, ‘পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যু হলে প্রতিমাসে সেই পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা পেনশন দেওয়া হবে। যে সব পড়ুয়ার বাবা-মা দু’জনই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, তারাও আড়াই হাজার টাকা করে পেনশন পাবে তাদের ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত। তাদের পড়াশোনার খরচও চালাবে দিল্লি সরকার।‘
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ৭২ লক্ষ গরিব পরিবারকে এ মাসে ১০ কেজি রেশন বিনামূল্যে দেওয়া হবে। যার মধ্যে ৫ কেজি দেবে দিল্লি সরকার। এবং বাকি পাঁচ কেজি দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের মাধ্যমে। যে সব গরিব পরিবারের রেশন কার্ড নেই, তাঁরাও এই সুযোগ পাবেন। এমনটাই জানিয়েছেন কেজরিওয়াল।
এদিকে, সোমবার ফের রেকর্ড তৈরি দেশে। আবারও মৃত্যুতেই। দেশের নিরিখে নয় বিশ্বের নিরিখে রেকর্ড পার করছে অতিমারি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা গিয়েছে একদিনে ভারতে করোনা কোপে প্রাণ গিয়েছে ৪ হাজার ৩৯৯ জনের।
কোভিড আক্রান্ত পৃথিবীর মৃত্যু রেকর্ডে এই সংখ্যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ১১ মে অর্থাৎ ৭ দিন আগে মৃত্যু ছিল ৪ হাজার ২০৫। যা সেই সময় অনুযায়ী সর্বোচ্চ ছিল। কিন্তু প্রশ্ন জাগছে অন্য ক্ষেত্রে। গত কয়েকদিনে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশ কিছুটা কমেছে। সাধারণ হিসেব মতো মৃত্যু সংখ্যাও কমার কথা। কিন্তু দু’সপ্তাহের ব্যবধানে পরিসংখ্যান বলছে উল্টো। আক্রান্ত কমলেও বাড়ছে মৃত্যু। এ যেন ব্যস্তানুপাতিক গতি।
ভয়ের কথা একটাই যে আগামী দিনে এই সংখ্যা হয়তো আরও কিছুটা বাড়বে। কারণ দেশের বেশ কিছু রাজ্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মৃত্যুহার বৃদ্ধির খবর আসছে। মহারাষ্ট্রে সোমবার মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৯ জনের। শনিবার থেকে সোমবারের মধ্যে মারা গিয়েছেন ২৮৯ জন। এক সপ্তাহ আগে এই সংখ্যা ছিল ২২৭। এর আগের সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছিল ৮৪৮ জনের। অথচ যে হারে বাড়ছে মৃত্যু তেমনটা হওয়ার কথা নয়। এটা জীবনের নয়, খাতা কলমের হিসেব!
অন্যান্য রাজ্যেও পরিস্থিতি এক। তবে হিসেবেও ভুল থাকছে। মার্চের মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে এপ্রিলে এমনটা দেখা গিয়েছে কর্ণাটকে। মহারাষ্ট্রেও তেমন গড়মিল রয়েছে। এই মুহূর্তে, পাঁচটি রাজ্য – মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ু – প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে ৩০০ জনের মৃত্যু হচ্ছে। উত্তরাখণ্ডের মতো অপেক্ষাকৃত ছোট একটি রাজ্যে ২২৩ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে নথিভুক্ত সময়ের আগে।