১৭ বছর আগে একটি মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়েছিল সকলকে। স্ত্রীর খুনের সুবিচারের দাবিতে দির্ঘ ১৭ বছর হাইকোর্টে গিয়ে ধর্ণা দিয়েছিলেন। শেষমেশ স্ত্রীর মৃত্যু তদন্ত স্পেশ্যাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছিলেন স্বামী। এত বছর পর পুলিশের জালে জনার্ধনন নায়ার। তিনি এত বছর ধরে পুলিশকে ফাঁকি দিয়েছিলেন এবং হাইকোর্টের কাছে গিয়ে এবং হত্যা মামলার তদন্তের দাবি করে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করেছিলেন।
তদন্তকারী আধিকারিক এবং ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিজি সুনীল রাজ বলেছেন, ‘জনার্ধনন তার স্ত্রীর "চরিত্র" নিয়ে তাকে সন্দেহ করতেন। সেই থেকেই এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত বলেই জানিয়েছন স্থানীয়রা’। কীভাবে ধরা পড়ল জনার্ধনন? পুলিশ জানিয়েছে, একাধিক ফরেনসিক পরীক্ষার পর, খুন হওয়া মহিলার হাতে মুঠোয় পাওয়া চুলগুলি তার স্বামীর বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
২৬ মে, ২০০৬ এক নারকীয় হত্যা নাড়িয়ে দেয় দেশকে। ডাক বিভাগের সিনিয়র অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসাবে কর্মরত ছিলেন জনার্ধনন। তিনি অভিযোগ করেন, বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন স্ত্রী নিখোঁজ। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। বাড়ির থেকে কিছুটা দূরে পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় স্ত্রী’র মৃতদেহ। দেহে ছিল একাধিক ক্ষত। জনার্ধনন পুলিশের কাছে জানায়, বাড়িতে থাকা স্ত্রী’র বেশ কিছু দামি গয়নাও খোয়া গিয়েছে। তিনি পুলিশের সামনে ডাকাতির তত্ত্ব খাড়া করতে চেয়েছিলেন। বারে বারে বিভ্রান্ত করেছেন পুলিশকে।
প্রাথমিক তদন্তে আশেপাশের এক মহিলা পুলিশকে বলেছিলেন যে তিনি খুনের দিন রামাদেবীর বাড়ির কাছে ২৬ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখেছিলেন। তিনি বাড়ির পাশেই একটি নির্মাণকাজে যুক্ত ছিলেন। জনার্ধনন, স্ত্রী’র খুনে বারবার তুলেছেন পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। দারস্থ হয়েছেন হাইকোর্টেও। গত বছরের জুলাইয়ে তদন্তের দায়িত্ব হাতে নেন ইন্সপেক্টর সুনীল রাজে। তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই জনার্ধননের কিছু কথাবার্তা আমার অসংলগ্ন লাগে। এরপর তাঁকে যে সন্দেহ করা হচ্ছে সেটা আড়ালে রেখেই তদন্ত চালিয়ে গিয়েছি। গ্রেফতারের পর জনার্ধনন জানিয়েছেন, তিনি এক হলিউড সিনেমা থেকেই এই ধারণা পেয়েছিলেন। কেরালার পাথানামথিট্টা জেলার পুল্লাদ গ্রামের এই ঘটনায় রীতিমত হতচকিত সকলেই।