স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে রবিবার সন্ধে ৭.৩০ নাগাদ। তানুরের কাছে থুভাল থেরাম অট্টুপুরম সৈকতে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেসরকারি উদ্যোগে ওই হাউসবোটটি চালানো হচ্ছিল। তবে সন্ধের পরে জলে ওই হাউসবোটটির নামার অনুমতি ছিল না। রবিবার সন্ধ্যায় পর্যটকদের বিপুল ভিড় হয়েছিল। তারই জেরে পরিষেবা তখনও চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। হাউসবোটটি ডুবে যাওয়ার সময় সেটিতে ৩৫-৪০ জন যাত্রী ছিলেন।
কেরল সরকার সোমবার মালাপ্পুরম জেলার উপকূলীয় শহর তানুরে রবিবারের ট্যুরিস্ট বোট দুর্ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ভয়ানক এই দুর্ঘটনায় সাত শিশু সহ ২২ জন নিহত হয়। সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করা হয়েছে।
মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনার ঘটনায় রাজ্য সরকার সোমবার রাজ্যে এক দিনের শোক ঘোষণা করেছে। মৃতদের প্রতি সম্মান জানাতে বাতিল করা হয়েছে সব সরকারী অনুষ্ঠান। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সোমবার তানুরে পৌঁছেছেন এবং মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। পাশাপাশি আহতদের দেখতে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
ঘটনার তদন্তে কেরালা পুলিশ একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করবে বলেও জানিয়েছে রাজ্যপ্রশাসন। হাউসবোটটিতে ছিলেন রফিক নামে এক ব্যক্তি। কোনওমতে সাঁতরে তিনি ওপরে উঠেছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ”ঘটনাটি সৈকত থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে ঘটে। পুরপুঝা নদীর মোহনার কাছে নৌকাটি ডুবে যায়। হাউসবোটটিতে যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেট ছিল না। ঘটনার সময়ে আশেপাশে কোনও নৌকা না থাকায় উদ্ধারে দেরি হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, নৌকাটি ডুবে গেলে উপরের ডেকের যাত্রীরা পালাতে সক্ষম হলেও নিচের ডেকের দরজা বন্ধ থাকায় ভিতরেই আটকে পড়েন যাত্রীরা। প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রা এবং জেলেরা উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। পরে পুলিশ, স্বাস্থ্য, এবং ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগের সহায়তায় জেলা প্রশাসনের অন্য বিভাগ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজে হাত লাগায়।
রাতে আলোর অভাবে এবং এলাকার সরু রাস্তার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। তবে উদ্ধারের পর পর্যটকদের দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রাতে, ত্রিশুর থেকে এনডিআরএফের একটি দল উদ্ধার অভিযানের জন্য মালাপ্পুরমে যায়। আইইউএমএল বিধায়ক কে পি এ মাজিদ রাতেই পৌঁছোন ঘটনাস্থলে। তিনি জানান, উপকূলে প্রধানত মাছ ধরার জাহাজ রয়েছে। সম্প্রতি এখানে ট্যুরিস্ট বোট সার্ভিস চালু হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই কর্তৃপক্ষ এখানে চলাচলের অনুমতি দিয়েছে।