প্রথম রাজ্য হিসাবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করল কেরালার পিনারাই বিজয়ন সরকার। সিএএ-কে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হোক, সর্বোচ্চ আদালতে এই আর্জিই জানিয়েছে কেরালার বাম সরকার। গত ডিসেম্বরে সর্বসম্মতিক্রমে সিএএ বাতিলের প্রস্তাব পাস হয় কেরালা বিধানসভায়।
আবেদনে কেরালা সরকার দাবি করেছে সিএএ প্রয়োগের ফলে ভারতীয় সংবিধানের ১৪ ও ২৫ নম্বর ধারায় উল্লেখিত নাগরিকদের মৌলিক অধিকার খর্ব হবে। সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় নাগরিকের সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে। আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ছাড়া কোনও নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা যাবে বলে উল্লেখ ররেছে ২১ নম্বর ধারায়। এছাড়া, ২৫ নম্বর ধারায় বর্ণিত বিবেক, কাজের অধিকার ও ধর্মীয় প্রচারের স্বাধীনতায় দেশের সব নাগরিক সমান।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় সিপিএমের পাশে বিরোধীরা, কেরলে পাস সিএএ বিরোধী প্রস্তাব
ইতিমধ্যেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় রুজু ৬০টি মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে।
নয়া নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে গত ডিসেম্বরেই সর্বসম্মতিক্রমে কেরালা বিধানসভায় প্রস্তাব পাস হয়। এলডিএফ সরকারের তরফে বিধানসভায় এই প্রস্তাব আনেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। প্রস্তাবকে সমর্থন করে বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ বিধায়করা। নয়া নাগরিকত্ব আইনকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘সংবিধানের ধর্ম নিরপেক্ষতার’পরিপন্থী বলে দাবি করা হয়। এর আগে নজিরবিহীনভাবে কেরালার শাসক ও বিরোধী শিবির একসঙ্গে পথে নেমে সিএএ-এর প্রতিবাদ করেছিল।
১০ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে চালু হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। সিএএ-এর প্রতিবাদে সরব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই প্রথম ঘোষণা করেছিলেন এরাজ্যে সিএএ লাগু করা হবে না। এমনকী বাংলায় এনপিআরয়ের কাজও স্থগিত করে দেয় নবান্ন। এরপর একই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে কেরালার পিনারাই বিজয়ন সরকার।
আরও পড়ুন: কেরালার সিএএ বিরোধী প্রস্তাবকে ‘বেআইনি’ বলে দাবি কেন্দ্র-বিজেপির
ডিসেম্বরেই সংসদের উভয় কক্ষে পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। পরে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সাক্ষরের ফলে তা আইনে পরিণত হয়। এই আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নীপিড়নর শিকার হয়ে এদেশে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তবে, নাগরিকত্বের আবেদনকারী শরণার্থীরা কেন এদেশে এসেছিলেন তার কারণ অবশ্য জানাতে হবে না বলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।
এর আগে কেরালা বিধানসভায় পাস হওয়া সিএএ বিরোধী প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে বিজেপি। এই প্রস্তাব সংবিধান বিরোধী বলে দাবি করে কেন্দ্রীয় শাসক দল। সংসদে পাস হওয়া কোনও আইনের বিরোধিতা কোনও রাজ্য বিধানসভা করতে পারেন না বলে জানায় গেরুয়া শিবির।
Read the full story in English