India death in Israel: সোমবার উত্তর ইজরায়েলের একটি খামারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন কেরলের নিবিন ম্যাক্সওয়েল (৩১)। এই খবর পাওয়ার পর, আচমকা যেন বাজ এসে পড়েছে গোটা বাড়িতে। তারপর থেকেই লাগাতার কান্নাকাটি চলছে গোটা পরিবারে। রীতিমতো কাঁদোকাঁদো গলায় নিবিনের বাবা অ্যান্টনি ম্যাক্সওয়েল বলেন, 'ছেলে কয়েক সপ্তাহ আগেও কাছাকাছি কোথাও আরেকটি বিমান হামলার কথা জানিয়েছিল। তখনই ওঁকে পালিয়ে যেতে বলেছিলাম। ও শুনল না।'
কোল্লাম মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কাইকুলাঙ্গারায় বাড়ি নিবিনের পরিবারের। অ্যান্টনি ম্যাক্সওয়েল বলেন, 'দুই সপ্তাহ আগে, নিবিন আমাদের জানিয়েছিল, ওদের খামারের কাছেই একটা বিমান হামলা হয়েছে। আমি তখন ওকে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু অন্য কোনও ব্যবস্থা করে উঠতে না পারায় ওরা ওই খামারেই কাজ করে যাচ্ছিল। আমরা ওর সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই যোগাযোগ রাখতাম।' পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত নিবিনের দেহ তেল আভিভে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে আনা হবে ভারতে।
জঙ্গি সংগঠন হেজবোল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এই ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। হামলায় আহত হয়েছেন আরও দুই ভারতীয় নাগরিক। তাঁরা হলেন জোসেফ এবং পল মেলভিন। তাঁরাও কেরলেরই বাসিন্দা। তিনজনই মোসাভ নামে এক কৃষিদ্রব্য উৎপাদন সংস্থায় কাজ করতেন। ট্যাংক ধ্বংসের জন্য ছোড়া হেজবোল্লার রকেট সেখানেই আছড়ে পড়ে। ইজরায়েলের তরফে দাবি করা হয়েছে, আহত দু'জন আপাতত বিপন্মুক্ত। ইজরায়েলের তরফে অভিযোগ করা হলেও, হেজবোল্লাহ অবশ্য এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
অ্যান্টনি বলেন, 'সোমবার বিকেলের দিকে ঘটনাটি ঘটেছে। নিবিন বাড়ির বড় ছেলে। ও বেশ কিছুদিন ধরেই ইজরায়েলে কাজ করছিল। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ও প্রথমে আহত হয়। পরে, মারা যায়। এমনটাই আমাদের জানানো হয়েছে।'
নিবিনের শিল্প প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট ছিল। সেই সূত্রেই বিদেশে কাজের অফার আসে। প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাশাহিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেই চাকরি ছেড়েই ডিসেম্বরে ইজরায়েলের সংস্থায় যোগ দেন। কারণ, ইজরায়েল ভারতীয়দের জন্য কৃষিক্ষেত্রে চাকরির ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারপরই নিবিন ইজরায়েলে চলে যায়। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে গর্ভবতী। এছাড়াও নিবিনের একটি পাঁচ বছরের শিশুও রয়েছে।
নিবিনের ছোটভাই এখন সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে কাজ করে। সেকথা জানিয়ে নিবিনের বাবা বলেন, 'আমার বড়ছেলে তো ওর শালাকেও চাকরি দিয়েছে। ও ইজরায়েলে চলে গেল। তার একসপ্তাহ পরে ওর ভাই গেল সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। বিদেশে যাওয়ার আগে আমার বড় ছেলে বেঙ্গালুরুর এক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করত। বিদেশে চাকরির ভালো অফার পাওয়ার পরই ওই চাকরি ছেড়ে দেয়।'