বন্যার জের কাটতে না কাটতেই কেরালা এবার শুখার মুখোমুখি। এর ফলে বন্যাবিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে ভূগর্ভস্থ জলস্তর নিচে নেমে গেছে। এই অস্বাভাবিক ঘটনায় উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
তিরুবনন্তপুরমের আবহাওয়া অধিকর্তা এস সুদেবন জানিয়েছেন, এ মাসের শুরু থেকে গোটা রাজ্যে প্রায় কোথাওই বৃষ্টি হয়নি। সাধারণভাবে অগাস্টের ৩০ থেকে সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ পর্যন্ত গড়ে ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে রাজ্যে। সেখানে এ বছর এই সময়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ৭.৯ মিলিমিটার। যদিও বর্ষার তিন মাসে এ বছর কেরালায় ৩৩ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে, তবে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টিপাতের ঘাটতির পরিমাণ ৮৬ শতাংশ।
সুদেবন জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের বর্ধিত পূর্বাভাস অনুসারে, সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখের পর বৃষ্টি হবে। সাম্প্রতিক শুখা সময় বেশ অস্বাভাবিক। বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে বিশেষ করে রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রার পরিমাণ বেড়েছে।’’
তবে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুখা আবহাওয়া শুধু কেরালায় নয় প্রায় গোটা দেশেই দেখা দিয়েছে। একমাত্র ব্যতিক্রম উত্তর পূর্বাঞ্চল ও উত্তর ভারতের কিছু অংশ। আবহাওয়া দফতরের আরেক কর্তা ডি শিবানন্দ পাই জানিয়েছেন, প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে যে এল নিনো জাতীয় পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, এই শুষ্ক আবহাওয়া তার জেরেও হতে পারে।
শিবানন্দ পাই বলেছেন, ‘‘এল নিনো এখনও সম্পূর্ণ শক্তি সঞ্চয় করেনি, তবে আমরা প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে কিছুটা উষ্ণতা দেখতে পাচ্ছি। এর ফলে যেহেতু আর্দ্রতা কমে যাচ্ছে, তার পরোক্ষ প্রভাব পড়ছে ভারতের মৌসুমী বৃষ্টিপাতে।’’
কেরালার ভূগর্ভস্থ জল বিভাগের অধিকর্তা জাস্টিন মোহন জানিয়েছেন, সমস্ত বন্যাবিধ্বস্ত এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলস্ত নিচে নেমে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু কুয়োর তথ্য সংগ্রহ করে বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে শুরু করেছি।’’
বন্যার পরে পানীয় জলের উৎস পরিষ্কার করার সময়ে বিভিন্ন কুয়ো থেকে জল বের করে দেওয়ার জন্যও জলস্তর নেমে গেছে বলে সন্দেহ। এই কুয়োগুলিতে বর্ষার সময়ে পানীয় জলের স্তর যতটা উঁচুতে ওঠার কথা ছিল, তা ওঠেনি বলে মনে করা হচ্ছে।