Zaika Virus: ৩১ জানুয়ারি, ২০২০। দেশে প্রথম করোনা রোগীর সন্ধান মেলে কেরলে। আর ৮ জুলাই ২০২১, প্রায় ৪ বছর পর ফের প্রথম জাইকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলল সেই কেরলেই। এর আগে ২০১৭ সালে গুজরাতের বাপুজি নগরের তিনটি গবেষণাগারে নমুনা পরীক্ষায় জাইকা সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছিল। জানা গিয়েছে, এবার কেরলের বছর ২৪-এর সন্তানসম্ভবা তরুণীর দেহে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। তবে কড়া নজরদারিতেই ৭ জুলাই সেই প্রসূতি সন্তান প্রসব করেছেন। সুস্থই আছেন মা এবং নবজাতক। এমনটাই সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর। কেরল স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ১৩ জন সন্দেহভাজন জাইকা আক্রান্তের নমুনা পুনের ইনস্টিটিউট অফ ভাইরলজিতে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকেই তিরুঅনন্তপুরমের ওই তরুণীর দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে আরও খবর, ২৮ জুন জ্বর, মাথাব্যথা এবং শরীরে লালচে দাগ নিয়ে তিরুঅনন্তপুরমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই তরুণী। তখনই চিকিৎসকদের সন্দেহ হয় সেই তরুণী সম্ভবত জাইকা পজিটিভ। তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় পুনের গবেষণাগারে। এদিকে সংক্রমিত অবস্থায় বুধবার সন্তান প্রসব করেন তিনি।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই প্রসূতির বিদেশ ভ্রমণের কোনও ইতিহাস নেই। কেরল-তামিলনাড়ু সীমান্তের এক গ্রামে তাঁদের বাড়ি। সপ্তাহখানেক আগে তাঁর মায়েরও একই উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, তিরুঅনন্তপুরমের পারশালার সেই তরুণীর দেহে জাইকার অস্তিত্ব মিলতেই সেই গ্রাম পরিদর্শন করেছেন রাজ্য ভেক্টর কন্ট্রোল ইউনিটের আধিকারিকরা। সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন তাঁরা। সেই গ্রাম থেকে অ্যাডিস মশার নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে গবেষণাগারে। আশপাশের জেলাগুলোকে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
কী এই জাইকা?
জানা গিয়েছে, ভাইরাল সংক্রমণ ঘটায় এই জাইকা ভাইরাস। ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার বাহক অ্যাডিস ইজিপ্টাই এই ভাইরাসের বাহক। যৌন সঙ্গমের মাধ্যমেও মানব দেহে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় প্রথম এক বানরের দেহে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলে। তার ৫ বছর পরে মানব দেহে সংক্রমণ ঘটায় জাইকা ভাইরাস। কিন্তু ২০১৫ সালে প্রশান্ত মহাসাগরের ইয়েপ দ্বীপে প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ায়। আর ২০১৫ সালে ব্রাজিলে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ে জাইকা ভাইরাস। তখনই গবেষণায় জানা যায়, এই ভাইরাসে আক্রান্তদের সন্তান ছোট মাথা এবং অপরিণত মস্তিষ্ক নিয়েই জন্মায়।
তবে এই ভাইরাসে মৃত্যুর খবর সেভাবে নেই। একমাত্র প্রসূতি মহিলারা আক্রান্ত হলে, সেক্ষেত্রে মা এবং সন্তানের বিপদ বাড়তে পারে। তবে ব্রাজিলে এই মহামারীর জেরে গিলিয়ান-ব্যারে উপসর্গ দেখা গিয়েছে। এই উপসর্গে সংক্রমিতদের মধ্যে স্নায়ুর সমস্যা এবং অথর্ব হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন