নুহ জেলায় হিংসার কয়েক দিন পরে হরিয়ানার কৃষক সংগঠন এবং খাপ পঞ্চায়েতগুলোর নেতারা বুধবার ঘোষণা করেছেন যে তাঁরা কাউকে মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের স্পর্শ করতে দেবেন না। এই নেতারা হরিয়ানায় সাম্প্রদায়িক হিংসা মোকাবিলায় তাঁদের সংকল্পের কথা ঘোষণা করতে হিসারের বাস গ্রামে জড় হয়েছিলেন। কৃষকদের এই পঞ্চায়েতে হিন্দু, মুসলিম এবং শিখ সম্প্রদায়ের প্রায় ২,০০০ কৃষক অংশগ্রহণ করেছিলেন। সাম্প্রতিক হিংসার পরে হরিয়ানায় এইমাত্রায় এমন ধরনের সভা প্রথম হল। মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদেরকে হুমকি এবং তাঁদের গ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রবেশের বিরুদ্ধে কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তথাকথিত প্রস্তাব গ্রহণের পটভূমিতে বুধবারের এই সভার যথেষ্ট তাৎপর্যও রয়েছে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতি হুমকির কথা উল্লেখ করে কৃষক নেতা সুরেশ কোঠ বলেছেন, 'ইয়ে খাড়ে হ্যায়, ঠোক কে দিখা দো। সারি খাপেন জিম্মেওয়ার হ্যায়। (মুসলিমরা এখানে আছেন। কেউ তাঁদের স্পর্শ করে দেখিয়ে দাও। সমস্ত খাপ দায়িত্ব নিয়েছে (তাদের সুরক্ষার জন্য)।' কোঠ হিসার জেলার একজন খাপ নেতা। কৃষকদের বিক্ষোভের সময় তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে বহু কৃষক আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। কোঠ জানিয়েছেন যে, কয়েকটি গ্রামে মুসলমানদের প্রবেশের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারির খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বুধবার খাপ পঞ্চায়েতের এই সভায় কৃষকরা প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন যে তাঁরা নুহ-তে শান্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি, কোনও ধরণের বর্ণ বা সাম্প্রদায়িক হিংসায় যোগ দেবেন না। এর পাশাপাশি খাপ পঞ্চায়েত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও আপলোড করে মানুষকে উসকে দেওয়ার জন্য দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন- তথ্য ফাঁসের ভয়! মণিপুরের একমাত্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকেই অনাস্থায় বলতে দিল না বিজেপি
কোঠ জানিয়েছেন, এর আগে তাঁরা চাষ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য ৯ আগস্ট বাস গ্রামে একটি সভার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে, নুহ হিংসা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাকে আগে মোকাবিলা করা দরকার। একথা মাথায় রেখেই তাঁরা হিংসার বিরুদ্ধে সভা করেছেন। বুধবারের অনুষ্ঠানের স্থান অর্থাৎ বাস গ্রাম সেই জেলাগুলো দ্বারা বেষ্টিত, যে জেলাগুলো ২০২০-২১ সালে তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করা আন্দোলনকারী কৃষকদের জেলা। কৃষকদের সেই আন্দোলন বৃথা যায়নি। মোদী সরকার বাধ্য হয়েছে, বিতর্কিত কৃষি আইনগুলো বাতিল করতে।